রক্তের এক বিরলতম গ্রুপ মিলল এই দেশেই! ৬৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তির দেহে একটি বিরল রক্তের গ্রুপ শনাক্ত করেছেন গুজরাতের চিকিৎসকরা। হার্টের অস্ত্রোপচারের আগে ওই ব্যক্তির রক্তের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু তাঁর রক্তের গ্রুপের সঙ্গে মেলে এমন কোনও রক্তই ​​খুঁজে পাননি তিনি। 

এই ঘটনায় অবাক হয়ে চিকিৎসকরা তাঁর রক্তের নমুনার কিছু বিশেষ পরীক্ষা করতে বাধ্য হন। ফলাফল দেখে তাজ্জব চিকিৎসকরা! দেখা যায় ওই ব্যক্তির দেহে ‘EMM negative’ রক্তের গ্রুপ রয়েছে! সারা বিশ্বে এই নিয়ে নবম ঘটনা ঘটল এমন। গত বছর রাজকোটের বাসিন্দা এই ব্যক্তি অস্ত্রোপচারের জন্য হাসপাতালে এলে এই বিরল রক্তের আবিষ্কার হয়।

সাধারণভাবে, চার ধরনের রক্তের গ্রুপ সকলেরই জানা - A, B, O এবং AB। এই মাসের শুরুতেই ওই ব্যক্তির দেহে বিরল ‘EMM negative’ রক্তের গ্রুপের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়। EMM রক্তের গ্রুপ সম্পর্কে কিছু বিশেষ তথ্য রইল এখানে:

EMM negative ব্লাড গ্রুপের লোকজন কাউকে রক্ত ​​দিতে পারবেন না। তাঁরা কারও রক্ত ​​গ্রহণ করতেও পারবেন না।


সুরাতের লোক সমর্পণ রক্তদান কেন্দ্র এবং গবেষণা কেন্দ্রে এই বিরল রক্তের গ্রুপ শনাক্ত করা হয়। ডাঃ সন্মুখ যোশী এই রক্তের গ্রুপ আবিষ্কার করেন। তিনি জানিয়েছেন, ওই রোগীকে আহমেদাবাদের প্রথমা ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে রেফার করা হয়েছিল।

তাঁর শরীর থেকে সংগৃহীত রক্তের নমুনার ল্যাব টেস্টিং বাকি রক্তের গ্রুপ থেকে বেশ ভিন্ন এবং অদ্ভুত ছিল।


ডাঃ সন্মুখ যোশী জানান, তাঁর প্লাজমাতে উপস্থিত কিছু অ্যান্টিবডির কারণে কোনও রক্তের মিল পাওয়া যায়নি। তাই, তিনি আরও পরীক্ষার জন্য ওই ব্যক্তি এবং তাঁর পরিবারের রক্তের নমুনা নিউইয়র্কে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন।


“মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের বিজ্ঞানীর সহযোগিতায় রোগীর দেহে EMM নেগেটিভ রক্ত মেলে এবং ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অফ ব্লাড ট্রান্সফিউশনে বিষয়টি আলোচনা করা হয়। EMM042 প্রতীক সহ EMM নামক নতুন রক্তের গ্রুপটি তখন নির্দিষ্ট করে স্বীকৃত হয়,” বলেন তিনি।

OMIM, মানুষের জিন এবং জেনেটিক ডিসঅর্ডারের একটি অনলাইন ক্যাটালগ অনুযায়ী, EMM কে রক্তের ৪২ তম গ্রুপ হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে।


এই ব্লাড গ্রুপের মানুষদের পিআইজিজি জিনের মিউটেশনের কারণে একটি ইএমএম ফেনোটাইপ রয়েছে। তাঁদের স্বাভাবিকভাবেই অ্যান্টি-ইএমএম অ্যান্টিবডি রয়েছে যা নিয়মিত রক্তের ধরন এবং ক্রসিংয়ের সময় শনাক্ত করা হয়।


এই অ্যান্টিবডিগুলির তীব্র হেমোলাইটিক ট্রান্সফিউশন প্রতিক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours