একরত্তি মেয়েটি সেদিনও মায়ের হাত ধরে গিয়েছিল মন্দিরে। আগেও সে গিয়েছে একাধিকবার। কখনও কোলে চেপে, কখনও গুটি পায়ে। যখন মা মগ্ন ছিল পুজোয়, মেয়ে বিভোর খেলায়। মন্দিরের বাইরেটাতেই সে খেলছিল আপনখেলা। কিন্তু, মঙ্গলের রাতেই যে অমঙ্গলের অশনিসংকেত ছিল, কে-ই বা জানত! বিপদের আঁচ করলে, মা-ই কী আর মেয়েকে চোখের আড়াল করতেন! সব দুর্যোগের তো আর পূর্বাভাস থাকে না। সেদিন রাতেও এ ভাবেই অকস্মাত্‍‌ ঘটে যায় অঘটন। পুজো-পুষ্পাঞ্জলির ওইটুকু সময়ের মধ্যেই চার বছরের নিষ্পাপ শিশুটিকে তুলে নিয়ে যায় এক ভবঘুরে। সন্ধেরাতে মন্দিরের অদূরেই নিরিবিলিতে নিয়ে গিয়ে ফুলের মতো মেয়েটাকে ধর্ষণ করে সে। আবার ফরিয়েও দিয়ে যায় খেলার জায়গায়।

ততক্ষণে মন্দিরে পুজো সেরে, মেয়ের খোঁজে উদভ্রান্ত মা। এমন তো হয় না। মন্দিরের মধ্যেই কোথাও নিজের খেলার জায়গাটুকু করে নেয়। শেষপর্যন্ত মন্দির চত্বরেই মেয়েকে তিনি পান। অবিন্যস্ত। ছটফটে মেয়ে নিস্তেজ শুয়ে। দেখে খটকা লাগে। আরও কিছু অস্বভাবিকতাও লক্ষ করেন। তাই বাড়ি না ফেরে, আগে যান ডাক্তারের কাছে।

মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়েছে শুনে, মায়ের মাথায় যেন বাজ ভেঙে পড়ে। কোনও ক্রমে নিজেকে সামলে যান থানায়। পুলিশের কাছে লিখিত ভাবে মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন। মঙ্গলবার রাতে বহির দিল্লির এই ঘটনায় পুলিশ ওই মন্দির চত্বর থেকে এক ভবঘুরেকে গ্রেফতার করেছে। বৃহস্পতিবার এই গ্রেফতারির খবর দেয় পুলিশ।

পুলিশের দাবি, ওই ভবঘুরেই চারের শিশুকন্যাকে ধর্ষণ করেছে। অভিযুক্তের বয়সও খুব বেশি নয়। তাই সে নাবালক কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে পুলিশ অভিযুক্তের মেডিক্যাল টেস্ট করাতে দিয়েছে। এদিকে, যৌননিপীড়িত শিশুটিরও মেডিক্যাল রিপোর্টে ধর্ষণের অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। তার পরেই পুলিশ অভিযোগকে এফআইআর হিসেবে নিয়ে। পকসো আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় অভিযোগ রুজু হয়েছে।

অন্য দিকে, বছর বাহান্নর এক প্রৌঢ়ের যৌন লালসার শিকার ছ-বছর বয়সি এক বালিক। ঘটনাস্থল উত্তর দিল্লি। মঙ্গলবারের ঘটনা। একটি পার্কের সামনে বাচ্চা মেয়েটি খেলছিল। অভিযুক্ত তাকে খেলনার লোভ দেখিয়ে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। বাড়িতে ফিরে শিশুটি ঘটনার কথা তার পিসিকে জানায়। এর পর, লোকাল থানায় অভিযোগ জানিয়ে বাচ্চাটিকে নিয়ে হাসপাতালে যায় পরিবারের লোকেরা। গোপনাঙ্গে আঘাত থাকায়, এখনও হাসপাতালেই আছে বাচ্চাটি। তবে, অবস্থা স্থিতিশীলই রয়েছে। এই ঘটনায় ওই রাতেই পুলিশ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। নাবালিকাকে ধর্ষণের কারণে তার বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা হয়েছে। জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ওই এলাকারই। সে অবিবাহিত। ভাইয়ের সঙ্গে থাকে।

একটি বেসরকারি সংস্থার সমীক্ষা বলছে, দিল্লিতে ২০১৯ সালে যতগুলো ধর্ষণের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে, তার ৩১ শতাংশ ক্ষেত্রে শিকার শিশুরা। রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বছর দিল্লিতে ৩,১৩৭টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। তার মধ্যে ৯৬৯টি পকসো আইনে মামলা হয়েছে। ৯৬ শতাংশ ক্ষেত্রে অভিযুক্তরা শিশুটির পরিচিত।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours