বিভাগীয় প্রধান তথা অধ্যাপক সমীর কুমার সাহু প্রায়সময়ই হেনস্থা করতেন। তাঁকে নানা কুপ্রস্তাব দিত, শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য জোরাজুরি করতেন। এমনকী, তাঁর কথা না মানলে যুবতীর ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দেওয়ার হুমকি দিতেন। ক্লাসের বাকি পড়ুয়ারাও এই ঘটনা জানত।


ক্লাসের মধ্যেই কু-প্রস্তাব দিত বিভাগীয় প্রধান! কলেজেই গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা ছাত্রীর


কলেজে বিভাগীয় প্রধানের হাতেই হেনস্থার শিকার ছাত্রী। দিনের পর দিন তাঁকে মুখ বুজে সহ্য করতে হচ্ছিল নানা কু-প্রস্তাব, অশ্লীল ইঙ্গিত। শেষে সাহস জুগিয়ে কলেজের প্রিন্সিপাল ও স্থানীয় থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন যুবতী। কিন্তু কোনও পদক্ষেপই করা হয়নি। উল্টে ওই অভিযুক্ত শিক্ষক তাঁর ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দেওয়ার হুমকি দেয়। দিনের পর দিন এই হেনস্থা সহ্য করতে না পেরে কলেজেই গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করল এক পড়ুয়া। বর্তমানে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে যুবতী।


শিউরে ওঠার মতো ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশার বালাসোরে। শনিবার ওই যুবতী কলেজেই নিজের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে দেয়। দেহের ৯০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে ওই ছাত্রীর। তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল আরেক পড়ুয়া, সেও ৭০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। দুজনেরই অবস্থা অতি সঙ্কটজনক।




গত ১ জুলাই যুবতী সাহস জুগিয়ে কলেজের ইন্টারনাল কমপ্লেন কমিটিতে অভিযোগ জানান। তাঁকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল যে ৭ দিনের মধ্যে অভিযুক্ত অধ্যাপকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে। তবে তা প্রতিশ্রুতিই রয়ে গিয়েছে। ১০ দিনের বেশি সময় কেটে গেলেও অধ্যাপকের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।

এই ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন যুবতী। শনিবার ওই যুবতী ও তাঁর কিছু সহপাঠী কলেজের গেটের বাইরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন ওইশিভক্ষকের শাস্তির দাবিতে। সহপাঠীদের বক্তব্য অনুযায়ী, আচমকা ওই ছাত্রী প্রিন্সিপালের ঘরের দিকে দৌড়ে যায়। এরপরই হঠাৎ নিজের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।


অগ্নিদ্বগ্ধ অবস্থায় করিডরে জ্বালা-যন্ত্রণায় ছুটছিল ওই যুবতী। এক যুবক তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করে, কিন্তু তাঁর গায়েও আগুন ধরে যায়। পরে অনেক চেষ্টা করে আগুন নেভানো হয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় যুবতীকে। বর্তমানে এইমস ভুবনেশ্বরে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে যুবতী। ওড়িশা সরকার ছাত্রীর চিকিৎসার খরচ বহন করার ঘোষণা করেছে।

কলেজের প্রিন্সিপাল দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, ওই ছাত্রীর অভিযোগ জমা পড়েছিল। কমিটি রিপোর্ট জমা করার প্রক্রিয়ায় ছিল। শনিবার ওই ছাত্রী তাঁর ঘরে আসে এবং অভিযুক্ত শিক্ষককে ডাকার দাবি করে। তিনি তাই করেন। ওই শিক্ষক অভিযোগ অস্বীকার করে, যুবতীও তাঁর অভিযোগে অনড় ছিল। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল যুবতী। তারপরই এই ঘটনা ঘটায়।

এদিকে, গোটা ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পরই অভিযুক্ত অধ্যাপক সমীর কুমার সাহুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কলেজের প্রিন্সিপালকেও সাসপেন্ড করেছে উচ্চ শিক্ষা দফতর। ঘটনার তদন্তের জন্য ওডিশা উচ্চ শিক্ষা বিভাগের ৩ সদস্যে হাই লেভেল কমিটি গঠন করেছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours