আটটি ব্যালট বাতিল করে, বিজেপি প্রার্থী, মনোজ সোনকারকে জয়ী বলে ঘোষণা করেছিলেন রিটার্নিং অফিসার অনিল মসিহ। কিন্তু, সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখা গিয়েছিল অনিল মসিহ ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যালটগুলি বাতিল করেছিলেন। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, এই ক্ষেত্রে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে।
সুপ্রিম রায়ে BJP-র বিরুদ্ধে 'INDIA'র প্রথম জয়! জোটের ভবিষ্যৎ যদিও সেই তিমিরেই
নয়া দিল্লি: কয়েক সপ্তাহের রাজনৈতিক ডামাডোলের অবসান। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি), চণ্ডীগড় পুর কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচনে কংগ্রেস-আম আদমি পার্টির যৌথ প্রার্থী কুলদীপ কুমারকেই বৈধ বিজয়ী বলে ঘোষণা করল সুপ্রিম কোর্ট। গত মাসে এই ভোট হয়েছিল। আটটি ব্যালট বাতিল করে, বিজেপি প্রার্থী, মনোজ সোনকারকে জয়ী বলে ঘোষণা করেছিলেন রিটার্নিং অফিসার অনিল মসিহ। কিন্তু, সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখা গিয়েছিল অনিল মসিহ ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যালটগুলি বাতিল করেছিলেন। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, এই ক্ষেত্রে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। এদিন, বাতিল করা ব্যালটগুলি দেখতে চেয়েছিল শীর্ষ আদালত। ওই বাতিল ব্যালটগুলিকে বৈধ বলে ঘোষণা করে পুনর্গণনার মাধ্যমে এদিন ইন্ডিয়া জোটের প্রার্থীকেই জয়ী বলে ঘোষণা করল আদালত।
এদিন রায় ঘোষণার সময় শীর্ষ আদালত আরও জানিয়েছে, অনিল মসিহ আদালত অবমাননা করেছেন। তাঁকে ‘কারণ দর্শানোর’ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। শুনানি চলাকালীন, আদালত তাঁকে বারবার সতর্ক করে বলেছিল, যদি দেখা যায় তিনি আদালতে মিথ্যা বলেছেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সোমবার আদালত বলেছিল, অনিল মসিহ এই ক্ষেত্রে অপরাধ করেছেন। তাঁকে বিচার ব্যবস্থার আওতায় আনতে হবে। এর আগে শুনানির সময় সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, ভোটের ফলাফলে কারচুপি করার ক্ষেত্রে এই মামলা এক কঠোর সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করবে।
এদিন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্ট বাতিল আটটি ব্যালট পেপার পরীক্ষা করে। আদালত জানতে চায়, ব্যালটগুলি কেন বাতিল করা হয়েছিল? রিটার্নিং অফিসারের পক্ষে বিশিষ্ট আইনজীবী মুকুল রোহাতগি ব্যালটে কয়েকটি ছোট বিন্দু দেখিয়ে জানান, ওই দাগগুলির জন্যই ওই ব্যালটগুলিকে অবৈধ ঘোষণা করেছিলেন অনিল মসিহ। মুকুল রোহাতগি বলেন, “উনি চোর নন, এটা তাঁর মূল্যায়ন ছিল মাত্র।” আদালত অবশ্য এই যুক্তি মানতে চায়নি। শীর্ষ আদালত বলেছে, “আটজনই কুলদীপ কুমারকে ভোট দিয়েছিলেন। অনিল মসিহ স্পষ্টতই একটি রাজনৈতিক মত ধরে ব্যালটগুলি বাতিল করেছেন।”
একটি সামান্য় পৌরসভা নির্বাচন হলেও, এই নির্বাচন অন্য এক কারণে দেশব্যাপী আগ্রহ তৈরি করেছিল। এই নির্বাচনে প্রথমবার ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনে লড়েছিল ইন্ডিয়া জোটের দুই শরিক, কংগ্রেস এবং আপ। এদিন আদালতের রায়ের জোরে, বিজেপির বিরুদ্ধে প্রথম জয় পেল ইন্ডিয়া জোট। জোটের এখন যা ভঙ্গুর অবস্থা, তাতে আদালতের এই রায় ইন্ডিয়া জোটের জন্য বড় অক্সিজেন বলে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে, এই জয়ে ইন্ডিয়া জোটের ভবিষ্যৎ খুব একটা বদলাবে বলে মনে করছেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। আসন ভাগাভাগি এবং ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে রাজ্যে রাজ্যে ইন্ডিয়া জোটের সদস্যদের মধ্যে তীব্র মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। যে আপের সঙ্গে জোট বেঁধে কংগ্রেস এদিন জয় পেল, সেই আপই পঞ্জাবে কংগ্রেসকে একটিও আসন ছাড়তে রাজি হয়নি। দিল্লিতেও মাত্র ১টি আসন দিতে রাজি হয়েছে। কাজেই জোটের ভবিষ্যৎ এখনও সেই তিমিরেই।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours