তৃণমূল সুপ্রিমো মাঝে-মধ্যে কাজল শেখকে বগটুই গ্রামে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।

বগটুইকাণ্ডের (Bagtui Massacare) এক বছর পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু, এখনও সেই নৃশংস ঘটনার রেশ কাটেনি। এবার সেই বগটুইকাণ্ড নিয়ে আক্ষেপের সুর শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) গলায়। শুক্রবার কালীঘাটে বীরভূমের দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকেই বগটুই নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর, বগটুইকাণ্ডে নিহতদের পরিবারের জন্য অনেক কিছু করার পরেও তাঁরা অন্য দলের সঙ্গে চলছে বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেন তিনি।


বগটুই নিয়ে ঠিক কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী? সূত্রের খবর, এদিন বীরভূম জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে আক্ষেপের সুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওদের জন্য কী করিনি? চাকরি দিয়েছি। ক্ষতিপূরণ দিয়েছি। সরকারি প্রকল্পে যুক্ত করেছি। তারপরেও অন্য দলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছে।” পরিস্থিতি সামাল দিতে তৃণমূল সুপ্রিমো মাঝে-মধ্যে কাজল শেখকে বগটুই গ্রামে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলেও সূত্রের খবর।

এদিন কালীঘাটে নিজের বাসভবনে বীরভূম জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটকে পাখির চোখ করেই তৃণমূল সুপ্রিমো এই বৈঠকে বসেন বলে সূত্রের খবর। এই বৈঠক থেকেই বীরভূম জেলা তৃণমূল কমিটি ঢেলে সাজানো হয়। আপাতত জেলা সংগঠনের ভার নিজের হাতেই রাখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি ৫ জনের একটি কোর কমিটি গঠন করেন। তবে জেলা সভাপতি বদল করা হয়নি। অর্থাৎ গরু পাচার মামলায় তিহাড় জেলে বন্দি থাকলেও বকলমে অনুব্রত মণ্ডল-ই বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি রইলেন। ফলে পঞ্চায়েত ভোটের বৈতরণী পেরোতে তৃণমূল নেতৃত্ব এখনও কেষ্টর উপরই ভরসা রাখছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।




অন্যদিকে, নতুন জেলা কমিটি গঠন সহ বীরভূমে তৃণমূলের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়েই আলোচনা প্রসঙ্গেই বগটুই নিয়ে এদিন আক্ষেপ ঝরে পড়ে তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রীর গলায়। যদিও স্পষ্টভাবে কারও নাম বা কোনও দলের নামোল্লেখ করেননি তিনি।

প্রসঙ্গত, গত বছর ২১ মার্চ রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ রামপুরহাটে জাতীয় সড়কের ধারে বোমা মেরে খুন করা হয় স্থানীয় বড়শাল গ্রামপঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখকে। অভিযোগ, সেই খুনেরই বদলা নিতে বগটুই গ্রামে সেদিন রাতে হামলা করা হয়। অভিযোগ, বেছে বেছে ভাদু-বিরোধী গ্রামের বাসিন্দাদের বাড়িতে আগুন লাগানো হয়। অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় কমপক্ষে ১০ জনের। যার মধ্যে রয়েছে ৯ বছরের শিশু থেকে ৮০ বছরের বৃদ্ধা। এমনকি শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে এসে সদ্য বিবাহিত মেয়ে-জামাইকেও হিংসার আগুনে পুড়ে মরতে হয়েছে। তারপর এই ঘটনা নিয়ে তোলপাড় হয় রাজ্য-রাজনীতি। গোটা ঘটনায় শাসকদল থেকে পুলিশ-প্রশাসনের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলে বিরোধীরা। যদিও সেই ঘটনায় অভিযুক্ত বেশ কয়েকজন গ্রেফতার হয়েছে। নিহতদের পরিবারকে বিশেষ ক্ষতিপূরণও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এমনকি ঘটনার কয়েকদিন পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং বগটুই গ্রামে গিয়ে নিহতদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours