শুধুমাত্র কালীপুজোর রাত্রেই আতশবাজির আলো দেখা যায় না। তার মহড়া চলে বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই। কালীপুজোর আগের দিন ভূত চতুর্দশীতেও বাঙালির বাড়ি প্রত্যেক বাড়ি সেজে ওঠে প্রদীপের আলোয়। আসলে এই দিনটির সাথে জড়িয়ে রয়েছে গায়ে কাঁটা দেওয়া কিছু গল্প কথা।এছাড়াও ভূত চতুর্দশীর দিন ১৪ পুরুষের উদ্দেশ্যে ১৪ শাক খাওয়ার নিয়ম প্রচলিত রয়েছে।

প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী ভূত চতুর্দশীর রাতে মর্ত্য নাকি ভূতেদের বিচরণক্ষেত্র হয়ে ওঠে। রাত্রেবেলা বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের দিকে এই দিনটিতে অনেকেই বাড়ির বাইরে বার হতে চান না। এমনকি মেয়েদের চুল খুলে রাখতেও বারণ করা হয়।

• ভূত চতুর্দশী : নরক চতুর্দশী

ভারতের তামিলনাড়ু, কর্ণাটক এবং গোয়ায় এই ভূত চতুর্দশীকে আবার বলা হয় নরক চতুর্দশী। আঞ্চলিক বিশ্বাস অনুযায়ী, এই দিনটিতে স্বর্গ এবং নরকের দরজা কিছুক্ষণের জন্য খোলা হয় এবং সেই দরজা দিয়েই স্বর্গত এবং বিদেহী আত্মারা পৃথিবীতে নেমে আসেন । তারপর ১৪প্রদীপের আলো দেখেই উত্তরপুরুষের বাড়ি পৌঁছে যান তাঁরা।

• রাজা বলির কাহিনি

এই পূর্বপুরুষদের সাথেই আসেন রাজা বলি এবং তাঁর ভূত অনুচরগণ। রাজা বলির সাথেই জড়িয়ে রয়েছে বিষ্ণুপুরাণ এর ইতিহাস। মর্ত্য, স্বর্গ এবং পাতালের অধীশ্বর রাজা বলির সাথে যুদ্ধে হেরে গিয়েছিলেন দেবরাজ ইন্দ্র। রাজা বলি ছিলেন শিব ভক্ত। অসহায় দেবতাগণ তাই বিষ্ণুর কাছে শরণাপন্ন হন সাহায্যের জন্য।

তখন স্বয়ং বিষ্ণু বামনের অবতারে রাজা বলির কাছে তিন পদ সমান জমি চান। সেই অনুযায়ী ভগবান বিষ্ণুকে একটি পায়ের সমান মর্ত্য এবং অপর পা সমান স্বর্গ দেন। আর একটি যে পা বিষ্ণুর নাভি থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন সেটি রাখেন রাজা বলির মাথায়। তত্‍ক্ষণাত্‍ তিনি পাতালে প্রবেশ করেন।

• রাজা বলি এবং তাঁর অনুচরদের মর্ত্যে ফেরার দিন

ভগবান বিষ্ণু রাজা বলিকে আশীর্বাদ করেছিলেন, প্রতিবছর এই রাক্ষসরাজ তাঁর অনুচরদের নিয়ে নির্দিষ্ট সময় পৃথিবীতে ফিরে আসতে পারবেন এবং তাঁদের পুজো করা হবে। রাজাবলি এবং তাঁদের অনুচরদের পৃথিবীতে ফিরে আসার দিনটিকে ভূত চতুর্দশী বলে মনে করা হয়।

 সূত্র : প্রথম কলকাতা
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours