করোনার বিধিনিষেধ চালু হওয়া থেকেই অভাবের শিকার 'দিন আনা দিন খাওয়া' মানুষজন। শুরুর দিকের দিনগুলো কোনওভাবে চললেও এখন আর চালানো সম্ভব হচ্ছে না। দুঃসময় যেন আর কাটতেই চাইছে না। অবশেষে একপ্রকার বাধ্য হয়ে চরম পরিণতির পথ বেছে নিচ্ছেন অনেকেই। এমন ঘটনাই ফের ঘটলো শহর কলকাতায়। সহকর্মীদের বেশ কিছুদিন ধরেই জানিয়েছিলেন সংসারের অভাবের কথা। শেষমেষ এদিন বাসের মধ্যে থেকেই উদ্ধার হল চালকের মৃতদেহ। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান আত্মহত্যাই করেছেন ওই ব্যক্তি।


বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকুরিয়া-হাওড়া রুটের ৩৭ নম্বর বাসের মধ্যে এক চালকের দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম রঞ্জিত দাস বয়স আনুমানিক ৪৬ বছর, গড়িয়ার বাসিন্দা। জানা গিয়েছে, অবিবাহিত রঞ্জিত ছিলেন দাদা বৌদির সংসারের আসল রোজগেরে মানুষ। মাঝে মধ্যেই সহকর্মীদের সংসারের অভাবের কথা জানাতেই ওই ব্যক্তি। ২০২১ নির্বাচনের সময় বাস নিয়েছিল কমিশন। সেই টাকাও বাকি ছিল তার। এদিন সকালে তাঁর সহকর্মীরাই প্রথম রঞ্জিতের দেহ দেখতে পান। তাঁরাই খবর দেন পুলিশে। পুলিশ দেহটি ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট না হলেও পুলিশের অনুমান ওই ব্যক্তি আত্মহত্যাই করেছেন।

সহকর্মীদের দাবি, আর্থিক অনটনেই আত্মহত্যা করেছেন তিনি। অন্যদিকে রঞ্জিতের পরিবারের দাবি, বুধবার রাতে কাজ শেষে বাড়ি ফেরেননি রঞ্জিত। সকালে তার সহকর্মীরাই বাড়িতে তার মৃত্যুর খবর দেয়। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহা বলেন, "লকডাউন বহু মানুষের রুজিরুটি কেড়ে নিয়েছে। দিন আনা দিন খাওয়ার মানুষের পক্ষে সংসার চালানো কঠিন হয়ে উঠেছে। এই ব্যক্তির আত্মহত্যার কারণ আসলে কী, তা অনুসন্ধান করা হবে। আদৌ আত্মহত্যা না অন্য কোনও ঘটনা, তাও খতিয়ে দেখতে হবে। তবে অস্বীকারের জায়গা নেই যে দীর্ঘদিন বাস না চলায় এই পেশার মানুষদের অভাব চরমে।"

বিধি নিষেধের বেড়াজাল শিথিল হলেও রাস্তায় বাস নামাতে চাইছেন না তাঁরা। জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধিতে বাস ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে লাগাতর আন্দোলনে রয়েছেন বাস মালিকরা। এদিকে, কাজ না পেয়ে দুর্বিষহ অবস্থা বাস চালক ও কর্মচারীদের। এই পরিস্থিতে এক বাস চালকের আত্মহত্যার ঘটনা ফের সেই চিত্রটাই তুলে ধরলো।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours