বৃহস্পতিবার নিয়োগ মামলায় আদালতে পেশ করা হল পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এদিন ফের তাঁকে ঘিরে চোর-চোর স্লোগান ওঠে কোর্ট চত্বরে।


তৃণমূল আমলে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে যখন সরব হয়েছেন বিরোধীরা, তার মধ্যেই বিস্ফোরক দাবি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee)। বৃহস্পতিবার আদালতে প্রবেশ করার আগে সুজন চক্রবর্তী, শুভেন্দু অধিকারী ও দিলীপ ঘোষের নাম বললেন পার্থ। তাঁর দাবি, সুজন-শুভেন্দুদের হাত ধরেই দুর্নীতি হয়েছিল। ২০১১-১২ সালে প্রাথমিক নিয়োগে কী হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখার কথাও বলেন তিনি। কোনও বেআইনি কাজ তাঁর পক্ষে করা সম্ভব ছিল না বলে ফের সাফাই দিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আদালতে বক্তব্য পেশ করার আর্জি বিচারকের কাছে আগেই জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আদালত কক্ষে প্রকাশ করার আগেই সংবাদমাধ্যমের সামনে বিরোধী নেতাদের নাম সামনে আনলেন।



ঠিক কী বললেন পার্থ?
সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে পার্থ বলেন, ‘পরিষ্কার ভাষায় বলছি, যে সুজন চক্রবর্তী, দিলীপ বাবু, শুভেন্দু বাবুরা বড় বড় কথা বলছেন। তাঁরা নিজেদের দিকে দেখুন। উত্তরবঙ্গে তাঁরা কী করেছেন। ২০০৯-১০-এর ক্যাগ রিপোর্ট দেখুন। সমস্ত জায়গায় তদ্বির করেছেন। আমি তাঁদের বলেছি করতে পারব না। আমি নিয়োগ কর্তা নই। এ ব্যাপারে সাহায্য তো দূরের কথা, কোনও বেআইনি কাজ করতে পারব না।’

এখানেই শেষ নয়। সরাসরি প্রাথমিক নিয়োগের সঙ্গে বিরোধী দলনেতার যুক্ত থাকার অভিযোগও তুলেছেন পার্থ। তিনি বলেন, ‘শুভেন্দু অধিকারী ২০১১-১২ সালে কী করেছিল দেখুন না। ডিপিএসসি-তে কী করেছিল দেখুন না।’ উল্লেখ্য, ২০১১-১২ সালে তৃণমূলেই ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী।



সাম্প্রতিককালে শাসক দলের নেতাদের মুখে বারবারই বাম জমানার দুর্নীতির কথা শোনা গিয়েছে। বাম আমলে নিয়োগে কীভাবে দুর্নীতি হয়েছিল, তার পোস্টমর্টেম করার কথা বলেছেন খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও সে ব্যাপারে শ্বেতপত্র প্রকাশ করার কথা বলেছেন। এরই মধ্যে সেই একই সুর পার্থর গলায়। এবার বিচারকের সামনে তিনি কী বলবেন, সেদিকে নজর থাকছে।

সূত্রের খবর, এদিন এজলাসে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘কিছু বলব না ভেবেছিলাম। এখন দেখছি না বললে সবটা আমার বিরুদ্ধেই যাচ্ছে। সেটা আমি চাই না। তাই এবার বলা শুরু করব।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘৫ বছর ধরে যে লোকটা রাস্তায় বসে কাজ করেছে, করোনা সামলেছে, সে লোকটা চুরি করতে পারে না। যে সেটা জানে সে আমাকে নিয়ে খারাপ কিছু লিখতে পারে না। আমি একই জায়গা থেকে ৫ বার জিতেছি। কখনও অন্য কোথাও থেকে লড়িনি। যদি সৎ না হতাম তাহলে মানুষ কি জেতাত?’

প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর মুখে বিস্ফোরক অভিযোগ শুনে বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ সাফ জানান, ২০১১-১২ সালে তিনি রাজনীতিতে ছিলেন না, পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও চিনতেন না। দুর্নীতির দায় সম্পূর্ণ ঝেড়ে ফেলেছেন তিনি।

এদিকে, বৃহস্পতিবার আদালতে প্রবেশ করার সময় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ঘিরে ফের চোর চোর স্লোগান দিতে থাকেন অনেকে।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours