২০২৫সালে জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে দুমকাডি গ্রামে দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পের আয়োজন করে জেলা প্রশাসন। গত মাসের ২৪তারিখে দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে লক্ষ্মীর ভান্ডারের আবেদনপত্র নিয়ে যাওয়ার পরেই জানতে পারেন, তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা দীর্ঘদিন ধরেই ঢুকছে।
আপনার লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা পার্বতীর মতো হচ্ছে না তো? ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট চেক করে নিন
কী ঘটে চলেছে পাবর্তীর সঙ্গে?
‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পের এবার জালিয়াতির অভিযোগ উঠল পুরুলিয়ায়।২০২১ সালেই পুরুলিয়া ১নম্বর ব্লকের চিপিদা- ভান্ডারপুয়ারা গ্রাম পঞ্চায়েতের ভান্ডারপুয়ারা গ্রামের বাসিন্দা তপশিলি জাতি পরিবারের সদস্যা পার্বতী রজক। ২০২১সালে তিনি দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে লক্ষ্মীর ভান্ডারের প্রকল্পের জন্য আবেদন করেন। কিন্তু সেই সময় তার আবেদনপত্র লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে নথিভুক্ত হয়নি। কিন্তু তিনি হাল ছাড়তে নারাজ ২০২৪সাল প্রযন্ত পুরুলিয়া ১নম্বর ব্লকের চিপিদা-ভান্ডারপুয়ারা গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে যতবার দুয়ারে সরকারের ক্যাম্প হয়েছে ততবারই তিনি লক্ষ্মীর ভান্ডারের জন্য আবেদন করে আসছেন। তাও তিনি লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হতে পারেননি।
২০২৫সালে জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে দুমকাডি গ্রামে দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পের আয়োজন করে জেলা প্রশাসন। গত মাসের ২৪তারিখে দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে লক্ষ্মীর ভান্ডারের আবেদনপত্র নিয়ে যাওয়ার পরেই জানতে পারেন, তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা দীর্ঘদিন ধরেই ঢুকছে। তারপর সেই অ্যাকাউন্টের তথ্য সংগ্রহ করেন পার্বতী।
সেখানে দেখা যাচ্ছে, তাঁর আইডি নম্বর থাকলেও ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টটি তাঁর নয়। তারপরেই তিনি ব্লক প্রশাসনের দারস্থ হন। তিনি লিখিতভাবে জানান, তাঁর নামে যে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা পাঠানো হয় সেই অ্যাকাউন্ট তাঁর নয়। তাঁর নামে অন্য কারোর অ্যাকাউন্টে সেই টাকা দেওয়া হচ্ছে। সেই টাকা যেন পান, তাঁর আবেদন করেন পার্বতী।
জানা গিয়েছে, যে অ্যাকাউন্টে পার্বতী রজকের লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা ঢুকছে, সেই অ্যাকাউন্টের মালিক অন্য মহিলা। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, পদ্মা রজক নামে এক মহিলার অ্যাকাউন্টে এই লক্ষী ভান্ডারের টাকা ঢুকছে, তাঁর বাড়িও ভান্ডারপুয়ারা গ্রামে। পুরুলিয়া শহরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে!
২০২১সাল থেকেই প্রত্যেক মাসে লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা ঢুকছে। যদিও ভান্ডারপুয়ারা সংসদের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য তথা উপপ্রধান বলেন, “পদ্মা রজক নামে এই গ্রামে কেউ থাকে না। ফলে সুপরিকল্পিত ভাবেই যে জালিয়াতি করা হয়েছে তা পরিষ্কার।”
আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে কীভাবে এক জনের আবেদনপত্রের সঙ্গে অন্য জনের অ্যাকাউন্ট নম্বর যুক্ত হয়? আর এই সব তথ্য সংক্রান্ত কাজ ব্লক অফিসের কর্মীরাই করে থাকেন। ব্লক অফিস থেকেই প্রত্যেক মাসে সুবিধা ভোগীদের অ্যাকাউন্টে অনুদানের টাকা পাঠানো ব্যবস্থা করে থাকে। সেই ক্ষেত্রে ব্লক অফিসের কর্মীদের দিকেই অভিযোগের আঙুল উঠছে।
পার্বতী রজকের স্বামী একজন হকার। সকাল বেলায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে গ্রামে গ্রামে তিনি হকারি করেন তাই দিয়েই কোনওরকমে তাঁদের সংসার চলে। বাড়িতে স্ত্রী ছাড়াও রয়েছেন তার মা বাবা ও দুই সন্তান। দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারের সঙ্গে এই ভাবে জালিয়াতি করে বছরের পর বছর সরকারি প্রকল্প থেকে বঞ্চিত করা হয়। এখন প্রশ্ন তাহলে ২০২১সাল থেকে কি পার্বতী রজক লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা পাবে?
যদিও ব্লক প্রশাসনের বিডিও বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পার্বতী রজকের আধার কার্ড দিয়ে পদ্মার রজক টাকা পাচ্ছে।নির্দিষ্ট জায়গায় বিষয়টি জানানো হয়েছে, যাতে ওই অ্যাকাউন্টে টাকা বন্ধ করে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারপরেই নতুন ভাবে পার্বতী রজক লক্ষ্মীর ভান্ডারের আবেদন করার সুযোগ পাবে।”
Post A Comment:
0 comments so far,add yours