গত ৫ অক্টোবর দশমীর রাত থেকেই কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি অয়নের। দেহের খোঁজ পেতে কেন এত দেরি হল, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।

কেষ্টপুর-কাণ্ডের ছায়া এবার হরিদেবপুরে। ৬ অক্টোবর সকালে দেহ উদ্ধার হলেও মৃত অয়ন মণ্ডলের বাড়িতে খবর পৌঁছতে কেন এত সময় লাগল? পুলিশের ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। প্রথম থেকেই পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে অয়নের পরিবার। পরে পুলিশ আধিকারিকেরাও কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন যে, তদন্তে বেশি সময় লেগেছে। এমনকী থানায় অভিযোগ নিতেও অনেক বেশি সময় লেগে গিয়েছে বলে দাবি মৃতের পরিবারের।



দশমীর দিন রাত ৩ টের পর থেকে অয়নের সঙ্গে আর কোনও যোগাযোগ করা যায়নি। পরের দিন সকালে বন্ধু ও আত্মীয়দের বাড়িতে খোঁজ খবর করা হয় পরিবারের তরফে। কোথাও কোনও খোঁজ না পাওয়া গেলে হরিদেবপুর থানার দ্বারস্থ হয় পরিবার। অভিযোগ, প্রথমে মিসিং ডায়েরি নিতে চায়নি পুলিশ। দীর্ঘ টালবাহানার পরে অভিযোগ নেয়। কিন্তু খোঁজার কোনও চেষ্টা হয়নি বলে অভিযোগ। অনেক বলার পর অয়নের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন খুঁজে বের করে পুলিশ। জানা যায়, নেপালগঞ্জে শেষ অবস্থান ছিল মোবাইলের। পরিবারের দাবি, অয়নের বন্ধুদেরই বলা হয়, ওই জায়গায় গিয়ে খোঁজ খবর করতে।

জানা গিয়েছে, মগরাহাট থানার পুলিশ ৬ তারিখ সকাল ৯ টা নাগাদ অয়নের দেহ মাগুরপুকুর পুলিশ ক্যাম্পের পাশ থেকে উদ্ধার করে। নিয়ম মেনে মগরাহাট থানার পুলিশ ওই দিন সকাল ১০ টার মধ্যে অপরিচিত যুবকের দেহ হিসেবে অস্বাভাবিক মৃত্যু দেখিয়ে ময়নাতদন্তে পাঠায়। দুপুর ১২ টার মধ্যে সব জায়গায় ইমেইল করে ছবি দিয়ে পাঠানো হয়। সেই ইমেল রাজ্য পুলিশের সদর দফতর ভবানীভবনের মিসিং স্কোয়াডের পাশাপাশি লালবাজার বা আশপাশের থানাগুলিতেও পাঠানো হয়। প্রশ্ন উঠছে, হরিদেবপুর থানায় ইমেল যাওয়া সত্ত্বেও কেন তা খোলা হল না।

৭ অক্টোবর, শুক্রবার দুপুরে অয়নের পরিবার সোজা লালবাজার পৌঁছে যায়। এরপর ইমেল খোলে হরিদেবপুর থানা। অভিযোগ, তখনই পুলিশ সবটা বুঝে যায়, তা সত্ত্বেও পরিবারকে তখনও জানানো হয়নি। পরে শুক্রবার বিকেলে অয়নের দেহ উদ্ধারের কথা জানানো হয় পরিবারকে।

গাফিলতির কথা সরাসরি স্বীকার করেনি পুলিশ। তবে, আরও একটু খোঁজাখুঁজি করলে যে আরও আগে অয়নের দেহ মগরাহাট থেকে উদ্ধার হওয়ার কথা জানা যেত, সেটা শুক্রবার রাতেই স্বীকার করেন ডিসি এসডব্লিউডি সৌম্য রায়।

এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় মোট ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন অয়নের বান্ধবীর বাবা, মা, ভাই, ভাইয়ের বন্ধুরাও।


উল্লেখ্য, কয়েক দিন আগে কেষ্টপুরে জোড়া খুনের ঘটনাতেও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। মর্গে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে দেহ পড়ে থাকা সত্ত্বেও পরিবার কেন জানতে পারল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। সেই ঘটনায় খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও পুলিশকে ভর্ৎসনা করেছিলেন।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours