ওই চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের ৭ দিনের ট্রেনিং দিয়ে কীভাবে তাঁদের থেকে উপযুক্ত নিরাপত্তার আশা করেন? কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নিরাপত্তার দায়িত্বে চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ করতে পারে রাজ্য?"
'আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে', মমতা সরকার কী কী পদক্ষেপ করেছে, বললেন কপিল সিব্বল
আন্দোলনরত চিকিৎসক
আরজি কর মামলায় মঙ্গলবারের শুনানিতে দীর্ঘ সময়ে যে বিষয়টির ওপর সওয়াজ জবাব চলল, তা হল হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসকদের নিরাপত্তার ব্যাপারে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চের কাছে রাজ্য জানাল কী কী পদক্ষেপ ইতিমধ্যেই করা হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতাল মিলিয়ে মোট ৮৭টি হাসপাতাল রয়েছে। টয়লেট, রেস্টিং রুম এবং অতিরিক্ত সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর জন্য বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে।” রাজ্য সরকারকে প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দেন, সব হাসপাতালের প্রিন্সিপ্যাল, ডিএম এবং সিনিয়র এবং জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে টয়লেট, রেস্টিং রুম এবং সিসিটিভি লাগানোর বিষয় কাজ করতে হবে।
প্রধান বিচারপতি রাজ্যের উদ্দেশে বলেন, “গত শুনানিতে আমরা নির্দেশ দিয়েছিলাম ডাক্তারদের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে হবে। ওই বিষয়ে রাজ্য কী পদক্ষেপ করেছে?” রাজ্যের আইনজীবী বলেন, “আমরা পদক্ষেপ করেছি। আদালতকে ওই বিষয়ে জানাচ্ছি।”
পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের নিয়ে রাজ্য যে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল, তাও ঠিক করার নির্দেশ দিলেন প্রধান বিচারপতি। প্রসঙ্গত, আরজি কর কাণ্ডের পর কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের নাইট ডিউটি নিয়ে ১৯ অগাস্ট একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল। তার প্রেক্ষিতে রাজ্যকে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, “বিমানচালক, সেনাতে অনেক মহিলা রাতে কাজ করেন। এই বিজ্ঞপ্তি কেন?”
প্রধান বিচারপতি বলেন, “রাজ্যকে ওই বিজ্ঞপ্তি ঠিক করতে হবে। আপনাদের দায়িত্ব নিরাপত্তা দেওয়ার।” CJI-এর স্পষ্ট বক্তব্য, “আপনারা এরকম বলতে পারেন না।” রাজ্যের তরফে আশ্বস্ত করা হয়, বিজ্ঞপ্তির ৫ ও ৬ নম্বর অংশ, যা নিয়ে আপত্তি রয়েছে, তা মুছে ফেলা হবে।
প্রধান বিচারপতি রাজ্যের কাছে এটাও স্পষ্ট করে দেন, নিরাপত্তার দায়িত্ব যেন কোনও অস্থায়ী কর্মীর ওপর না দেওয়া হয়। কারণ অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়রও একজন অস্থায়ী কর্মী। তিনি নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন বলে সারা হাসপাতাল ঘুরে বেড়িয়েছেন। CJI-এর স্পষ্ট বক্তব্য, “ওই চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের ৭ দিনের ট্রেনিং দিয়ে কীভাবে তাঁদের থেকে উপযুক্ত নিরাপত্তার আশা করেন? কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নিরাপত্তার দায়িত্বে চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ করতে পারে রাজ্য?”
রাজ্যের তরফে আইনজীবী কপিল সিব্বল বলেন, “আরজি কাণ্ড আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। আর যেন একটাও এই ঘটনা না ঘটে, তা নিশ্চিত করব আমরা।” রাজ্য়ের তরফে জানানো হয়, আরজি করে আগে ৩৭টি সিসি ক্যামেরা ছিল। এদিনের শুনানিতে রাজ্য জানায়, আরও ৪১৫টি ক্যামেরা বসবে। CJI ৭ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে কাজ শেষ করা নির্দেশ দিয়েছেন। বাইরের লোক যাতে না আসতে পারে তার জন্য বায়োমেট্রিক অ্যাক্সেস করতে হবে বলে নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours