অনলাইন নিউজ পোর্টাল-সহ নেটফ্লিক্স, অ্যামাজনের মতো সমস্ত ওভার দ্য টপ (ওটিটি) প্ল্যাটফর্মের কনটেন্টের রাশ নিজের নিয়ন্ত্রণে আনল কেন্দ্রীয় সরকার। এ বার থেকে অনলাইনে পরিবেশিত সমস্ত কনটেন্টের জন্য কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের ছাড়পত্রের প্রয়োজন হবে। সোমবার নরেন্দ্র মোদী সরকারের এই সংশোধনীতে স্বাক্ষর করে তা অনুমোদন করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
প্রিন্ট বা টেলিভিশন চ্যানেলগুলিতে প্রকাশিত খবর অথবা বিজ্ঞাপন বা ফিল্ম রিলিজের জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি নিয়ন্ত্রক সংস্থার ছাড়পত্রের প্রয়োজন হলেও এত দিন পর্যন্ত অনলাইনে প্রচারিত কনটেন্টের জন্য কোনও সরকারি ‘ছাঁকনি’ ছিল না। তবে এ বার থেকে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে প্রচারিত ফিল্ম বা ওয়েব কনটেন্টের প্রচারের আগে তাতে তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রকের অনুমোদন লাগবে। একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে অনলাইনে প্রকাশিত সমস্ত অডিয়ো-ভিস্যুয়াল বা কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স অনুষ্ঠানের জন্যও। নেটফ্লিক্স-অ্যামাজন-হটস্টারের মতো ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলি উপর আইন বিধিবদ‌্ধ স্বশাসিত সংস্থার নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয় রয়েছে বলে গত মাসে সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা রুজু করা হয়েছিল। কোনও রকমের সেন্সর ছাড়াই ওটিটি প্ল্যাটফর্মের কনটেন্ট দর্শকদের কাছে পৌঁছচ্ছে বলে জানানো হয়েছিল ওই মামলায়। ফলে এতে নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন রয়েছে বলে মত আবেদনকারীর।
এ বিষয়ে কেন্দ্রের বক্তব্য জানতে চেয়েছিল শীর্ষ আদালতের ৩ সদস্যের বেঞ্চ। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এ এস বোবডে, বিচারপতি এ এস বোপান্না এবং বিচারপতি ভি রামসুব্রহ্মণ্যনের বেঞ্চ এ নিয়ে নোটিস পাঠিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক এবং ইন্টারনেট অ্যান্ড মোবাইল অ্যাসোসিয়েশন (আইএএমএআই)-কে। অবশ্য এ নিয়ে অন্য একটি মামলায় গত বছর তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর জানিয়েছিলেন, মিডিয়ার অগাধ স্বাধীনতায় রাশ টানতে হয়তো পদক্ষেপ করতে পারে সরকার। যদিও ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলিতেও প্রিন্ট বা ফিল্মের মতোই নিয়ন্ত্রণের ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন তিনি।প্রসঙ্গত, প্রিন্টের যাবতীয় কনটেন্টের দেখাশোনার দায়িত্ব রয়েছে প্রেস কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া (পিসিআই), টেলিভিশনে প্রচারিত খবরাখবরের জন্য রয়েছে নিউজ ব্রডকাস্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (এনবিএ) এবং বিজ্ঞাপনী কনটেন্ট-এ নজরদারির জন্য অ্যাডভার্টাইজিং স্ট্যান্ডার্ড কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া। অন্যদিকে,  ফিল্ম রিলিজের আগে তা সেন্সর বোর্ডের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। তবে ওয়েব কনটেন্ট প্রকাশের জন্য কোনও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বা আইন নেই। নতুন সংশোধনীর মাধ্যমে এ বার তাতে হস্তক্ষেপ করল কেন্দ্রীয় সরকার, এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours