মামনির মায়ের দাবি ৭ বছর আগে বিয়ে হলেও বিয়ের পর থেকেই মেয়ের উপর পাশবিক নির্যাতন করত তাঁর স্বামী। তাতে যোগ দিত তাঁদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও

ভারতীয় দণ্ডবিধির (Indian Penal Code) ৪৯৮এ ধারায় বিবাহিত কোনও মহিলা শ্বশুরবাড়িতে নিষ্ঠুরতার শিকার হলে তাঁর স্বামী ও শ্বশুরালয়ের আত্মীয়দের শাস্তি দেওয়ার বিধান রয়েছে। খাতায় কলমে এই আইন থাকলেও তাঁকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রোজই রাজ্যের নানা প্রান্তে শ্বশুরবাড়ির লোকেদের হাতে নির্যাতিত হচ্ছেন বহু মহিলা। আসছে খুনের (Murder) খবর। এবার ফের একই ঘটনার প্রতিচ্ছবি দেখতে পাওয়া গেল হুগলির (Hooghly) বলাগড়ে। স্ত্রীকে বেধড়ক মারধরের পর গায়ে আগুন লাগিয়ে দিল সিভিক ভলান্টিয়ার। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার ও তাঁর মাকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার তাঁদের কোর্টে তোলা হবে বলে জানা যাচ্ছে।  



সূত্রের খবর, বলাগড় থানার চর কৃষ্ণবাটি পঞ্চায়েতের ছোলারডাঙা গ্রামের বাসিন্দার বাবলু বিশ্বাসের সঙ্গে বিয়ে হয় নদিয়া জেলার শান্তিপুর থানার অন্তর্গত লক্ষীনাথপুর গ্রামের মামনি বিশ্বাসের (২৯)। বাড়িতে তাঁদের ৬ বছরের একটা পুত্র সন্তানও রয়েছে। মামনির মায়ের দাবি ৭ বছর আগে বিয়ে হলেও বিয়ের পর থেকেই মেয়ের উপর পাশবিক নির্যাতন করত তাঁর স্বামী। যোগ দিত তাঁদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাতে কাজ থেকে ফেরার পর ফের স্ত্রীর সঙ্গে বচসা শুরু করে বাবলু। গায়ে হাতও তোলে। দীর্ঘক্ষণ ধরে ব্যাপক মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। মারের চোটে ঘরে মেঝেতেই লুচিয়ে পড়েন মামনি। সূত্রের খবর, স্ত্রী মারা গেছে এই ভেবে প্রমান লোপাটের চেষ্টায় বাড়ির উঠনে থাকা কুয়োর পারে গায়ে তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়

এদিকে চিৎকার চেঁচামেচির আওয়াজ ততক্ষণে পৌঁছে গিয়েছে প্রতিবেশীদের কানে। তবে শুরুতে সাহস করে কেউ এগিয়ে আসেননি। কিন্তু, বাড়িতে আগুন জ্বলছে দেখে প্রতিবেশীরাই মামনির বাপের বাড়িতে খবর দেয়। এরপরই মামমির বাড়ির লোকেরা ছুটে আসেন মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে। রাস্তাতেই দেখা যায় জামাইয়ের সঙ্গে। কিন্তু, মেয়ের কথা জিজ্ঞাস করাতে শুরুতে তিনি মুখ খুলতে চাননি। ঘটনা প্রসঙ্গে, মৃতের দাদা তারক বিশ্বাস বলনে, “ওদের পাশের বাড়ি থেকে ফোন করে বলা হয় বাড়িতে চরম অশান্তি চলছে। আমরা শান্তিপুর থেকে বোন কে ফোন করে না পেলে রাত ১ টার সময় বলাগড়়ে চলে আসি। রাস্তাতেই দেখা হয় জামাই এর সঙ্গে। সে বলে কিছু হয়নি। পুলিশ আসে। পুলিশের সাহায্যেই আমার বোনের দেহ কালনা হাসপাতালে নিয়ে যাই।” মৃতার বৌদি লক্ষী বিশ্বাস জানান, “ওদের বাড়িতে এসে জানতে পারি খাওয়া নিয়ে ঝামেলা হয়েছে। বাবলু মামানিকে চর মারে। তখনও মারা যায়নি দেখে গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।” ইতিমধ্যেই মামনির দেহ ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে। 
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours