২২ এপ্রিলের জবাব ২২ মিনিটে দিয়েছে ভারত, ২২ মে-তে বললেন মোদী
প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, "এত গরমেও এসেছেন, আপনাদের ধন্যবাদ। এই উদ্যোগে দেশের ১৮ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত রাজ্যের মানুষ উপকৃত হবেন। বিকশিত ভারতের জন্য বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে। সড়কপথ থেকে বিমানবন্দর, রেল ও রেলস্টেশনের উন্নতিতে বিগত ১১ বছর ধরে কাজ করা হচ্ছে।"
২২ এপ্রিলের জবাব ২২ মিনিটে দিয়েছে ভারত, ২২ মে-তে বললেন মোদী
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
ভোল বদলে গেল দেশের ১০৩টি রেল স্টেশনের। অমৃত ভারত প্রকল্পের অধীনে দেশের ১৮টি রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের মোট ৮৬টি জেলায় ১০৩টি রেল স্টেশন নবনির্মাণ ও সংস্কার করা হয়েছে। এ দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভার্চুয়াল মাধ্যমে এই স্টেশনগুলির উদ্বোধন করেন।
রাজস্থানের বিকানের থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদী মোট ১০৩টি অমৃত ভারত স্টেশনের উদ্বোধন করেন। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের কল্যাণী ঘোষপাড়া, পানাগড় ও জয়চণ্ডী পাহাড় স্টেশনও রয়েছে। এর জন্য মোট ১১০০ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। এ দিন জনগণের উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন-
পাকিস্তানের সঙ্গে কথা হলে, শুধু পাক অধিকৃত কাশ্মীর নিয়ে হবে। যদি এখনও জঙ্গি রফতানি জারি রাখে, তাহলে পাই পাই মূল্য চোকাতে হবে। জল পাবে না। ভারতের সংকল্প এটা। কেউ তা থেকে সরাতে পারবে না। ভারতের প্রতিটি কোণ মজবুত করতে হবে।
প্রতিটা সন্ত্রাসবাদী হামলার মূল্য চোকাতে হবে পাকিস্তানকে। পাকিস্তানের সেনা, তাদের অর্থনীতিকে এই মূল্য চোকাতে হবে। পাকিস্তান এই এয়ারবেসকেও নিশানা করেছিল, কিন্তু কোনও ক্ষতি করতে পারেনি। এখান থেকে কিছু দূরেই পাকিস্তানের এয়ারবেস আছে, জানি না কবে খুলবে। আইসিইউ-তে আছে।
পাকিস্তান কখনও ভারতের সঙ্গে সোজাভাবে লড়াই করে জিততে পারে না। সেই জন্য সন্ত্রাসবাদকে ভারতের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের হাতিয়ার করেছে। স্বাধীনতার পর থেকে এটাই চলছে। পাকিস্তান সন্ত্রাস হামলা চালাত, ভারতে ভয় তৈরি করত। কিন্তু পাকিস্তান ভুলে গিয়েছিল, এখন মোদী বুক ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মোদীর মাথা ঠান্ডা, কিন্তু রক্ত গরম। মোদীর শিরায় রক্ত নয়, গরম সিঁদুর বইছে।
সন্ত্রাসবাদ লালনকারী দেশকে আলাদাভাবে দেখা হবে না। পাকিস্তানের এই খেলা আর চলবে না। গোটা বিশ্বে পাকিস্তানের মুখোশ খুলতে আমাদের প্রতিনিধি দল পৌঁছচ্ছে। পাকিস্তানের আসল চেহারা গোটা বিশ্বকে দেখানো হবে।
পরমাণু বোমার হুমকিতে ভয় পায় না ভারত।
সন্ত্রাসবাদ মেটাতে এটাই নীতি, এটাই রীতি। এটাই নতুন ভারত। অপারেশন সিঁদুর সন্ত্রাসবাদ দমন করতে তিনটি সূত্র তৈরি করে দিয়েছে। ভারতে হামলা করলে, তার কড়া জবাব দেওয়া হবে। সময়, শর্ত আমাদের সেনা ঠিক করবে।
যারা ভাবত ভারত চুপ থাকবে, আজ তারা ঘরে লুকিয়ে রয়েছে। যারা নিজেদের অস্ত্র নিয়ে অহংকার করত, আজ তারা ধ্বংসাবশেষের নীচে চাপা পড়ে। এটা শোধ-প্রতিশোধের খেলা নয়। এটা ন্যায়ের নতুন রূপ। এটাই অপারেশন সিঁদুর। এটা শুধু আক্রোশ নয়, এটা সমর্থ ভারতের রুদ্র রূপ। সোজা বুকে আঘাত করেছি আমরা।
এটা যোগ যে ৫ বছর আগে বালাকোটে এয়ারস্ট্রাইকের পর আমার প্রথম সভা রাজস্থানের সীমান্তেই ছিল। অপারেশন সিঁদুরের পরও প্রথম জনসভা রাজস্থানেই হল। এয়ার স্ট্রাইকের পর আমি বলেছিলাম, দেশের মাথা নীচু হতে দেব না। আজ আমি রাজস্থান থেকে দাঁড়িয়ে বলছি, যারা সিঁদুর মুছতে বেরিয়েছিল, তাদের মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভারতীয়দের রক্ত বইয়েছে, আজ প্রতি বিন্দুর হিসাব দিতে হয়েছে।
২২ তারিখের হামলার জবাবে জঙ্গিদের ৯টা বড় ঠিকানা ২২ মিনিটে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বিশ্ব ও দেশের শত্রুরা দেখেছে, সিঁদুর বারুদ হয়ে গেলে, তার ফল কী হয়।
আমাদের সরকার তিন সেনাকেই খোলাছুট দিয়েছিল। তিন সেনা মিলে এমন চক্রব্যূহ তৈরি করেছিল যে পাকিস্তান মাথা নত করতে বাধ্য হয়েছে।
২২ এপ্রিল জঙ্গিরা ধর্ম জেনে আমাদের বোনেদের সিঁদুর মুছে দিয়েছিল। পহেলগাঁওয়ে গুলি চলেছিল, কিন্তু সেই গুলি ১৪০ কোটি মানুষের হৃদয় ফুঁড়ে দিয়েছিল। দেশবাসী চেয়েছিল তাদের এমন শাস্তি দেওয়া হোক, যা কল্পনারও বাইরে হবে। আপনাদের আশীর্বাদে ও সেনা বাহিনীর শৌর্যে আমরা সবাই সেই জবাব দিয়েছি।
আজ একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন হয়েছে। এর লক্ষ্য একটাই- যাতে দ্রুত উন্নতি হয়। যুব প্রজন্ম সুযোগ পায়।
পরিকাঠামোর উন্নয়নে যুবকরা সবথেকে বেশি উপকৃত হচ্ছেন। সীমান্ত এলাকাতেও উন্নতি হচ্ছে। শুধু রাজস্থানেই ৭০ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। এগুলো ২০১৪ সালের পরেই হয়েছে।
নতুন প্রজন্মকে চাকরির সুযোগ দেবে। জনগণের কাছে অনুরোধ করব, ট্রেন নোংরা করবেন না। রেলের সম্পত্তি আপনাদেরই সম্পত্তি। সরকার যে হাজার কোটি টাকা ব্যয় করছে, এই টাকা গরিব মজদুরদের পকেটে যাচ্ছে, দোকানদাররা পাচ্ছেন। সকলে উপকৃত হচ্ছেন।
১৩০০-রও বেশি রেল স্টেশনকে আধুনিক করা হচ্ছে। এগুলি অমৃত ভারত স্টেশন নামে পরিচিত হচ্ছে। ১০০-রও বেশি স্টেশন তৈরি হয়ে গিয়েছে। সকলে দেখছেন, কীভাবে এই স্টেশনগুলির সংস্কার করা হয়েছে। বিভিন্ন রাজ্যের শিল্প, ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়েছে এই স্টেশনগুলিতে।
আজ ভারত ট্রেনের নেটওয়ার্ককেও মজবুত করছে। বন্দে ভারত, অমৃত ভারত, নমো ভারত ট্রেন- এরা দেশের নতুন গতি ও প্রগতির অংশ। দূর-দূরান্তেও ট্রেন পৌঁছেছে। রোড ওভারব্রিজ তৈরি করা হয়েছে। ৩৪ হাজার কিলোমিটারের নতুন রেলপথ তৈরি করা হয়েছে। মানববিহীন ক্রসিং এখন অতীত। ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডর তৈরি হয়েছে। বুলেট ট্রেনের কাজও চলছে।
ভারতের উন্নয়ন দেখে বিশ্বও অবাক। উত্তরে গেলে চেনাব ব্রিজ দেখতে পাবেন। পূর্বদিকে গেলে অরুণাচল প্রদেশের সেলার সুড়ঙ্গ, অসমের বোগিবিল ব্রিজ দেখতে পাবেন। পশ্চিম ভারতে গেলে মুম্বইয়ে সমুদ্রের উপরে অটল সেতু দেখতে পাবেন। সূদূর দক্ষিণে পামবান ব্রিজ দেখতে পাবেন।”
এত গরমেও এসেছেন, আপনাদের ধন্যবাদ। এই উদ্যোগে দেশের ১৮ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত রাজ্যের মানুষ উপকৃত হবেন। বিকশিত ভারতের জন্য বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে। সড়কপথ থেকে বিমানবন্দর, রেল ও রেলস্টেশনের উন্নতিতে বিগত ১১ বছর ধরে কাজ করা হচ্ছে। আগে যা খরচ করা হত, তার ৬ গুণ বেশি টাকা খরচ করা হচ্ছে।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours