সোমবার ভোর রাত ৩টে নাগাদ ওয়ার্ডের ভিতরেই শৌচালয় যান ওই মহিলা। শৌচালয়ের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে দেন।

মা হয়েছেন। সদ্যজাত তখনও শুয়ে হাসপাতালের বেডে। শৌচাগারে ঢুকে গলায় ফাঁস দিলেন মা! হাওড়ার ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মানসিক অবসাদ নাকি অন্য কোনও কারণ! তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। জেলা হাসপাতালের মাতৃত্বকালীন বিভাগের শৌচালয় থেকে উদ্ধার হল এক মহিলার ঝুলন্ত দেহ (Hanging Body)। সেই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল হাসপাতালে। মৃতার নাম অস্টি রায় (৩৫)। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮ টায় হাসপাতালে ভর্তি হন ওই মহিলা। সে দিনই এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি। তারপর থেকে তাঁর শারীরিক অসুস্থতার কারণে হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।


সোমবার ভোর রাত ৩টে নাগাদ ওয়ার্ডের ভিতরেই শৌচালয় যান ওই মহিলা। শৌচালয়ের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে দেন। অনেকক্ষণ শৌচালয় থেকে না বেরেনোয় হাসপাতালের ভিতরে থাকা নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁকে ডাকাডাকি করেন। দরজায় ধাক্কাও দেন। কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে পুলিশকে খবর দেন। হাওড়া থানার পুলিশ দরজা ভেঙে ওই মহিলাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। গলায় কাপড়ের ফাঁস দিয়ে শৌচালয়ের ভিতরেই ঝুলছিলেন তিনি। পুলিশ দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, মানসিক অবসাদ থেকেই ওই মহিলা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, মহিলার পরিবারের সদস্যদের দাবি, মানসিক অবসাদগ্রস্ত থাকায় দীর্ঘদিন ধরে ওষুধ খাচ্ছিলেন তিনি। মহিলার স্বামী তারক রায় অবশ্য জানিয়েছেন, তৃতীয় সন্তান ছেলে না হওয়াতেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন ওই মহিলা। আর সে কারণেই আত্মহত্যা করেছেন তিনি।



হাওড়ার উত্তর মৌড়ি এলাকার বাসিন্দা অস্টিদেবীর সঙ্গে ডোমজুড়ের সর্দারপাড়ার বাসিন্দা তারকবাবুর বিয়ে হয় বছর দশেক আগে। তাঁদের এক ১০ বছরের ও এক ৬ বছরের কন্যা সন্তান রয়েছে। পুত্র সন্তানের আশায় ফের সন্তান সম্ভবা হন অষ্টি দেবী। এবারও কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। তারকবাবুর দাবি, তিনি বা তাঁর পরিবারের তরফে কেউ কোনওদিন পুত্র সন্তানের জন্য চাপ দেননি। উল্টে তাঁরা অস্টিদেবীকে বুঝিয়েছেন কন্যাসন্তান হলেও কোনও ক্ষতি নেই। শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগও ওঠেনি। পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে ও তদন্ত করছে।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours