ঘরে রাখা সমস্ত সোনা লুঠ করে নিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। সোনালিকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কোথাও একটা খটকা লেগেছিল। দুদিনের মধ্যে সেই রিজেন্ট পার্ক থানার ডাকাতির ঘটনায় রোমহর্ষক ঘটনা এল সামনে। পুলিশের দাবি, নিজের ফ্ল্যাটে ডাকাতির গল্প ফেঁদেছিলেন সোনালি নিজেই। 


২দিন বাদেই ছেলের বিয়ে! তার আগেই বাড়িতে সোনার গয়না লুঠ করালেন মা সোনালি! কেন? রিজেন্ট পার্কে রেলকর্মীর বাড়িতে ডাকাতির কারণ দেখে স্তম্ভিত পুলিশও
বাঁ দিকে, মা, ডান দিকে ছেলে


শহরে বিডন্স স্ট্রিটে একাকী বৃদ্ধার বাড়িতে ডাকাতির ঘটনার পরই সামনে এসেছিল রিজেন্ট পার্কের এই ঘটনা। রিজেন্ট পার্ক থানা থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরেই একটা ফ্ল্যাটে। সেই ফ্ল্যাটের মালকিন সোনালি বিশ্বাস। তিনি থানায় ফোন করে জানিয়েছিলেন, তাঁর বাড়িতে ডাকাতি হয়েছে। তাঁর বয়ান ছিল, সোমবার সন্ধ্যায় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। যখন ফেরেন, তখন দুই যুবক পিছনের দরজা দিয়ে ভিতরে ঢোকেন। তাঁর মুখে কাপড় গুঁজে, হাত বেঁধে ডাকাতি চালান। ঘরে রাখা সমস্ত সোনা লুঠ করে নিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। সোনালিকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কোথাও একটা খটকা লেগেছিল। দুদিনের মধ্যে সেই রিজেন্ট পার্ক থানার ডাকাতির ঘটনায় রোমহর্ষক ঘটনা এল সামনে। পুলিশের দাবি, নিজের ফ্ল্যাটে ডাকাতির গল্প ফেঁদেছিলেন সোনালি নিজেই।


ঘটনাটি ঠিক কী ঘটেছিল?

রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকার বাসিন্দা পেশায় রেল কর্মী পিকলু বিশ্বাস। তাঁর প্রথম পক্ষের স্ত্রীর ক্যান্সারে মৃত্যু হয়। এরপর সোনালি বিশ্বাসকে বিয়ে করেন তিনি। পিকলুর প্রথম পক্ষের ছেলে দেবজ্যোতি বিশ্বাস। সামনেই দেবজ্যোতির বিয়ে ছিল। তার জন্য বাড়িতে সোনার গয়না কিনে রাখা ছিল।

এরপরই মধ্যে সোনালি গত সোমাবার থানায় ফোন করে জানান, তাঁর বাড়িতে ডাকাতি হয়েছে। সোনার গয়না লুঠ করেছে দুষ্কৃতীরা। পুলিশ গিয়ে দেখে, বাড়িতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে ভাঙা কাচের প্লেট-কাপ। সোনালি দাবি করেছিলেন, ধস্তাধস্তিতে ভেঙেছে সব। দুষ্কৃতীরা সোনার সমস্ত গয়না নিয়ে পালিয়েছে বলে দাবি করেন সোনালি। পুলিশকে দিয়ে তিন বার স্কেচও আঁকেন দুষ্কৃতীদের।

সোনালি বলেছিলেন, “আমাদের অনেক গয়না ছিল। আমি ঘরে ঢুকছিলাম, তখনই আমার পিছন পিছন ঢোকে। মুখে গেঞ্জি ঢুকিয়ে দেয়। দু’জন ছিল। ডেলিভারি বয়ের মতো ছিল। আমাকে ছুরি দেখিয়ে বলছিল, যা আছে সব বার করতে।”

কিন্তু সোনালির কথাবার্তায় বেশ কয়েক জায়গায় খটকা লাগছিল পুলিশের। যে সময়কার কথা বলা হয়, সিসিটিভি ক্যামেরা চেক করে দেখা যায়, তখন সন্দেহজনক কেউই ঢোকেনি ফ্ল্যাটে। কথায় আরও একাধিক অসঙ্গতি ছিল। তারপরই সোনালিকে টানা জেরা করতে থাকে পুলিশ। বেরিয়ে আসে আসল সত্য। পুলিশের দাবি, জেরায় সোনালি স্বীকার করেন, তাঁর বাপেরবাড়িতে আর্থিক সমস্যা রয়েছে। কিছুদিন আগে বাপেরবাড়ির তরফ থেকে তাঁর কাছে ৬ লক্ষ টাকা চাওয়াও হয়। এরপরই সোনালি তাঁর জামাইবাবু রাজা নাগের সঙ্গে ডাকাতির গল্প ফাঁদেন।

ইতিমধ্যেই রাজা নাগ নামে সোনালির ওই জামাইবাবুকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে জানা গিয়েছে, সোনা সবই বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল। সেই সোনা এখনও পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours