২০২২ সালের নভেম্বরে ডেঙ্গির দাপট সবথেকে বেশি এ রাজ্যে। ২০১৭ সাল থেকে এই প্রথম বছরের ৪৪ তম সপ্তাহে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার পার করেছে।


ফের কলকাতায় ডেঙ্গিতে (Dengue) মৃত্যু। এবার দক্ষিণ কলকাতার সন্তোষপুরে ডেঙ্গির থাবা। মৃত্যু হল ৩০ বছর বয়সী রোহিত দাস নামে এক যুবকের। সন্তোষপুরের ওই বাসিন্দা দক্ষিণ কলকাতারই একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। শুক্রবার সকালে মারা যান তিনি। এবার অল্প বয়সী ডেঙ্গি আক্রান্তদের মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন চিকিৎসকমহল। রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। বিরোধীদের দাবি, রাজ্য ডেঙ্গি মোকাবিলায় কোনও ব্যবস্থাই নিচ্ছে না। পাল্টা শাসকদলের দাবি, সবরকম পদক্ষেপই নেওয়া হচ্ছে। বিরোধীরা রাজনীতি করার জন্য এ ধরনের কথা বলছে। ডেঙ্গি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ভারতী প্রবীণ পাওয়ার রাজ্যের বিরুদ্ধে তথ্য় গোপনের অভিযোগ তুলেছে। অভিযোগ উড়িয়ে পাল্টা নিশানা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের।

ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে বেশ কয়েকদিন ধরেই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন সন্তোষপুরের রোহিত দাস। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে স্থানান্তরিত করা হয়। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। লিভারেও কিছু সমস্য়া দেখা দেয় বলে সূত্রের খবর। কিডনিতেও সমস্যা ছিল সার্ভে পার্কের রোহিতের।

একের পর এক কম বয়সীদের প্রাণ কাড়ছে মশাবাহিত রোগ। মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগেই মৃত্যু হয়েছে ৮ ও ৯ বছরের দুই বালক বালিকার। প্রশ্ন উঠছে, কেন এমন প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে ডেঙ্গি? গত ২৭ সেপ্টেম্বর বিধাননগরের এক শিশুর মৃত্য়ু হয়। গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ দমদমের দশম শ্রেণির এক ছাত্র মারা যায়। তারও ডেঙ্গি হয়েছিল।

২২ অক্টোবর বাঙুর হাসপাতালে মারা যায় ২৪ বছরের এক তরুণ। ৩১ অক্টোবর শ্রীরামপুরের ২৭ বছর বয়সী এক মহিলা মারা যান। ৩ নভেম্বর আরজি কর হাসপাতালে মারা যান ৩১ বছরের অন্তঃসত্ত্বা। ৭ নভেম্বর ৩৬ বছরের যুবক মারা যান সল্টলেকে। ৯ নভেম্বর বিধাননগরে ৮ বছরের বালিকা মারা যায়। এদিনই মারা যায় হাওড়ার ৯ বছরের এক বালকও।

স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর, ২০২২ সালের নভেম্বরে ডেঙ্গির দাপট সবথেকে বেশি এ রাজ্যে। ২০১৭ সাল থেকে এই প্রথম বছরের ৪৪ তম সপ্তাহে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার পার করেছে। ৮ নভেম্বর পর্যন্ত এ বছর ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ৫১ হাজার ৬৬৭। ২০১৭ সাল থেকে ধরলে এটিও রেকর্ড। শীর্ষে উত্তর ২৪ পরগনা, কলকাতা, মুর্শিদাবাদ।

শুক্রবার কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে এসে ডেঙ্গি নিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে তথ্য় গোপনের অভিযোগ তোলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ভারতী প্রবীণ পাওয়ার। পাল্টা ফিরহাদ হাকিম বলেন, “দুর্ভাগ্য হচ্ছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী যখন এখানে আসেন তখন বিজেপির নেতা হয়ে কথা বলেন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসাবে কথা বললে এগুলো বলতেন না। এখানকার বিজেপি নেতারা যেহেতু বাজার গরম করার জন্য বলছে, তারই প্রতিধ্বনি উনি করেছেন। আমরা কখনই কোনও তথ্য লুকাবো না। তথ্য লুকিয়ে লাভ কী আছে?”
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours