যদিও, এই তিন তৃণমূল নেতা আচরণকে ভাল চোখে দেখেননি অভিষেক। পরে গাড়ির কাচ নামিয়ে তিনি বলেন, "প্রকৃত তৃণমূল কর্মী এইভাবে গাড়ি আটকে ক্ষোভ প্রকাশ করে না। এসব দলে চলবে না। দলের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে তোমাকে সাসপেন্ড করছি।"

Abhishek Banerjee: 'প্রকৃত তৃণমূল কর্মীরা এমন করে না', কনভয়ের সামনে হঠাৎ ৩ নেতা শুয়ে পড়ায় কড়়া পদক্ষেপ অভিষেকেরতিন তৃণমূল কর্মীর আচরণে ক্ষুব্ধ অভিষেক (নিজস্ব চিত্র)

ঘাটাল: রবিবার রাত তখন ন’টা। পশ্চিম মেদিনীপুরের (Paschim medinipur) ঘাটালের বীরসিংহ থেকে ‘তৃণমূলের নবজোয়ার’ কর্মসূচি সেরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) ফিরছিলেন বিদ্যাসাগর হাইস্কুল মাঠের তাঁবুতে। আচমকাই তখন অভিষেকের কনভয় আটকে শুয়ে পড়লেন তিন তৃণমূল নেতা (TMC Leader)। জোরে-জোরে তুললেন স্লোগান ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে। এমনকী ব্লক সভাপতি দিলীপ মাঝিকে পদ থেকে সরানোর দাবি তোলেন তাঁরা। এমনটাই তৃণমূল সূত্রে খবর। যদিও, এই তিন তৃণমূল নেতা আচরণকে ভাল চোখে দেখেননি অভিষেক। পরে গাড়ির কাচ নামিয়ে তিনি বলেন, “প্রকৃত তৃণমূল কর্মী এইভাবে গাড়ি আটকে ক্ষোভ প্রকাশ করে না। এসব দলে চলবে না। দলের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে তোমাকে সাসপেন্ড করছি।”


সাসপেন্ড হওয়া তিন তৃণমূল নেতা হলেন ঘাটালের মূলগ্রাম বুথের সভাপতি শেখ সোলেমান আলি,বীরসিংহ অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পাদক শেখ আবদুল রশিদ ও ঘাটাল ব্লক তৃণমূলের আইটি সেলের কর্মী দীপঙ্কর ঘোষ। তাঁদের দাবি, ঘাটাল ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি দিলীপ মাঝি পদে থাকলে দল ডুববে। তাই তাঁকে সরিয়ে প্রাক্তন বিধায়ক শঙ্কর দোলুইকে দায়িত্ব হোক বলে অভিষেকের কাছে আর্জি জানান ওই তিনজন। তবে প্রতিবাদের ফল যে এভাবে দিতে হবে তা হয়ত ভাবেননি ওই তৃণমূল নেতারা।

এ দিকে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই নির্দেশ ঘাটাল ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি দিলীপ মাঝির কাছে পৌঁছলে ওইদিন রাতেই অভিযুক্ত বুথ সভাপতি শেখ সোলেমান আলিকে সাসপেন্ড করা হয়। এবং বাকি দু’জনকেও শোকজ করা হবে বলেও জানা গিয়েছে তৃণমূল সূত্র মারফত। ঘটনায় রীতিমতো মুখে কুলুপ তিন অভিযুক্ত তৃণমূল নেতারা। তবে এদের মধ্যে যাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে সেই মুলগ্রাম বুথের সভাপতি শেখ সোলেমান আলিকে ফোন করা হলে তিনি বেশিকিছু বলতে না চাইলেও ফোনে জানান,”সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে শুনলাম। তবে আমার হাতে কোনও লেটার আসেনি। অঞ্চলের প্রধানের কাছে সাসপেন্ড লেটার পাঠানো হয়েছে। সেই আমায় জানিয়েছে।” হঠাৎ কেন সাসপেন্ড করা হল তাঁকে সে প্রশ্নের উত্তরে বুথ সভাপতি জানান,”আমি হয়তো কিছু ভুল করেছি তাই সাসপেন্ড করেছে।” একই সঙ্গে বলেন, “অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের কনভয়ের সামনে শুয়ে পড়ার কথা মিথ্যা। খালি রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে হাত নেড়ে দাঁড়ানোর জন্য আবেদন করেছিলাম। তিনি আমাদের দলের সুপ্রিমো। তাঁর উপরে কিছু বার্তা দেওয়ায় যাবেনা আর বলাও যাবে না। উনি যা ভাল বুঝেছেন করেছেন। আমি ৯৮ সাল থেকে দল করি সাসপেন্ড করেছে ঠিক আছে। কিন্তু দল ছাড়তে পারব না। ভোটটা তো দিতে পারব।”


যদি এ বিষয়ে ঘাটাল ব্লক তৃণমূলের সভাপতি দিলীপ মাঝি বলেন, “যাঁরা এই কাজকর্ম করেছে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ ছিল।”

এ বিষয়ে ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি আশিষ হুদাইত বলেন,”মুলগ্রামের বুথ সভাপতি শেখ সোলেমান আলি সহ কয়েকজন নেতৃত্ব ঘাটালের জলসরায় অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের কনভয় আটকানোর চেষ্টা করে কিছু কথা বলার চেষ্টা করে যা দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের সমান।দ লের ওইসব নেতৃত্ব দলকে কালিমালিপ্ত করার জন্য ইচ্ছা করে মনগড়া কথা বানিয়ে বলার চেষ্টা করেছে। দলের যে স্তরে জানানোর দরকার সেখানে না জানিয়ে একেবারে জনসমক্ষে দলের ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয়েছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো তাই তাঁকে সঙ্গে-সঙ্গে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এবং বাকিদেরও শোকজ করা হবে। ৭ দিনের মধ্যে জবাব না দিলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”


Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours