দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ দিল্লি, হরিয়ানা, রাজস্থান এবং উত্তরপ্রদেশে ৫০-এরও বেশি হত্যার মামলা রয়েছে এমন একজন চিকিত্সককে গ্রেপ্তার করেছে। অভিযুক্ত পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে প্রকাশ করেছে যে সে শতাধিক ট্রাক ও ট্যাক্সি চালককে অপহরণের পরে হত্যা করেছে। হত্যার পরে লাশগুলিকে নদীতে ফেলে দিত সে এবং কুমির সেগুলি খেত।

অভিযুক্তের নাম দেবেন্দ্র শর্মা এবং তিনি বিএএমএস নিয়ে পড়াশোনা করেছে। বর্তমানে সে দিল্লির বাপরোলা এলাকায় বাস করছিল। ক্রাইম ব্রাঞ্চের ডিসিপি রকেশ পাওরিয়া জানান ইন্সপেক্টর রাম মনোহরের দল তাকে ধরে ফেলে। ৬২ বছর বয়সী দেবেন্দ্র মূলত আলিগড়ের বাসিন্দা। অভিযুক্ত জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে সে ১৯৮৪ সালে বিহারের সিওয়ান থেকে বিএএমএস ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন এবং জয়পুরে জনতা হাসপাতাল নামে একটি ক্লিনিক খোলে। তারপরে ১৯৯৪ সালে কোনও গ্যাস সংস্থার ডিলারশিপ পেতে ১১ লক্ষ টাকা ব্যয় করে সে, তবে সংস্থার লোকেরা বিনিয়োগকারীদের প্রতারণা করে এবং দেবেন্দ্রর টাকা মেরে যায়। এরপরে দেবেন্দ্র ঘাটতি মেটাতে ১৯৯৫ সালে আলিগড়ে একটি নকল গ্যাস সংস্থা চালু করে।


প্রথমদিকে, লখনউ থেকে কিছু সিলিন্ডার এবং গ্যাসের ওভেন নিয়ে আসে সে তবে পরে এটি তার পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে। তারপরে উদয়বীর, বেদবীর ও রাজের সংস্পর্শে আসে দেবেন্দ্র। সবাই মিলে গ্যাস সিলিন্ডারে ভরা ট্রাক চালকদের হত্যা করার পর গ্যাসের সিলিন্ডারগুলি নিজেদের সংস্থায় নিয়ে যেত এবং মীরাটে ট্রাকগুলি কাটাত। দেবেন্দ্রকে তখন নকল গ্যাস এজেন্সি চালানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, কিন্তু জামিন পাওয়ার পরে আমরোহায় একটি নকল গ্যাস এজেন্সি পুনরায় চালু করে সে এবং তাকে আবার গ্রেপ্তার করা হয়। দেবেন্দ্র আবার জেল থেকে বেরিয়ে অবৈধ কিডনি প্রতিস্থাপনকারী গ্যাং-এ যোগ দেয় এবং জয়পুর, বল্লবগড় ও গুরুগ্রামে ১২৫ জনের কিডনি প্রতিস্থাপন করে।

এক একটি কিডনি প্রতিস্থাপনে ৫ থেকে ৭ লক্ষ টাকা পেত, তবে ২০০৪ সালে গুরুগ্রামের আনমোল নার্সিংহোমে অভিযান চালানো হলে কিডনি প্রতিস্থাপন মাফিয়া ডাক্তার অমিতের সাথে তাকে ধরা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত জানায়, সে ১০০-র অধিক ট্যাক্সিচালককে খুন করেছে। জয়পুর থেকে আলিগড়ে যাওয়া ট্যাক্সি চালকদের হত্যা করার পরে তাদের লাশ কাশগঞ্জের হাজারা নদীতে ফেলে দিত যেখানে কুমির খুব বেশি এবং সেইসমস্ত মৃতদেহ কুমির খেত। ট্যাক্সিগুলিকে বিক্রি করে দিত বা তাদের মেরঠে কাটতে দিত।

একটি ট্যাক্সি থেকে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা পেত, ৫০ টিরও বেশি হত্যার মামলা রেকর্ড করা হয়েছে যার মধ্যে ৭ টি মামলায় তাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। হত্যার একটি মামলায় তাকে জয়পুর কারাগারে সাজা দেওয়া হয়। এই বছরের জানুয়ারী মাসে একটি ২০ দিনের প্যারোল পায় সে। এরপরে সে দিল্লি পালিয়ে আসে এবং এখানে বাপরোলা অঞ্চলে থাকতে শুরু করে। এবার সে সম্পত্তি ব্যবসার দিকে হাত বাড়ানোর চেষ্টা করছিল তবে ধরা পড়ে যায়।

Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours