নরেন্দ্র মোদী সরকারের মোবাইল অ্যাপ নিষিদ্ধকরণের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব হল চিন। শি চিনফিং সরকারের অভিযোগ, জাতীয় নিরাপত্তাকে অজুহাত খাড়া করে একের পর এক চিনা মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের উপর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করছে নয়াদিল্লি।
দেশের ‘সার্বভৌমত্ব এবং নিরাপত্তা’ বিঘ্নিত হতে পারে, এমন আশঙ্কায় মঙ্গলবার ৪৩টি মোবাইল অ্যাপ নিষিদ্ধ করে কেন্দ্র। তার পরেই বেজিংয়ের এই প্রতিক্রিয়া।
ঘটনাচক্রে, মঙ্গলবার যে অ্যাপগুলি নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তার বেশির ভাগই চিনা অ্যাপ এবং সেগুলি ডেটিং সংক্রান্ত। গত ১৫ জুন পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পরে এ পর্যন্ত তিন দফায় মোট ২২০টি চিনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করা হল। চিনা বিনিয়োগ রয়েছে এমন অ্যাপ ধরা হলে সংখ্যাটি আড়াইশোরও বেশি।
ভারতের এই পদক্ষেপের প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার চিন সরকারের মুখপাত্র শি রং বলেন, ‘‘জাতীয় নিরাপত্তার অজুহাতে ভারত সরকার যে ভাবে চিনের সঙ্গে সম্পর্কিত একের পর এক মোবাইল অ্যাপ নিষিদ্ধ করেছে, চিন তার বিরোধিতা করছে। আমাদের আশা ভারত তার আচরণ বদলে নিয়ে অবাধ, নিরপেক্ষ এবং বৈষম্যহীন ব্যবসার পরিবেশ সৃষ্টি করবে।’’
চিনা বিদেশ দফতরের মুখপাত্র বুধবার দাবি করেন, ভারতের এই আচরণ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউবিটিও) নির্ধারিত নীতির পরিপন্থী।

তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক সূত্রে ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে, ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৯-এ ধারায় ওই মোবাইল অ্যাপগুলিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ওই অ্যাপগুলির ব্যবহারে জাতীয় নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা এবং সার্বভৌমত্ব বিপদের মুখে পড়তে পারে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছিল ‘ইন্ডিয়ান সাইবার ক্রাইম কো-অর্ডিনেশন সেন্টার’। তারই প্রেক্ষিতে পদক্ষেপ করা হয়েছে।গত ১৫ জুন গালওয়ানে চিনা ফৌজের হামলায় ২০ জন ভারতীয় সেনার মৃত্যুর পরেই এ দেশে চীনা আপগুলির অবাধ ব্যবসায় রাশ টানতে সক্রিয় হয়েছিল কেন্দ্র। ২৯ জুন টিকটক, ইউসি ব্রাউজার, বিগো লাইভ, হেলো, শেয়ার-ইটের মতো ৫৯টি চিনা অ্যাপকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।

এর পরে ২ সেপ্টেম্বর পাবজি-সহ আলি-পে, এপিইউএস টার্বো ক্লিনার, বাইডু, ক্যাম কার্ড, সুপার ক্লিন, ফোটো গ্যালারি অ্যান্ড অ্যালবাম, লুডো অল স্টারের মতো ১১৮টি অ্যাপের উপর বিধিনিষেধ বলবৎ করা হয়।

মঙ্গলবার যে ৪৩টি অ্যাপ নিষিদ্ধ করা হয়েছে তার মধ্য রয়েছে আলি সাপ্লায়ার্স, আলিবাবা ওয়ার্কবেঞ্চ, বেটার লিভিং, আলি প্লে ক্যাশিয়ার। বিধি ভেঙে তথ্য পাচারের অভিযোগের নিষিদ্ধ করা হয় চিনা অ্যাপগুলি। নেটাগরিকদের একাংশ থেকে ‘কম্পিউটার এমার্জেন্সি রেসপন্স টিম’(সিইআরটি-ইন)  ওই অ্যাপগুলির বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা লঙ্ঘনের অভিযোগ পেয়েছে বলেও জানানো হয় কেন্দ্রের তরফে।

Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours