।।সৌম্য বাগচী।।

করোনার পাশপাশি এবার দেশে চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু। সেটা মাথায় রেখেই কেন্দ্রীয় সরকার ডাকে শনিবার ১১টি রাজ্যে সেরোটাইপ-২ ডেঙ্গু রোগের উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ নিয়ে একটি উচ্চ-স্তরের বৈঠক হয়েছে। এই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবা। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রতিনিধিরা। ভার্চুয়াল এই বৈঠকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কোভিড-১৯ ব্যবস্থাপনা এবং প্রতিক্রিয়া কৌশল সম্পর্কেও আলোচনা হয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের একটি বিবৃতি অনুসারে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব ১১টি রাজ্যে সেরোটাইপ-২ ডেঙ্গুর উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ বৈঠকে তুলে ধরেছেন। ডেঙ্গুর এই প্রজাতিটি এই রোগের অন্যান্য রূপের চেয়ে অনেক বেশি সংক্রামক ও জটিল।

রাজীব গৌবা রাজ্যগুলিকে পরামর্শ দিয়েছেন, রোগীদের প্রাথমিক সনাক্তকরণ,, জ্বর হেল্পলাইন চালু করার মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করার। পাশাপাশি তিনি পরীক্ষার কিট, লার্ভিসাইড এবং ওষুধের পর্যাপ্ত মজুদ রাখতেও বলেছেন। তিনি রেপিড রেসপন্স টিম নিয়োগ করে দ্রুত জ্বর জরিপ, কন্টাক্ট ট্রেসিং, ভেক্টর নিয়ন্ত্রণের মতো জনস্বাস্থ্যের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলেছেন। পাশপাশি অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে রক্ত ও রক্তের উপাদান, বিশেষ করে প্লেটলেটের পর্যাপ্ত মজুদ বজায় রাখার জন্য ব্লাড ব্যাংককেও সতর্ক করেছেন তিনি। পাশপাশি তিনি রাজ্যগুলিকে অনুরোধ করেছেন, হেল্পলাইনের মাধ্যমে ভেক্টর নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি, বাড়িতে মশার উত্‍স হ্রাস এবং ডেঙ্গুর লক্ষণ সম্পর্কিত তথ্য, শিক্ষা ও যোগাযোগ প্রচার চালিয়ে মানুষকে সতর্ক করে তোলার বিষয়ে।

যে রাজ্যগুলি সেরোটাইপ-২ ডেঙ্গু রোগীদের রিপোর্ট করছে সেগুলি হল- অন্ধ্রপ্রদেশ, গুজরাট, কর্ণাটক, কেরল, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা, রাজস্থান, তামিলনাড়ু এবং তেলেঙ্গানা। উল্লেখ্য, কোভিড-১৯ ব্যবস্থাপনায় স্বাস্থ্যসচিব ১৫ টি রাজ্যকে প্রয়োজনীয় সতর্কতা এবং কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। স্বাস্থ্য সচিব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রতিনিধিদের বলেছেন, ১৫টি রাজ্যের ৭০টি জেলা উদ্বেগের কারণ। এর মধ্যে ৩৪টি জেলায় পজিটিভিটি ১০ শতাংশের বেশি এবং ৩৬ টি জেলার ক্ষেত্রে পজিটিভিটি ৫-১০ শতাংশের মধ্যে রয়েছে। আসন্ন উত্‍সব মরসুমের কথা মাথা রেখে রাজ্যগুলিকে প্রয়োজনীয় সতর্কতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে জনবহুল স্থানে জনসমাগম না হওয়ার বিষয়েও।

‍স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মল, স্থানীয় বাজার এবং উপাসনালয় সম্পর্কিত যে নির্দেশিকাগুলি রয়েছে, তা কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে। রাজ্যগুলিকে কোভিড উপযুক্ত আচরণ (সিএবি) এবং কোভিড নিরাপদ উত্‍সবের প্রচারের জন্য কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে। প্রতিনিয়ত সমস্ত জেলা প্রাথমিক সতর্কতা সংকেত সনাক্ত এবং বিধিনিষেধ আরোপের পাশাপাশি কোভিড আচরণ ঠিক ভাবে পালন হচ্ছে কিনা সে দিকেও নজর রাখতে হবে। কেন্দ্র রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে শিশুদের মধ্যে সংক্রমণের বিস্তার পর্যবেক্ষণ করতে বলেছে। পাশপাশি জানানো হয়েছে, অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে কয়েকটি রাজ্যে স্কুল খোলা হয়েছে এবং জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য পর্যাপ্ত নমুনা সহ মিউটেশনগুলিও পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে।

শনিবারের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ, ডা. ভি কে পল, সদস্য (স্বাস্থ্য), নীতি আয়োগ; রাজ্যের মুখ্য সচিব, অতিরিক্ত মুখ্য সচিব (স্বাস্থ্য), প্রধান সচিব (স্বাস্থ্য), পৌর কমিশনার, জেলা কালেক্টর এবং রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours