রবিবার রাতে ওই ছাত্রী বাড়িতে আমচকাই অসুস্থ হয়ে পড়ে। ফাঁকা ঘরে তাঁকে পড়ে থাকতে দেখেন পরিবারের সদস্যরা। তাঁর মুখ থেকে গ্যাজলা বের হচ্ছিল।

উচ্চ মাধ্য়মিক পাশ করার পর ভর্তি হয়েছিলেন বেঙ্গালুরুর একটি বেসরকারি নার্সিং কলেজে। কোর্স ফিজ় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা। ভর্তির সময়ে এক লক্ষ টাকা দিয়েছিল ছাত্রীর পরিবার। বাকি টাকা জোগাড় করার প্রয়োজন ছিল। সে কারণে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু কোনওভাবেই ব্যাঙ্কের তরফে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড জোগাড় করতে পারেনি ছাত্রীর পরিবার। এমনই দাবি পরিবারের। অবশেষে বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন ওই ছাত্রী। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের ভেয়েরবাজার এলাকায়। ওই ছাত্রী আশঙ্কাজনক অবস্থায় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পরিবারের দাবি, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড না পাওয়ার জন্যই আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন ছাত্রী।

জয়দেব দোলুই ও রিঙ্কুর একমাত্র মেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করার পর ব্যাঙ্গালোরে একটি নার্সিং কলেজে ভর্তি হয়। জানা গিয়েছে, নার্সিং কলেজে ভর্তি হওয়ার সময় কলেজ কর্তৃপক্ষ থেকে জানানো হয় তার পড়া শেষ করতে খরচ পড়বে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা।

ভর্তির সময়ে পুঁজি ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় এক লক্ষ টাকা জোগাড় করা সম্ভব হয়। এক লক্ষ টাকা জমা করেই ক্লাস শুরু করে ছাত্রী। স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডে আবেদন করে ছাত্রী। কিন্তু বারবার আবেদন করা সত্ত্বেও স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড পায়নি ছাত্রী।

পরিবারের অভিযোগ, সমস্ত প্রয়োজনীয় নথি জমা দেওয়া হয়েছিল। একাধিকবার ব্যাঙ্কে ঘুরেও ক্রেডিট কার্ড পাননি ছাত্রী। তাতে মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেছিলেন ছাত্রী। পরিবারের সদস্যরা সেকথা জানতেন। মেয়েকে চোখে চোখে রাখতেন তাঁরা।

ছাত্রীর মা রিঙ্কু দোলই বলেন,”নবান্ন থেকে শুরু করে বিকাশ ভবন একাধিকবার আমার মেয়েটা স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের জন্য গিয়েছে। এমনকি ব্যাঙ্কে গিয়েছি, কিন্তু ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ফিরিয়ে দিয়েছে।”

দ্বিতীয় সেমিস্টারের আগে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা কলেজে জমা দেওয়ার ছিল। ছাত্রী আতঙ্কে ভুগছিলেন, যদি না টাকা জমা দিতে পারে, তাহলে পরীক্ষা দিতে পারবেন না।

রবিবার রাতে ওই ছাত্রী বাড়িতে আমচকাই অসুস্থ হয়ে পড়ে। ফাঁকা ঘরে তাঁকে পড়ে থাকতে দেখেন পরিবারের সদস্যরা। তাঁর মুখ থেকে গ্যাজলা বের হচ্ছিল। তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে চন্দ্রকোণা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হওয়ায় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওই ছাত্রী বিষ খেয়েছে। তাঁর শারীরিক অবস্থা এখনও ভাল নয়। এলাকার মানুষের অভিযোগ, যেখানে সরকার স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড চালু করেছে, সেখানে কেন ছাত্রছাত্রীরা তা দ্রুত পাবে না?
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours