কেন্দ্রের নয়া তিন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে কৃষক সংগঠনগুলির ডাকে ৮ ডিসেম্বর ভারত বন্ধ। কৃষক নেতারা জানিয়েছেন, বন্ধ পালনে কোথাও জোর জবরদস্তি করা হবে না। জরুরি পরিষেবাতেও ছাড় রয়েছে।
ভারত বন্ধে কাউকে জোর করে শামিল করা হবে না বলে সোমবার আন্দোলনরত কৃষক সংগঠনগুলির তরফে ঘোষণা করা হয়েছে। বিভিন্ন শাখা সংগঠনগুলির উদ্দেশে কৃষক নেতারা আগাম জানিয়ে দিয়েছেন, কাউকে জোর করে কৃষকদের এই আন্দোলনে শামিল করতে যাবেন না। কেউ স্বেচ্ছায় এই আন্দোলনে যোগ দিতে চাইলে, সংগঠনের তরফে স্বাগত। ভারত বন্ধের কারণে জরুরি পরিষেবার যাতে বাধার সৃষ্টি না হয়, সে দিকেও নজর দিতে বলা হয়েছে। কেন্দ্রের নয়া তিনটি কৃষি আইনের বিরোধিতা করে, সেগুলি প্রত্যাহারের দাবিতে বিগত ১২ দিন ধরে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষকরা। সেই আন্দোলনের অংশ হিসেবেই ৮ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার ভারত বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছে।
সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে কৃষক নেতা বলবীর সিং রাজেওয়াল বলেন, কেন্দ্র সরকারকে কৃষকদের দাবি মেনে তিনটি কৃষি আইন বাতিল করতেই হবে। যদিও, শেষ বৈঠকেও কেন্দ্র তেমন কোনও ইঙ্গিত দেয়নি। এত বিক্ষোভের মধ্যেও নরেন্দ্র মোদী কিন্তু কৃষি আইন সংস্কারের পক্ষেই সওয়াল করে যাচ্ছেন। কার্যত কেন্দ্রের এখন সাপের ছুঁচো গেলার অবস্থা হয়েছে। আন্দোলনের চাপে এই আইন প্রত্যাহার করা মানে কেন্দ্রের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। ফলে, প্রত্যাহারের পথে পা না বাড়িয়ে দু'টি সংশোধনীতে সম্মত হয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু, কৃষক নেতারা সিদ্ধান্তে অবিচল। শেষ বৈঠকে কোনও উত্তর না দিয়ে 'মৌনব্রত' নেনে কৃষক নেতারা। কৃষকদের এই ভূমিকায় চাপে পড়ে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমরের নেতৃত্বে শেষ বৈঠকেও তাই রফাসূত্র বেরোয়নি। এমতবস্থায় বুধবার, ৯ ডিসেম্বর ফের বৈঠক রয়েছে। তবে, এ বার কৃষকরা কেন্দ্রের কাছ থেকে 'হ্যাঁ' বা 'না'-এ উত্তর চান। কেন্দ্রের সেই উত্তরের উপরই নির্ভর করবে ভবিষ্যত্ আন্দোলন কোন পথে এগোবে।
কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর শেষ বৈঠকে আন্দোলনকারী কৃষক নেতাদের কাছে আর্জি জানিয়েছেন, বয়স্ক ও বাচ্চাদের যাতে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ঠান্ডায় অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকেই তিনি এই আর্জি জানান।তা ছাড়া, কোভিড সংক্রমণের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তবে, আন্দোলনকারীরা কেন্দ্রের সেই আর্জি কানে তোলেনি। কৃষক পরিবারের সববয়সিরা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে এই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
সাংবাদিক বৈঠকে কৃষক নেতারা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ভারত বন্ধে সকাল ১১ থেকে বেলা ৩টে পর্যন্ত বিভিন্ন টোল প্লাজায় তাঁরা অবরোধ করবেন। ভারত কিষাণ একতা সংগঠনের সভাপতি জগজিত্ সিং ডালেওয়ালা কৃষকদের উদ্দেশে জানান, সর্বত্র শান্তি বজায় রাখবেন। বন্ধ পালন করতে কাউকে পীড়াপীড়ি করবেন না। দেশজুড়ে এই বন্ধে সাড়া মিলবে বলেই তিনি আশাবাদী।
রাজেওয়াল বলেন, মোদী সরকারকে আমাদের দাবি মানতে হবে। আইনগুলি প্রত্যাহার করতে হবে। এর বাইরে আমরা আর কিছু চাই না। আর এক কৃষক নেতা দর্শন পাল প্রশ্ন তোলেন, 'কেন্দ্র এতদিন বলে আসছিল, নয়া আইনে কৃষকরা উপকৃত হবেন। যদি কৃষকদের উপকারই হতো তা হলে কেন্দ্র কেন আইন সংশোধনে রাজি হল?'
Post A Comment:
0 comments so far,add yours