টেলিফোন মারফত এই ক্লাস নেওয়ার পরিকল্পনার জন্য রাজ্যজুড়ে ১০ হাজারেরও বেশি শিক্ষক শিক্ষিকা যুক্ত হতে চলেছে। প্রাথমিকভাবে নবম-দশম শ্রেণীর ক্ষেত্রে এই পরিকল্পনাটি সাফল্য পেলে আগামী দিনে অন্যান্য শ্রেণীর ক্লাস নেওয়ার ক্ষেত্রেও এই পরিকল্পনাকে কাজে লাগানো হতে পারে৷
#কলকাতা: অনলাইন নয়, সরকারি স্কুলের রাজ্যে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস নেওয়ার জন্য এবার টেলিফোনই এক অন্যতম মাধ্যম হতে চলেছে। এমনটাই পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর।এই দফতর সূত্রে খবর,  রাজ্যের ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস নেওয়ার জন্য একটি টোল ফ্রি নম্বর চালু করা হবে। সেই টোল ফ্রি নম্বরে ছাত্রছাত্রীরা প্রশ্ন করলেই সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষিকারা লাইভে সেই প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দেবেন।
টেলিফোন মারফত এই ক্লাস নেওয়ার পরিকল্পনার জন্য রাজ্যজুড়ে ১০ হাজারেরও বেশি শিক্ষক শিক্ষিকা যুক্ত হতে চলেছে। স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর ইতিমধ্যেই মধ্যশিক্ষা পর্ষদ থেকে জেলাব্যাপী এবং বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিভিন্ন  বিষয়ে তথ্য নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই পরিকল্পনা নিয়ে চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। স্কুল শিক্ষা সচিব মনীশ জৈন এই পরিকল্পনা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্যের প্রত্যেকটি জেলার স্কুল বিদ্যালয় পরিদর্শক এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদ,সিলেবাস কমিটির আধিকারিকদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করে ফেলেছেন। প্রাথমিকভাবে নবম ও দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের জন্য এই টেলিফোন মারফত ক্লাস নেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলেই রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ এবং তার জেরে চলা লকডাউনের জন্য টানা চার মাসেরও বেশি রাজ্যের স্কুল গুলি বন্ধ রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের বেসরকারি স্কুল গুলি অনলাইন ক্লাস শুরু করেছিল। কিন্তু বেসরকারি স্কুল গুলির কাছে সেই পরিকাঠামো থাকলেও রাজ্যের বেশিরভাগ সরকারি স্কুলের কাছে অনলাইনে ক্লাস করার জন্য সেই তুলনায় অনেকটাই পরিকাঠামোতে খামতি রয়েছে। বিশেষত জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলিতে বহু ছাত্র-ছাত্রীই অনলাইন ক্লাস থেকে কার্যত বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই অনলাইন ক্লাসের বিকল্প কী হতে পারে তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা চালাচ্ছিল গত কয়েকদিন ধরেই রাজ্য স্কুল শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকরা। অবশেষে টেলিফোন মারফত ক্লাস নেওয়ার পরিকল্পনা দিকে এগোচ্ছেন রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর ।
কিভাবে হবে এই টেলিফোন মারফত ক্লাস ? রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, এর জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের একটি হেল্পলাইন নম্বর বা টোল ফ্রি নম্বর দেওয়া থাকবে। সেই টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সীমাও দেওয়া থাকবে। সেই সময়সীমার মধ্যে ছাত্রছাত্রীরা ফোন করলেই যে কোন প্রশ্নের উত্তর সরাসরি পেয়ে যাবেন শিক্ষকদের থেকে। সেক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়ের ওপর ছাত্রছাত্রীরা প্রশ্ন করতে পারেন সেই বিষয়ে রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতরের ওয়েবসাইটে বিস্তারিত উল্লেখ করা থাকবে। এই পরিকল্পনা কার্যকরী করার ক্ষেত্রে রাজ্যব্যাপী ১০ হাজারেরও বেশি শিক্ষক শিক্ষিকাদের যুক্ত করা হচ্ছে। বিষয় ভিত্তিক এবং জেলা ভিত্তিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নাম বিস্তারিতভাবে ইতিমধ্যেই মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।  মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পক্ষ থেকে শুধু বাংলা মাধ্যম নয় ইংরেজি সহ অলচিকি মাধ্যমের শিক্ষকদেরও নম্বর নেওয়া হয়েছে । মূলত এই নম্বরে ফোন করলে ছাত্র-ছাত্রীদের যে বিষয়ের উপর প্রশ্ন থাকবে সেই বিষয়ে বিভিন্ন অধ্যায় এর উত্তর দিতে সেই বিষয়ের শিক্ষকরা দিয়ে দেবেন।
স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর ইতিমধ্যেই পরিকল্পনাটি ঢেলে সাজানো হচ্ছে। খুব শীঘ্রই এই পরিকল্পনাটি কার্যকরী করা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। প্রাথমিকভাবে নবম-দশম শ্রেণীর ক্ষেত্রে এই পরিকল্পনাটি সাফল্য পেলে আগামী দিনে অন্যান্য শ্রেণীর ক্লাস নেওয়ার ক্ষেত্রেও এই পরিকল্পনাকে কাজে লাগানো হতে পারে বলে স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর। নবম-দশম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদেরকে প্রাথমিকভাবে এই পরিকল্পনার মাধ্যমে ক্লাস নেওয়ার কারণ হিসেবে স্কুল শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের ব্যাখ্যা যেহেতু মাধ্যমিক পরীক্ষা আছে সেই দিকে লক্ষ্য রেখে এই দুটি শ্রেণীকে আপাতত বাছা হয়েছে এই পরিকল্পনার মাধ্যমে ক্লাস নেওয়ার জন্য। যদিও এই বিষয় নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি এবং সিলেবাস কমিটির চেয়ারম্যান।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours