নিজের জন্মদিনের দিনটা বন্ধুদের সঙ্গেই কাটাবে ভেবেছিল। সেই মত বন্ধুর বাড়িতে যায় যুবক। সেখানেই রাতভর ধরে চলে মদ্যপান। এরপরই অসুস্থ হয়ে পড়ে ওই যুবক। হাসপাতালে নিয়ে গেলে সে মারা গিয়েছে বলে জানান চিকিত্‍সকরা। পরিবারের তরফে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু হয় বন্ধুর বিরুদ্ধে। পুলিশ মৃত যুবকের দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে বিষক্রিয়াতে। আটক করা হয়েছে মৃত যুবকের বন্ধুকে।


ঘটনাটি গলফগ্রিনের। জানা গিয়েছে, মৃত যুবক রিক্তেশ সোনারপুরের বাসিন্দা। গত ১৫ ই জুলাই তার জন্মদিন ছিল। জন্মদিন উদযাপনের জন্য বাঘাযতীনের বাসিন্দা বন্ধু কৌশিক মন্ডলকে ফোন করে সে। এরপর সেখানেই চলে যায় রিক্তেশ। প্রায় সারারাত ধরেই চলে মদ্যপান। সেখানেই রিক্তেশ অসুস্থ হয়ে পড়লে কৌশিকই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে যেতেই চিকিত্‍সকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। রিক্তেশের মৃত্যুর খবর দেওয়া হয় তার পরিবারের লোকজনকে। তারা তত্‍ক্ষণাত্‍ ছুটে যান হাসপাতালে। ছেলের মৃত্যুর শোকে ভেঙে পড়েন রিক্তেশের মা।

মৃত যুবকের পরিবারের লোকজনই খবর দেন পুলিশে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান বিষক্রিয়ায় ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তবে রিক্তেশের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। রিপোর্টে তার পাকস্থলীতে প্রচুর পরিমাণে অ্যালকোহল পাওয়া গিয়েছে। অন্যদিকে, কৌশিক ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও দায়ের করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে কৌশিককে গ্রেফতারও করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত যুবকের বক্তব্যে বেশ কিছু অসঙ্গতি দেখা দিয়েছে। প্রথমত, যেখানে পার্টি হয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে, সেখানে পার্টি হয়নি। আটক করার পর থেকেই কৌশিক পুলিশকে জানিয়েছিল, তাঁরা মদ্যপান করেনি। অথচ মৃতের পাকস্থলীতে মিলেছে অ্যালকোহলের উপস্থিতি। অন্যদিকে, রিক্তেশের বাড়ির লোকের অভিযোগ, যখন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল তখন নিয়ে যাওয়া হয়নি।

ধৃতের স্ত্রী জানান, "রিক্তেশ ৮ টা নাগাদ বাড়িতে আসেন। তার আগে কিছু খেয়েছে কিনা তা জানিনা। এখানে কেউ মদ খায়নি। আমাদের পরিবারের কেউ মদ খান না, আমরা বাড়িতে তার অনুমতিও দিই না।" অন্যদিকে কৌশিক মা বলেন, "অনেকক্ষণ গল্প করার পর শুতে বেশ রাত হয়। সকালে উঠে দেখি ওর মুখে থেকে গ্যাজলা বের হচ্ছে। করোনার সময় কোথায় নিয়ে যাব বুঝতে পারছিলাম না। ছেলেটার পরিবারও নেই কাছে। অ্যাম্বুলেন্স, ডাক্তারকে ফোন করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা আসতে আসতে অনেকটা দেরি হয়ে যায়। বারবার রিক্তেশের মাকে ফোন করেও লাভ হয়নি, কেউ ফোন ধরেননি।"
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours