নেপথ্যে রয়েছে বড় চক্র। সিবিআইয়ের হাতে ধৃত মিডলম্যান প্রদীপ সিং সেই চক্রেরই একটি অংশ। বৃহস্পতিবার আদালতে এমনটাই দাবি করেছেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। পাশাপাশি তিনি তাঁর সওয়ালে বলেন, 'আরও বড় নাম খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। কাদের কাছে টাকা পৌঁছেছিল, দেখতে হবে। এই প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠছে, চাকরি বিক্রির টাকা কি মিডলম্যানদের মাধ্যমে প্রভাবশালীদের কাছে পৌঁছেছিল?'
এসএসসি দুর্নীতিতে নানা ছবি দেখা গিয়েছে এই রাজ্যে। নিয়োগ-দুর্নীতিতে আর্থিক কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমে প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছে ইডি। পাশাপাশি, পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দুটি আলাদা আলাদা ফ্ল্যাটে তল্লাশি করে ইডি উদ্ধার করেছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা। সঙ্গে উদ্ধার হয়েছিল বহু সোনা এবং নথি। খোঁজ মিলেছে ফিক্সড ডিপোজিট, স্থাবর সম্পত্তির। অর্পিতাও ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছে। তারপরে তদন্ত অনেকটাই এগিয়েছে ইডির। আদালতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট সরাসরি দাবি করেছে এত টাকা, সোনা ও সম্পত্তি এসেছে স্কুলের চাকরি বিক্রি করেই।
এর ফলে নানা প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে। কী কী প্রশ্ন?
এই টাকা কি এসেছিল মিডলম্যানদের মাধ্যমে?
তারপর ধাপে ধাপে টাকা পৌঁছেছিল কর্তাব্যক্তিদের কাছে?
এই প্রশ্ন আরও জোরাল হয়েছে, বৃহস্পতিবার আদালতে সিবিআইয়ের সওয়ালে। SSC কাণ্ডে ধৃত মিডলম্যান, প্রদীপ সিংয়ের জামিনের বিরোধিতায়, সিবিআইয়ের আইনজীবী এদিন আদালতে সওয়াল করেন। তিনি বলেন, 'এটা বড় চক্র। প্রদীপ সিং এর একটা অংশ। অন্যরা কারা, খুঁজে বার করতে হবে। কাদের কাছে টাকা পৌঁছেছিল, দেখতে হবে। আরও বড় নাম খুঁজে পাওয়া গেছে। তাঁদের বিরুদ্ধে প্রমাণও রয়েছে।' সওয়াল-জবাব শুনে ধৃত প্রদীপ সিংকে আরও সাতদিনের সিবিআই হেফাজতে পাঠায় আদালত। কিন্তু, সিবিআইয়ের আইনজীবী, আদালতে যে বড় নামের কথা বলছেন, তাঁরা কারা? কোন প্রভাবশালী? CBI সূত্রে আগেই দাবি করা হয়, প্রসন্নর ওপরে মূলত দায়িত্ব ছিল, উত্তর ২৪ পরগনার অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা প্রস্তুত করার। সেই সুপারিশ প্রদীপ সিং মারফত পৌঁছত SSC’র প্রাক্তন উপদেষ্টা, সিবিআইয়ের হাতে ধৃত শান্তিপ্রসাদ সিন্হার কাছে।
আরও অভিযোগ:
এর আগে সিবিআইয়ের আইনজীবী আদালতে দাবি করেছিলেন, শান্তিপ্রসাদ সিন্হার মোবাইল ফোনে প্রদীপ সিংয়ের নাম ছোটু বলে সেভ করা ছিল। দু’জনের হোয়াট্যসঅ্যাপ চ্যাটও পাওয়া গিয়েছে। নাকতলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির কাছে একটি কম্পিউটার সেট আপ ছিল। সেটা চালাতেন প্রদীপ সিং। সেখান থেকে যোগ্য নয় এমন প্রার্থীদের নামের তালিকা ও ফোন নম্বর পাওয়া যায়। সিবিআইয়ের এসব দাবির ভিত্তিতেই, বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে, এই অভিযুক্তরাই কি তাহলে দুর্নীতির পিরামিডের অংশ?
উত্তরের খোঁজে তদন্ত:
সিবিআইয়ের দাবি অনুযায়ী, ধৃত মিডলম্যান প্রসন্নকুমার রায় এবং প্রদীপ সিংহ ছিলেন এসএসসি'র প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিন্হার ঘনিষ্ঠ। শান্তিপ্রসাদ সিন্হা ছিলেন এসএসসি'র উপদেষ্টা কমিটির আহ্বায়ক। আর তাঁকে এই পদে বসিয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এরা প্রত্যেকেই কেন্দ্রীয় এজেন্সির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। আগামী দিনে কি এদের জেরা করেই টাকা লেনদেনের বিষয়ে বড়সড় কোনও তথ্য পাবে ইডি কিংবা সিবিআই?
Post A Comment:
0 comments so far,add yours