এই ড্রোনগুলির মধ্যেই একটি ড্রোন এসে পড়ে শেখ ভাট্টি গ্রামের বাসিন্দা সর্বজিত সিংহের জমিতে। উড়ে এসে দুটি জমির মাঝে মাঝে অংশে একটি গর্তে পড়ে ড্রোনটি আটকে যায়। কিন্তু তারপরও সেটি চলছিল বলেই প্রত্যক্ষদর্শীরা জানালেন।


জমিতে দেখেন হলদেটে প্লাস্টিকের বস্তুটা, সন্দেহ লাগতেই খবর সেনাকে! দেশের এই অস্থির পরিস্থিতিতে সামান্য চাষি সর্বজিৎ-ই ভারতীয় সেনাকে প্রথম দেন বড় ক্লু
চাষি সর্বজিৎ

সংঘর্ষ বিরতি সবেমাত্র ঘোষণা হয়েছে। তখন কিছু হলেও আশার আলো দেখেছিলেন সীমান্ত গ্রামের বাসিন্দারা। কিন্তু ঘণ্টা দেড়েকও পেরোয়না। হঠাৎ করে আলোর মতো কিছু একটা উড়ে যেতে থাকে মাথার ওপর দিয়ে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাজতে শুরু করে সাইরেন। এই শব্দ আর তার পরবর্তী পরিস্থিতি কী হতে পারে, সেটা গত পাঁচ-ছ’দিনে ভালই বুঝে গিয়েছেন সীমান্তের বাসিন্দারা। মুহূর্তের মধ্যে ব্ল্যাকআউট, আর তারপর টান টান উত্তেজনা, বুক কাঁপা বিস্ফোরণের শব্দ। সব মিটে যাওয়ার পর ঘর থেকে বেরিয়েছিলেন অমৃতসরের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঠিক ১৫ কিলোমিটার দূরে আজনাল পুলিশ স্টেশন এলাকার শেখ ভাট্টি গ্রামের বাসিন্দা সর্বজিৎ সিং। বেরিয়ে তিনি নিজের জমিতে গিয়েছিলেন। সর্বজিতের চোখে পড়েছিল দুই জমির মধ্যে একটা গর্ত, আর সেই গর্তের মধ্যে মুখ থুবড়ে পড়ে একটি ড্রোন। সঙ্গে পেঁচানো একটা হলুদ তার! বিপদ আঁচ করতে পেরেছিলেন সর্বজিৎ। সঙ্গে সঙ্গে তিনিই খবর দেন সেনাকে।


অমৃতসর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঠিক ১৫ কিলোমিটার দূরে আজনাল পুলিশ স্টেশন এলাকার শেখ ভাট্টি গ্রাম। গ্রাম থেকে ঠিক পৌনে দুই কিলোমিটার দূরেই ভারত পাকিস্তান সীমান্ত। শনিবার সন্ধ্যায় সংঘর্ষ বিরতি লঙ্ঘন করে একের পর এক ড্রোন পাকিস্তানের দিক থেকে উড়ে আসতে থাকে। সঙ্গে চলতে থাকে অনবরত গোলাগুলি। প্রত্যাঘাত করতে থাকে ভারতীয় সেনা এবং ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী।

এই ড্রোনগুলির মধ্যেই একটি ড্রোন এসে পড়ে শেখ ভাট্টি গ্রামের বাসিন্দা সর্বজিত সিংহের জমিতে। উড়ে এসে দুটি জমির মাঝে মাঝে অংশে একটি গর্তে পড়ে ড্রোনটি আটকে যায়। কিন্তু তারপরও সেটি চলছিল বলেই প্রত্যক্ষদর্শীরা জানালেন। ড্রোনটি পড়ে থাকতে দেখে জমির মালিক সর্বজিৎ সিং পুলিশ এবং ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে খবর দেন। লাগোয়া বর্ডার আউটপোস্ট থেকে চলে আসেন বিএসএফ জওয়ানরা। আজনাল থানা থেকে পুলিশ আধিকারিকরা যান।

ড্রোনটির সঙ্গে একটি হলুদ প্লাস্টিক তার, যেটি আসলে আইইডি সার্কিট ওয়্যার দিয়ে বাধা ছিল। যখন খোলা হয়, তখনই তার মধ্যে একাধিক অস্ত্রশস্ত্র এবং বিপুল পরিমাণে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন আরজিএক্স এবং আইইডি উদ্ধার হয় বলে বিএসএফ সূত্রে খবর।

পঞ্জাব পুলিশের গোয়েন্দা শাখা মনে করছে, মূলত সীমান্তবর্তী গ্রামে অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে জঙ্গিদের হাতে এই অস্ত্র তুলে দেওয়া মূল উদ্দেশ্য ভূখণ্ডের ওপরে থাকা জঙ্গি সংগঠনগুলির। একইসঙ্গে স্লিপার সেল তৈরি করা অন্যতম উদ্দেশ্য জঙ্গি সংগঠনগুলির। সেই কারণে তাদের হাতে অস্ত্র পৌঁছতেই ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে বারবার।

সীমান্তবর্তী অংশের স্লিপার সেল তৈরিতে এখন সক্রিয় হয়েছে জঙ্গি সংগঠনগুলি, দাবি পাঞ্জাব পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকদের একাংশের। কিন্তু নজরদারি শক্ত পোক্ত থাকায় অস্ত্র সঠিকভাবে তাদের হাতে পৌঁছচ্ছে না।। সে কারণেই রাতের অন্ধকারে সংঘর্ষ বিরতি লঙ্ঘনের অছিলায় এভাবেই ড্রোনের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণে বিস্ফোরক পাঠানো হয়েছিল।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours