৩০ বছর ধরে সকলের চোখের সামনেই লুকিয়ে ছিল হরিয়ানার এক 'মোস্ট ওয়ান্টেড' অপরাধী। ২৮টি কম বাজেটের চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছে। এমনকি বিয়ে করে নতুন সংসারও পেতেছিল।


হরিয়ানার পুলিশ তাকে তিন দশক ধরে খুঁজছিল। সেই রাজ্যে পুলিশের খাতায় তার নাম ছিল ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ অপরাধীদের তালিকায়। তার বিরুদ্ধে ছিল খুন এবং ডাকাতির মতো ভয়ঙ্কর অভিযোগ। ৩০ বছর ধরে একেবারে চোখের সামনে থেকেও লুকিয়ে ছিল সে। কতটা চোখের সামনে? ৩০ বছরে মোট ২৮ টি চলচ্চিত্রে অভিনয়ও করেছিল সে! এমনকি বিয়ে-থা করে সম্পূর্ণ নতুন জীবন শুরু করেছিল সে। তবে, শেষ রক্ষা হয়নি। ৩০ বছর নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দিলেও, শেষ পর্যন্ত তাকে ধরে ফেলেছিল হরিয়ানা পুলিশ।

নাম তার ওম প্রকাশ ওরফে পাশা। বর্তমানে বয়স ৬৫। সে একজন অবসরপ্রাপ্ত ভারতীয় সেনা কর্মী। হরিয়ানা পুলিশের খাতায় ‘ওয়ান্টেড’ হওয়ার পরই সে পালিয়ে গিয়েছিল প্রতিবেশী রাজ্য উত্তর প্রদেশে। সেখানে গিয়েই সে প্রথমে ভুয়ো পরিচয়ে সরকারি নথিপত্র আদায় করেছিল। তারপর রাজকুমারী নামে এক স্থানীয় মহিলাকে বিয়ে করে। এমনকি, তাদের তিন সন্তানও জন্মায়। বড় ছেলের বয়স ২১ বছর। গত ৩০ বছর ধরে একেবারে নতুন করে জীবন শুরু করেছিল পাশা। তাকে দেখে দুর্ধর্ষ ডাকাত বলে চেনে কে? ২৮ টি কম বাজেটের চলচ্চিত্রে পার্শ্ব ভূমিকায় অভিনয় করেছিল সে। সেই সঙ্গে এক ধর্মীয় গায়ক দলের সঙ্গী হয়ে ট্রাক চালিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরেওছিল।

কিন্তু অতীতকে কি একেবারে মুছে ফেলা যায়? গত সপ্তাহে তার ভাগ্যের দৌড় ফুরোয়। হরিয়ানা পুলিশের কর্তারা গাজিয়াবাদ শহরের তার বস্তি বাড়ি থেকে ওম প্রকাশকে গ্রেফতার করেছে। পাশাকে হেফাজতে নিয়েছে হরিয়ানা পুলিশ। তাদের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের এক সাব-ইন্সপেক্টর জানিয়েছেন, ১৯৯২ সালের এক ডাকাতি ও হত্যাকাণ্ডের জন্য সে অভিযুক্ত। সে এবং আরেক ব্যক্তি ডাকাতির উদ্দেশ্যে এক ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাত করেছিল বলে অভিযোগ। তবে ডাকাতির প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হয়েছিল। দ্বিতীয় ব্যক্তি আগেই ধরা পড়েছিলেন। সাত-আট বছর জেল খাটার পর জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন। ধরা পড়ার পর, পাশার দাবি, সে হত্যা করেনি। তার সহযোগীই ওই হত্যার জন্য দায়ী।

এদিকে পাশা গ্রেফতার হওয়ার পর এখনও সেই ধাক্কা সামলে উঠতে পারছে না তার পরিবার। পাশার অতীত সম্পর্কে তাদের কোনও ধারণা ছিল না বলেই দাবি করেছেন তার স্ত্রী রাজকুমারী কিংবা ছেলে-মেয়েদেরা। তাই এখনও তারা উদ্ভূত পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। তবে রাজকুমারী পাশার বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন ১৯৯৭ সালে তাদের বিয়ে হয়েছিল। সে জানতই না যে পাশার আগেই একবার বিয়ে হয়েছিল এবং হরিয়ানায় তার আরেকটি পরিবার আছে।




Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours