মিঠুনের তৃণমূলে যোগদানের খবর পেয়ে একপ্রকার ভেঙে পড়েছেন তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু। তিনি নিজেও ঝালদার কাউন্সিলর। পুরসভার উপপুরপ্রধান। বলছেন, 'এরা সবাই বেইমান। আমি লজ্জিত এদের ব্যাপারে। এরা বিশ্বাসঘাতকতা করল আমাদের দলের সঙ্গে।'



ঝালদা: ঝালদা পুরসভার পুরপ্রধান শীলা চট্টোপাধ্যায়-সহ আরও চার কংগ্রেস কাউন্সিলর বুধবার দিলেন তৃণমূলে। আর তাতেই ফের ওলট-পালট ঝালদা পুরসভার সমীকরণ। কংগ্রেসের থেকে ঝালদা পুরসভা ছিনিয়ে নিল ঘাসফুল শিবির। ঝালদায় তৃণমূলের হাত আরও শক্ত করার নেপথ্যে যাঁদের হাত রয়েছে, সেই তালিকায় রয়েছেন ঝালদার নিহত কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর ভাইপো মিঠুন কান্দুও। মিঠুনের তৃণমূলে যোগদানের খবর পেয়ে একপ্রকার ভেঙে পড়েছেন তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু। তিনি নিজেও ঝালদার কাউন্সিলর। পুরসভার উপপুরপ্রধানও। বলছেন, ‘এরা সবাই বেইমান। আমি লজ্জিত এদের ব্যাপারে। এরা বিশ্বাসঘাতকতা করল আমাদের দলের সঙ্গে।’


২০২২ সালের পুরভোটে ঝালদায় জয়ী হয়েছিলেন তপন কান্দু ও তাঁর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু। কিন্তু, ফল ঘোষণার কয়েকদিন পরই (গত বছরের ১৩ মার্চ) তপন কান্দুর উপর হামলা হয়। গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন তপন। ঘটনার পর থেকেই পূর্ণিমা কান্দু অভিযোগ তুলে আসছিলেন, রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করে খুন করা হয়েছে তাঁর স্বামীকে। স্বামীর উপর হামলার নেপথ্যে তৃণমূল যোগ নিয়েও সরব হয়েছিলেন তিনি। সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছিলেন। হাইকোর্টের নির্দেশে শেষ পর্যন্ত তপন কান্দুর মৃত্যু মামলার তদন্তভার গিয়েছে সিবিআই-এর হাতে।

তপন কান্দুর খুনের অভিযোগে যাঁরা সবথেকে বেশি সরব হয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম মিঠুন কান্দু। তপনের সেই ভাইপোই আজ কংগ্রেসের হাত ছেড়ে তৃণমূলে। মিঠুনের এমন কাণ্ডে আরও বেশি করে লজ্জিত বোধ করছেন পূর্ণিমা। কথা বলার ভাষা হারিয়েছেন। আফশোসের সুরে বলছেন, ‘মিঠুন ভোটে দাঁড়িয়ে জেতার উপযুক্তই ছিল না। আমার স্বামীর দয়ায় উপনির্বাচন হওয়ার পরে ও জিতেছে। ওর নিজের কোনও ক্ষমতাই ছিল না। মিঠুন এটা মোটেই ঠিক করল না।’


মিঠুন তৃণমূলে যোগদানের পর এখনও পর্যন্ত পূর্ণিমার সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করেননি। কেন এমন করলেন মিঠুন, তা কিছুতেই বুঝতে পারছেন না তপন কান্দুর স্ত্রী। বলছেন, ‘মিঠুন এটা করে অনেক বড় ভুল করেছে। মিঠুনের সঙ্গে আমার এখনও যোগাযোগ হয়নি। আমাকে একবার জানিয়ে যেতে পারত।’

একইসঙ্গে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন পুরপ্রধান শীলা চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও। বলছেন, ‘নেপাল মাহাতো, কৌস্তভ বাগচিরা যদি না থাকতেন, যদি শীলাদির হয়ে লড়াই না করতেন, তাহলে তাঁর কাউন্সিলর পদও থাকত না। কিন্তু আমি কোনওদিন এমন করব না। আমাকে যদি রাজনীতি ছেড়ে দিতে হয় ছেড়ে দেব, কিন্তু নেপালবাবুর হাত কোনওদিন ছাড়ব না।’

এদিকে তপন কান্দুর ভাইপো মিঠুন কান্দুর আবার বক্তব্য, কান্দু পরিবার চাইছে দোষীদের শাস্তি হোক। কিন্তু তাঁদের জন্য যাতে ঝালদাবাসীর সমস্যা না হয়, যাতে আরও বেশি উন্নয়ন করতে পারেন, সেই কারণেই তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours