‘আমি নিজে তদারকি করব’, কীভাবে কাজ করবে ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’, জানালেন মমতা

Mamata Banerjee: মুখ্যমন্ত্রী বললেন, "পার্টির তরফে 'দিদিকে বলো' বলে একটি কর্মসূচি করা হয়েছিল। কিন্তু এটা রাজনৈতিক কোনও কর্মসূচি নয়। অনেকটা একইধরনের পরিষেবা, তবে সরকারি পরিষেবা।"

Mamata Banerjee Updates: 'আমি নিজে তদারকি করব', কীভাবে কাজ করবে 'সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী', জানালেন মমতামুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কলকাতা: রাজ্যের আমজনতার অভাব-অভিযোগের কথা শুনতে এবার আরও বেশি তৎপর নবান্ন। শুরু করা হচ্ছে, ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’ কর্মসূচি। সাধারণ মানুষের অভাব-অভিযোগের কথা শোনার জন্য দলীয় স্তরে আগেই ‘দিদিকে বলো’ নামে একটি কর্মসূচি চালু করা হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে। এবার সরকারি স্তরেও চালু করা হল অভাব-অভিযোগের কথা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আরও সহজে পৌঁছে দেওয়ার প্রক্রিয়া। এদিন দুপুরে এই নিয়ে নবান্ন সভাঘর থেকে একটি সাংবাদিক বৈঠকও করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীও।


মুখ্যমন্ত্রী বললেন, “পার্টির তরফে ‘দিদিকে বলো’ বলে একটি কর্মসূচি করা হয়েছিল। কিন্তু এটা রাজনৈতিক কোনও কর্মসূচি নয়। অনেকটা একইধরনের পরিষেবা, তবে সরকারি পরিষেবা। বাংলার মানুষ সরাসরি ফোন করে, যাঁর যা অসুবিধা রয়েছে, তা আমাকে জানাতে পারবেন। নম্বরটি হল ৯১৩৭০৯১৩৭০। সোমবার থেকে শনিবার প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে সন্ধে ৬ টা পর্যন্ত এই লাইন খোলা থাকবে।’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘এতদিন অনেকে চিঠি লিখে, ইমেল করে আমার কাছে অভিযোগ জানাতেন। সেটা এবার আরও সহজ হল। মানুষের কথা শোনার জন্য আরও আধুনিক ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৫০০ কল সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া আমাদের ১০০ জনের বেশি ফিল্ড কর্মী থাকবেন। প্রতিটি অভিযোগ সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।’
মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, ‘হয়ত সরকার সবটা করতে পারে না, সবটা হাতে থাকে না। কিন্তু চেষ্টা করে দেখতে ক্ষতি কী আছে!’
রাজ্যবাসী যে অনেক পরিষেবা থেকে কেন্দ্রের টাকা আটকে রাখার জন্য পাচ্ছেন না, সেই কথাও এদিন সাংবাদিক বৈঠকে তুলে ধরেন মমতা। বললেন, ‘বাংলার বাড়ি প্রকল্পের টাকা আমরা পাচ্ছি না। এখন কেন্দ্র এটা বন্ধ করে দিয়েছে। যখন চালু হবে, তখন আবার এটা করে দেওয়া হবে। নাহলে কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। যখন আবার দিল্লিতে নতুন সরকার আসবে, তখন আমরা এই কর্মসূচি নেব।’

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাস্তার কাজের টাকাও (কেন্দ্রের থেকে) বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমরা নিজেরা প্রায় ১ লাখ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করেছি বাংলায়। এবারও আমরা রাজ্য সরকারের তরফে টাকার অভাব থাকা সত্ত্বেও ১১ হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করছি।’
মমতা জানালেন, ‘অভিযোগ এলে তা দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। আমি নিজেও পুরোটা তদারকি করব। যাঁরা সচিব রয়েছেন, তাঁদের উদ্দেশে বলছি… শুধু অভিযোগ এসেছে, সেটা জানালাম… এমন করে দিলে হবে না। সব দফতরের সচিবদের এটি দায়িত্ব নিয়ে করতে হবে। কোনও আবেদন আপনাদের কাছে গেলে, সেটি আপনার নীচুতলায় পাঠিয়ে দিলেই আপনার দায়িত্ব শেষ হবে না। নীচুতলায় অনেকেই চেষ্টা করেন, ফাইল ফেলে রাখার। সেটা আপনাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। আপনাদের নজরদারি করতে হবে।’
মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে মমতা বললেন, ‘ইমার্জেন্সি রোগীদের হাসপাতালের ভর্তির ক্ষেত্রে কিংবা আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিষয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে একটি মেকানিজম তৈরি করুন।’
 মমতা বললেন, ‘মানুষ যাতে তাদের দাবি-দাওয়া অভাব-অভিযোগ জানাতে পারেন, সেই কারণে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে গ্রিভান্স সেল ২০১৯ সালে তৈরি করা হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত এখানে ২২ লাখের বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে ৯৮.২০ শতাংশ অভিযোগের সমাধান হয়ে গিয়েছে। প্রতিটি অভিযোগ, ৭-১৫ দিনের মধ্যে সমাধান হয়েছে।’
জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের উদ্দেশে মমতার পরামর্শ যাতে তাঁরা বিএসকে কেন্দ্রগুলিতে মাঝে মধ্যে পরিদর্শনে যান। কোথাও কোনও ঘটনা ঘটলে, বিডিও ও স্থানীয় থানার আইসিরা যাতে আগে পদক্ষেপ করেন, সেই বিষয়টির দিকেও নজর দেওয়ার জন্য জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের বললেন মমতা।
মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ‘প্রথমে যখন ঘটনা ঘটে, তখন স্থানীয় থানার আইসিরা বিষয়টি জানতে পারেন। কিন্তু আইসি যদি তিন ঘণ্টা পরে যান, তখন ঘটনাটি অন্য রূপ নিতে পারে। থানার আইসিরা সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে যাবেন। কিন্তু দুইজন পুলিশ নিয়ে চলে যাবেন, এটা যেন না হয়। দশটা গুন্ডা তৈরি হয়ে, পুলিশকে মারছে… এটা তো ভাল নয়। আপনার যা লোকবল রয়েছে, সেই লোকবল নিয়েই যেতে হবে। পরে প্রয়োজন হলে আরও লোক চেয়ে নেবেন।’
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours