গোটা অগাস্ট মাস জুড়ে সপ্তাহে দু'দিন করে লকডাউন চলবে রাজ্যজুড়ে, জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বিকেলের সাংবাদিক বৈঠকে তিনি আরও জানাচ্ছেন, এই সময়ে রাজ্যের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। এই নতুন পর্যায়ের লকডাউনের মেয়াদ ৩১ অগাস্ট পর্যন্ত।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক বৈঠকে এই তথ্য জানিয়ে লকডাউনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেন। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, অগাস্ট মাসের ২, ৫, ৮, ৯, ১৬, ১৭, ২৩, ২৪, ৩১ তারিখ রাজ্যজুড়ে সম্পূর্ণ লকডাউন চলবে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে সেপ্টেম্বরে লকডাউন করা হবে কিনা। এই দিনগুলিতে বিমান পরিষেবাও সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
রাতে অবশ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফে ট্যুইট করে এই তালিকা বদল করা হয়৷ নতুন ঘোষণায় রাজ্য সরকার জানিয়েছে, ২ এবং ৯ অগাস্ট রাজ্যে সম্পূর্ণ লকডাউন থাকছে না৷ তবে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী বাকি দিনগুলিতে সম্পূর্ণ লকডাউনের নির্দেশ অপরিবর্তিত থাকছে৷ধর্মীয় উৎসব থাকায় ২ এবং ৯ অগাস্ট সম্পূর্ণ লকডাউনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রাজ্য সরকার৷
উল্লেখ্য, এই দফার লকডাউনে মূলত রবিবারগুলিকে বেছে নেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে মোট চারটি রবিবার পাওয়া যাবে। সরকারি বেসরকারি কর্মীদের সুবিধের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন, বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। পরিস্থিতি ভাল হলে সেপ্টেম্বর মাসে একদিন করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার অনুমতি দেওয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত মুখ্যমন্ত্রীর।
এদিন মুখ্য়মন্ত্রী মনে করিয়ে দেন, এবার ইদ পড়েছে শনিবার এবং রাখীপূর্ণিমা সোমবার। এই দু'দিন ছা়ড় দিয়ে পূর্ণ লকডাউন হবে মাঝের রবিবারটায়, অর্থাৎ ২ অগাস্ট। এছাড়া স্বাধীনতা দিবসের দিনও লকডাউন হবে না বলে জানান তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী মঙ্গলবারের সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়ে দেন, আগামী ১৫ অগাস্টের মধ্যে দিনে ২৫ হাজার নমুনা পরীক্ষার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে রাজ্য। এছাড়াও ১৫ অগাস্টের মধ্যে ২ লক্ষ অ্যান্টিজেন পরীক্ষার পরিকল্পনা রয়েছে।
#কলকাতা: এখনও বাগে আনা যায়নি মারণ ভাইরাস করোনাকে! প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতি মুহূর্তে লড়াইয়ের ময়দানে প্রস্তুত চিকিৎসক,নার্স,স্বাস্থ্যকর্মীরা। এই লড়াই লড়তে গিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে তাঁরা করোনা সংক্রমিত হয়েছেন, মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে! কিন্তু তবু তাঁরা যুদ্ধে অটল। লড়াই থেমে থাকেনি।
পশ্চিমবঙ্গেও করোনা ভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা পাননি চিকিৎসক,নার্স,স্বাস্থ্যকর্মীরা। করোনা সংক্রমিত হয়ে মৃত্যু হল দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলা থানার বাটানগর এলাকার বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কা মন্ডলের। ৩৮ বছরের প্রিয়াঙ্কা এসএসকেএম-এর কার্ডিওলজি বিভাগের আইসিউতে কর্মরতা ছিলেন। গত ১৬ জুলাই জ্বর এবং শ্বাসকষ্ট নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয় প্রিয়াঙ্কাকে। ১৭ তারিখ তাঁর কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসে। শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকায় ১৮ জুলাই প্রিয়াঙ্কাকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট বা সিসিইউ-তে ভর্তি করা হয় প্রিয়াঙ্কাকে। কয়েকদিনের মধ্যেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। দিন চারেক আগে তাঁকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়, কিন্তু হাসপাতাল জানিয়েছে, তাতেও শারীরিক অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি প্রিয়াঙ্কার। সোমবার গভীর রাতে মৃত্যু হয় প্রিয়াঙ্কার। বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রিয়াঙ্কা মন্ডলের আগে থেকেই কিছু শারীরিক সমস্যা ছিল। হাঁপাানির তীব্র সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি।
Advertisement
এসএসকেএম হাসপাতালে প্রিয়াঙ্কার স্মৃতিতে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রসঙ্গত প্রিয়াঙ্কা মন্ডলের স্বামীও বর্তমানে করনায় আক্রান্ত। তাঁদের ১১ বছরের এক পুত্র সন্তান রয়েছে। রাজ্যে করনা পরিস্থিতিতে এই নিয়ে মোট ৩জন নার্সের মৃত্যু হল। রাজ্যের নার্সদের অন্যতম সংগঠন নার্সেস ইউনিটির সম্পাদিকা ভাস্বতী মুখোপাধ্যায় জানান, '' এই মৃত্যু আমাদের শোকে পাথর করে দিয়েছে। করোনা যোদ্ধা বলার আগে সরকার আমাদের সঠিক সুরক্ষা দিক।'' ABHIJIT CHANDA
#কলকাতা: মাথা ঠুকেও হাসপাতালের কোভিড বেড যোগাতে হিমশিম খাচ্ছে মানুষ। এই অবস্থায় সরকারি উদ্যোগ রাজ্যে কোভিড চিকিৎসার বেড বাড়ানোর। আর তা করতেই খোদ কোলকাতায় বাধা। উত্তর কলকাতার বি কে পাল অ্যাভেনিউর অবিনাশ দত্ত মেটারনিটি হোম। ২০১৩ সাল থেকে আর জি কর হাসপাতালের অতিরিক্ত ভবন হিসেবে চিকিৎসার কাজ শুরু। ১২০ বেশি বেডের চিকিৎসার বন্দ্যোবস্ত। সেই আপাত শান্ত অবিনাশ দত্ত মেটারনিটি হোম ঘিরে প্রতিবাদের পোস্টার, ফ্লেক্স পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতিবাদ স্বরূপ সেখানে লেখা, " ঘন বসতি পূর্ণ জায়গায় কোভিড হাসপাতালের প্রতিবাদ করছি।"
কয়েকদিন আগে সংবাদমাধ্যমে খবর দেখে ঘুম উড়েছে স্থানীয়দের। মঙ্গলবার আউটডোর টিকিট দেওয়া বন্ধ হওয়ায় স্থানীয় মানুষ চরম আতঙ্কে। হাসপাতালের পাশের বাড়ি ১১৭ নং বি কে পাল অ্যাভেনিউ। বাড়িতে একাধিক পরিবারের বাস। এস কে আগরওয়ালের অভিযোগ, " কিসের ভিত্তিতে আমার বেড রুমের ৬ ফুট দূরত্বে কোভিড হাসপাতালের দেওয়াল ? সরকার বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রচার করছে করোনা রুখতে দুই ব্যাক্তির মধ্যে দূরত্ব হবে ৬ ফুট। সেখানে ৬ ফুট দূরত্বে ১০০-র বেশি বেডের কোভিড হাসপাতাল ? আমার পরিবারের করোনা রোখার নিরাপত্তা কোথায় ?"
Advertisement
এলাকায় ওষুধের দোকান মনোরম পাল দের। তিনি বলছেন, "হাসপাতালের পিছনের দিকে আমাদের বাড়ি। যে হাসপাতালের কোনও পাঁচিল নেই সেই হাসপাতালে কোভিড চিকিৎসা কীভাবে সম্ভব ? WHO ঘোষণা করেছে করোনা বায়ুবাহিত হয়েও ছড়াচ্ছে। সেখানে এই কোভিড হাসপাতালের যৌক্তিকতা কোথায় ? কোভিড হাসপাতালের আমরা বিরোধিতা করছি না,কিন্তু আমরা নিরাপদ এই গ্যারান্টি কে দেবেন ?''
মঙ্গলবার বিকেলে স্থানীয়দের প্রতিবাদ পোস্টার বি কে পাল এভিনিউ ছাড়িয়ে রবীন্দ্র সরণি পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে। এই 'নিরাপত্তা'-র গ্যারান্টি ছাড়া কোভিড হাসপাতাল হলে কড়া আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন স্থানীয় যুবক দীপ্তেন্দু গুঁই, সর্বজিৎ মুখোপাধ্যায়-রা। ইতিমধ্যেই রাজ্যপাল, স্বাস্থ্য ভবনে নালিশ ঠুকেছেন স্থানীয়রা। ARNAB HAZRA
#কলকাতা: চিকিৎসকদের কথা মতো সব সময় হাত ধুতে হবে, স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে। এবার সেই হাত নিয়ে সমস্যায় জ্যোতিষীরা। হাতের রেখার বদল না ঘটলেও বদল ঘটাতে হয়েছে অভ্যাসে। যে জ্যোতিষী আগে নিজের চেম্বারে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে হাতের রেখায় ভবিষ্যৎ দেখতো সে এখন বসে থাকে ল্যাপটপের সামনে। অন-লাইনে পড়াশোনার মত জ্যোতিষীর কনফারেন্সেও জমছে ভিড়। যাদের হাত দেখে লোকের ভাগ্য বলত অনায়াসে, এখন তাদের কর্মসঙ্কটে ভাগ্য বদলের আশায়।
আগে সকাল থেকে বিকাল লম্বা লাইন আর হাত দেখে ভাগ্য বিচার চলত যখন-তখন। এখন নিদিষ্ট সময় মেনে অন-লাইনে চলছে জ্যোতিষীদের ভাগ্য বিচার৷ যদি কেউ চলে আসেন চেম্বারে তাহলে তো কথা নেই। বারবার স্যানিটাইজিং আর সামাজিক দুরত্ব মেনে চলতে হচ্ছে সব সময়। করোনা পরিস্থিতিতে অনেকটাই কষ্টের মধ্যে রয়েছেন নামজাদা জ্যোতিষীরা। তাদের মধ্যে অনেকেই নতুন নতুন উপায় তৈরি করলেও দুধের স্বাদ মিটছে না ঘোলে।
Advertisement
তপন শাস্ত্রীর অবস্থা একইরকম। সকাল থেকে বিকাল তাদের জন্য অনেকে অপেক্ষা করলেও করোনা সংক্রমণের ভয়ে দেখা যাচ্ছে না আগের মতো ভিড়। তপন শাস্ত্রীর কথায় আগের মত আর লোকের আনাগোনা নেই, লোকের সমাগমে চেম্বারে লোকের জায়গা হত না। এখন করোনার ভয়ে তাও নেই, অন-লাইনে অনেকেই আসছেন। শহরের নামী-দামী জ্যোতিষী থেকে নতুন জ্যোতিষীদের একটাই আবেদন নিজের ভাগ্যের বদল হবে কবে? এই প্রশ্ন অনেকের হলেও উত্তর কারোর জানা নেই। Susovan Bhattacharjee
#কলকাতা: ২ এবং ৯ অগাস্ট রাজ্যে সম্পূর্ণ লকডাউন হচ্ছে না৷ মানুষের ভাবাবেগের কথা মাথায় রেখে সম্পূর্ণ লকডাউনের সূচিতে বদল করল রাজ্য সরকার৷ ট্যুইট করে এ খবর জানিয়েছে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর৷
ওই দু' দিন বাদ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী অগাস্ট মাসের মোট সাতদিন রাজ্যে সম্পূর্ণ লকডাউন থাকছে৷
রাজ্য সরকারের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী- ৫, ৮, ১৬, ১৭, ২৩, ২৪ এবং ৩১ অগাস্ট রাজ্যে 'কমপ্লিট লকডাইউন' থাকছে৷ ২ ও ৯ অগাস্ট রবিবার পড়েছে৷ এই দু' দিন রাজ্যে 'কমপ্লিট লকডাউনের' সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হল বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র দফতর৷ পূর্ব ঘোষণা মতো বুধবার ২৯ জুলাইও রাজ্যে সম্পূর্ণ লকডাউন থাকছে৷
স্বরাষ্ট্র দফতর ট্যুইটারে জানিয়েছে, এ দিন লকডাউনের সূচি ঘোষণার পর থেকেই বিভিন্ন মহল থেকে ২ এবং ৯ অগাস্ট সম্পূর্ণ লকডাউন না করার জন্য অনুরোধ ও আবেদন আসছিল৷ কারণ ওই দু'টি দিনই কয়েকটি ধর্মীয় উৎসব ও অনুষ্ঠান রয়েছে৷ সেই কারণেই ২ এবং ৯ অগাস্ট সম্পূর্ণ লকডাউনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হল৷ মানুষের ভাবাবেগকে সম্মান জানিয়েই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে৷
৫ অগাস্ট (বুধবার) ছাড়া ৮ অগাস্ট (শনিবার), ১৬ অগাস্ট (রবিবার), ১৭ অগাস্ট (সোমবার), ২৩ অগাস্ট (রবিবার), ২৪ অগাস্ট (সোমবার) এবং ৩১ অগাস্ট (সোমবার) রাজ্যে সম্পূর্ণ লকডাউন থাকছে৷
Post A Comment:
0 comments so far,add yours