গত সেপ্টেম্বরের শেষে পুজোর আগে আগে এই মিউজিয়ামের উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


শাসক-বিরোধী সংঘাত চলছেই। বিধানসভায় (West Bengal Assembly) শীতকালীন অধিবেশনের শেষ দিনেও তার রেশ জিইয়ে রইল। আলিপুর সংশোধনাগার মিউজিয়াম। বুধবার বিধানসভার অধ্যক্ষ সকলকে সেই মিউজিয়াম দেখতে যাওয়ার আহ্বান জানালেও তাতে সাড়া দেননি বিরোধী শিবির। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য, বিষয়টি বিচারাধীন। তাই যাবেন না। পাল্টা ফিরহাদকে বলতে শোনা গেল, ‘ইগোর জন্যই বয়কট’। মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম শাসকদলের বিধায়কদের নিয়ে বুধবার হাজির হন সংশোধনাগারের মিউজিয়ামে। যদিও সেই উপস্থিতি তালিকায় বিধায়কদের সংখ্যা ছিল খুবই নগণ্য। বর্তমানে শাসকদলে যে সংখ্যক বিধায়ক রয়েছেন, সেই জায়গায় ৭০ থেকে ৭৫ জন বিধায়ককে এদিন যেতে দেখা যায় মিউজিয়ামে। যদিও বিধানসভার কর্মী, বিভিন্ন বিধায়কের আপ্ত সহায়ক মিলিয়ে ১৫০ জনের কাছাকাছি উপস্থিত ছিলেন এদিন।



তাঁরা মিউজিয়ামের প্রতিটি জায়গা ঘুরে দেখেন। তবে উল্লেখযোগ্য বিষয়, প্রধান বিরোধী দল বিজেপির কোনও বিধায়ক ‘নীতিগত’ কারণে উপস্থিত না থাকলেও, উপস্থিত ছিলেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। তাঁকে সঙ্গে নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম মিউজিয়াম দেখেন। নওশাদ এদিন দীর্ঘক্ষণ অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই ছিলেন। তাঁরা একসঙ্গেই বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখেন।

নওশাদ পরে বলেন, “আমার মতে যেখানে রাজনীতি নেই, সেখানে প্রত্যেকের আসা উচিত ছিল। এখানে বিপ্লবীদের আত্মত্যাগের ছবি মূর্ত। সেটাই আমরা দেখতে এসেছি। আমরা যেখানে রাজ্যে গঙ্গার ভাঙন নিয়ে ঐক্যমত্যভাবে দিল্লিতে যাচ্ছি, সেখানে এই ধরনের জায়গায় কেন বিজেপি আসছে না তা বলতে পারব না।”

গত সেপ্টেম্বরের শেষে পুজোর আগে আগে এই মিউজিয়ামের উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আলিপুর জেলকে মিউজিয়ামে পরিণত করে তৃণমূল সরকার। সেই মিউজিয়ামে এখন সাধারণ মানুষেরও এখন প্রবেশাধিকার রয়েছে।

সেই মিউজিয়ামে বিধায়কদের যাওয়া নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী সোমবারই বলেন, “স্পিকার বিভিন্নক্ষেত্রে বিচারাধীন বিষয় বলে আমাদের বলতে দেন না। আর ওই জায়গা নিয়েও মামলা চলছে। ফলে বিচারাধীন বিষয় যেখানে রয়েছে, সেখানে আমরা যেতে পারি না।” বুধবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ বিরোধী দলের পরিষদীয় নেতা মনোজ টিগ্গা এ নিয়ে কথা বলেন। ফিরহাদ হাকিমকে এ নিয়ে দলের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন মনোজ।

অন্যদিকে বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, “জেল মিউজিয়াম বিচারাধীন বিষয়ের থেকেও বড় হচ্ছে এই মুহূর্তে রাজ্যে চোর ধরো জেল ভরো। ফলে আপাতত আমরা চোরদের ধরি, জেলে ভরি। তারপর মিউজিয়াম নিয়ে ভাবা যাবে।”

যদিও ফিরহাদ হাকিম বলেন, “ইগোর জন্যই সৌজন্য দেখাতে পারছেন না। ওনাদের নেতার ইগোর জন্য বিধায়কদেরও মুখ বন্ধ করে থাকতে হচ্ছে। আমাদের নিমন্ত্রণগুলো নিতে পারছে না। সৌজন্য দেখানোটা কাজ, আমি সেটা দেখাব। কিন্তু আপনি রক্ষা করতে পারবেন কি না সেটার আপনার দৈন্যতা।” এ নিয়ে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আলিপুরে একটা সংগ্রহশালা হয়েছে, এটা বিচার বিভাগের আওতাভূক্ত আছে বলে আমার জানা নেই।”
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours