প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাতীর উদ্দেশ্যে বলেছে করোনায় অনেকে নিজের পরিজনদের হারিয়েছেন। সেই পরিবারকে সমবেদনা। গত ১০০ বছরে করোনা সবচেয়ে বড় মহামারী। আধুনিক বিশ্বে এরকম মহামারী কেউ দেখেনি। দেশ একসঙ্গে করোনার বিরুদ্ধে লড়ছে। কোভিড হাসপাতাল থেকে টেস্টিং ল্যাব তৈরি, নতুন স্বাস্থ্য পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে। ভারতের ইতিহাসে এত বেশি মেডিক্যাল অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়নি। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করেছে কেন্দ্র। ১০০ শতাংশ তরল অক্সিজেন তৈরি করার চেষ্টা করা হয়েছে। জরুরি ওষুধ তৈরি কয়েকগুণ বাড়ানো হয়েছে। করোনা রুখতে কোভিড প্রোটোকল মেনে চলতে হবে। 

মোদি বলেছেন,‘ভ্যাকসিন হল আমাদের সুরক্ষা কবচ। সারা বিশ্বে যতটা পরিমাণ ভ্যাকসিন দরকার, ‘তুলনায় অনেক কম ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী সংস্থা। আগে বিদেশ থেকে ভ্যাকসিন বহু সময় লেগে যেত।আগে পোলিও, স্মল পক্স, হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন পেতে বহু দেরী হয়েছে। ভারতে আগে ভ্যাকসিনেশন হত মাত্র ৬০ শতাংশের। ১০০ শতাংশ টিকাকরণে ৪০ বছর লেগে যায়।


তিনি বলেছেন,‘মিশন ইন্দ্রধনুষের মাধ্যমে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় টিকাকরণ করা যাবে। আমরা মিশন নিয়ে কাজ করেছি। মাত্র ৫-৬ সালে টিকাকরণে ৬০ শতাংশ থেকে ৯০ শতাংশ করা হয়েছে। শিশু, দরিদ্রদের নিয়ে চিন্তা ছিল, যাঁদের টিকাকরণ হতই না। ঠিক এই সময়েই করোনা মহামারীর আকারে এল।


তিনি বলেছেন, শিশুদের জন্য দুটি ডোজের ভ্যাকসিন ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে। এখন ন্যাসাল ভ্যাকসিন দেওয়ার পরীক্ষা শুরু হয়েছে। ভ্যাকসিন তৈরি হওয়ার পরেও বিশ্বের কম দেশে টিকাকরণ শুরু হয়।বেশিরভাগ সমৃদ্ধ দেশে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়। ডব্লুএইচও-র নির্দেশ অনুসারে টিকাককণ শুরু হয়েছে। টিকাকরণের জন্য কেন্দ্র বিভিন্ন রাজ্যের সঙ্গে বৈঠক করেছে। করোনায় যাঁদের বেশি আশঙ্কা রয়েছে, তাঁদেরকেই আগে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। সেইজন্যই স্বাস্থ্যকর্মীদের আগে টিকাকরণ হয়েছে।দেশে যখন করোনা সংক্রমণ কমছে, তখন বহু প্রশ্ন এসেছে বিভিন্ন জায়গা থেকে।কেন রাজ্যে লকডাউন হচ্ছে না, এই প্রশ্নও এসেছিল কেন্দ্রের কাছে।


প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার তখন কোভিড গাইডলাইন তৈরি করে দেয় রাজ্যের কাছে। স্থানীয় স্তরে লকডাউনের জন্য গাইডলাইন দেওয়া হয়। সবার জন্য টিকাকরণের দিকে এগোচ্ছিল ভারত। এর মধ্যেই কিছু রাজ্য জানায় ভ্যাকসিনের দামে বিকেন্দ্রিকরণ করা হোক। কিছু রাজ্য জানায় বয়স্কদের ভ্যাকসিন আগে দেওয়া হোক। এরকম প্রশ্ন আসে যে কেন আগে বয়স্কদের ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে ?রাজ্যের উৎসাহ দেখে নীতিতে বদল আনে কেন্দ্র। ১ মে থেকে রাজ্যগুলির অধীনে ২৫ শতাংশ কাজ হস্তান্তর করা হয়। বাস্তব কত কঠিন তখন রাজ্যগুলি জানতে পারে। টিকাকরণের কাজ রাজ্যকে দেওয়া হোক, প্রথমে এই আবেদন আসে।


প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘পরে রাজ্যগুলি তাদের ভাবনা পরিবর্তন করে। আজ রাজ্যগুলির কাছে টিকাকরণের যে ২৫ শতাংশ কাজ দেওয়া হয়েছিল। সেই কাজ এবার থেকে সামলাবে কেন্দ্র। ২১ জুন সোমবার থেকে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে সবাইকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন। কেন্দ্র ভ্যাকসিন কিনে রাজ্যগুলিকে দেবে। দরিদ্র, মধ্যবিত্ত, উচ্চবিত্ত সবাইকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।


 প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সদিচ্ছা সঠিক ছিল, তাই এক বছরের মধ্যে ভারতে দুটি ভ্যাকসিন তৈরি হয়েছে। বিশ্বে অন্যান্য দেশের থেকে পিছিয়ে নেই। ভারতে ২৩ কোটির বেশি টিকাকরণ হয়েছে। আমাদের প্রয়াস সফল হয়েছে, কারণ আমাদের বিশ্বাস ছিল। টিকাকরণের জন্য টাস্ক ফোর্স তৈরি করা হয়েছে।ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী সংস্থাকে সবরকম ভাবে সাহায্য করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার সবসময় ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী সংস্থার সঙ্গে ছিল। ৭টি সংস্থা বিভিন্ন ভ্যাকসিন তৈরি করছে। বিদেশ থেকে ভ্যাকসিন কেনার চেষ্টা করা হয়েছে।


প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, ‘তবে যে ব্যক্তি ফ্রি ভ্যাকসিন নিতে চান না, তাঁদের জন্য আলাদা ভাবনা। ভ্যাকসিনের ২৫ শতাংশ যাতে বেসরকারি হাসপাতাল পেতে পারে, ‘সেই ব্যবস্থাও জারি থাকবে।এক ডোজের জন্য সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা সার্ভিস চার্জ নিতে পারবে বেসরকারি হাসপাতালগুলি।


তিনি বলেছেন,‘ভারতে টিকাকরণের মাত্রা বিশ্বের অনেক দেশের থেকে অনেক বেশি। ২০২০ সালে করোনার জন্য যখন লকডাউন লাগু হয়েছিল। তখন প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণে অন্ন যোজনা চালু হয়েছিল। দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ও সেই প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনা লাগু থাকবে। মে-জুন থেকে দীপাবলি পর্যন্ত চালু থাকবে প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনা। কেউ খালি পেটে থাকবে না। দেশ থেকে করোনা চলে যায়নি, সাবধানে থাকুন, মানুন কোভিড প্রোটোকল।




Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours