গরু পাচারের মামলায় বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল এখন সিবিআই হেফাজতে। 

এই জেলায় গরুর পাশাপাশি কয়লা, বালি, পাথর পাচারের অভিযোগ উঠেছে বারবার। তা নিয়ে খবর করতে গিয়ে চাপের মুখে পড়তে হয়েছিল এবিপি আনন্দর প্রতিনিধি গোপাল চট্টোপাধ্যায়কে। যিনি আজ আমাদের মধ্যে নেই।

 একাধিকবার প্রবল চাপের মুখে পড়তে হয়েছিল এবিপি আনন্দর প্রতিনিধি গোপাল চট্টোপাধ্যায়কে
গরু পাচার মামলায় বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি  অনুব্রত মণ্ডলকে ( Anubrata Mondal ) গ্রেফতার করেছে সিবিআই ( CBI )। বীরভূমে গরু পাচারের অভিযোগ আজকের নয়। আর শুধু গরুই বা কেন! প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ, অনুব্রত মণ্ডলের বীরভূম জেলা থেকে বারবার সামনে এসেছে, বালি , পাথর খাদানে অবৈধ খনন এবং পাচারের  অভিযোগ। সেই খবর সম্প্রচার করতে গিয়ে, একাধিকবার প্রবল চাপের মুখে পড়তে হয়েছিল এবিপি আনন্দর প্রতিনিধি গোপাল চট্টোপাধ্যায়কে। যিনি কয়েক মাস আগে চলে গিয়েছেন পরলোকে।

কয়েক বছর আগে, বীরভূমে পাথর এবং বালি পাচারের অভিযোগ নিয়ে, সিরিজ আকারে একের পর এক প্রতিবেদন সম্প্রচার করেছিল এবিপি আনন্দ। ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ দীর্ঘ এই সময় ধরে, বীরভূমে বালি এবং পাথর পাচারের অভিযোগ নিয়ে একের পর এক খবর করেছিলেন এবিপি আনন্দর প্রতিনিধি গোপাল চট্টোপাধ্যায়। ২০১৬ সালে জাতীয় পরিবেশ আদালত বীরভূমের ২২০টি পাথর খাদান বন্ধের নির্দেশ দেওয়ার পরও, কীভাবে সেখান থেকে পাথর তোলা হত, সেই খবর করেছিল এবিপি আনন্দ। বীরভূমের খয়রাশোলের খাদান থেকে, বেআইনিভাবে পাথর তোলা নিয়ে, এবিপি আনন্দ খবর করার পরই, তা নিয়ে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। বন্ধ হয় বেআইনি খনন। 

গোপাল চট্টোপাধ্যায়কে প্রাণনাশের হুমকি
একইভাবে অবৈধ বালি খাদান নিয়েও একাধিকবার খবর করেছিলেন এবিপি আনন্দর প্রতিনিধি গোপাল চট্টোপাধ্যায়। কীভাবে প্রশাসনের নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে, দিনের পর দিন, নদীর তীর থেকে বালি তোলা হত। বালি ভর্তি লরি যাওয়ার জন্য কীভাবে বাঁধ কেটে, রাস্তা তৈরি করা হয়েছিল । সেই নিয়ে সিরিজ আকারে প্রতিবেদন তুলে ধরেছিল এবিপি আনন্দ। বীরভূমে বেআইনি বালি খাদান ও রাস্তার ধারে বেআইনিভাবে বালি মজুতের বিরুদ্ধে খবর করার পরই এবিপি আনন্দের প্রতিনিধি গোপাল চট্টোপাধ্যায়কে হুমকি দেওয়া হয়। এমনকি ভবিষ্যতে এনিয়ে খবর করলে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়। 2019 সালে এক রাতে সিউড়ির সেহারাপাড়ায় তাঁর বাড়িতে তিনটি বোমা মারা হয়। বিস্ফোরণের তীব্রতায় জানলার কাচ, চাঙড় ভেঙে পড়ে। 

সেই ঘটনায় তৃণমূলের প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ সহ কয়েকজন গ্রেফতারও হন। তবে এত চাপ, হুমকি, শাসানির পরও বীরভূমে অবৈধ বালি, পাথর খাদান নিয়ে খবর করা বন্ধ করেননি গোপাল চট্টোপাধ্যায়। ২০২১ সালের ২৮ ডিসেম্বর ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে গোপাল আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। এখন সেই বীরভূমে কয়লা এবং গরু পাচার কেলেঙ্কারি নিয়ে তদন্তে নেমেছে সিবিআই এবং ইডি। বৃহস্পতিবার গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হলেন বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। 

Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours