ডিভিসির ছাড়া জলে গোটা গ্রাম জলের তলায়। গত কয়েকদিন ধরেই বন্যা পরিস্থিতি ঘাটালে। তার মধ্যেই প্রসব বেদনায় কাতরাচ্ছেন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী। কিভাবে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাবেন, ভেবে কুল পাচ্ছিলেন না স্থানীয় স্কুল শিক্ষক উত্পল মাঝি। শেষমেশ ভোর চারটে নাগাদ মহকুমা শাসককে ফোন করেছিলেন তিনি। আর তারপরই ভোরের আলো ফুটতেই জলমগ্ন গ্রামে ওই অন্তঃসত্ত্বাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে স্পিড বোট নিয়ে হাজির হল এনডিআরএফ। শনিবার সকালে এমনই ঘটনার সাক্ষী হলেন ঘাটাল মহকুমার মনসুখা গ্রামের বাসিন্দারা। শিক্ষক উত্পল মাঝির স্ত্রী বৈশাখী মাঝি নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। জানা যায়, শুক্রবার রাত থেকেই তাঁর শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। যা দেখে কি করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না উত্পল বাবু। গোটা গ্রাম জলের তলায়। এরমধ্যে কিভাবে স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যাবেন, তা নিয়ে চিন্তার অন্ত ছিলনা। রাত গভীর হতে সমস্যা আরও বেড়ে যায়। তাই কুলকিনারা না পেয়ে, সাহস করে ফোন করেন মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাসকে।
তার পরেই তাঁর গর্ভবতী স্ত্রীকে উদ্ধার করতে পৌঁছে যায় এনডিআরএফের দল। বন্যার জল পেরিয়ে অ্যাম্বুলেন্স করে ঘাটাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। উত্পল বাবু বলেন, 'মহকুমা শাসক তার সমস্যার কথা জানতে পেরেই স্ত্রী-কে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য এনডিআরএফ পাঠিয়ে দিয়েছেন। এতে অনেক উপকার হয়েছে। তবে ঘাটাল হাসপাতালে চিকিত্সার পর রবিবার দুপুরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, শারীরিক কিছু সমস্যা ছিল, তাই ভর্তি হতে হয়েছিল বৈশাখী মাঝিকে। সংবাদমাধ্যমে মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস জানিয়েছেন, 'ভোর চারটা নাগাদ হঠাত্ ফোন বেজে ওঠে।
ওপ্রান্ত থেকে উত্পল মাঝি নামে এক ব্যক্তি তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর সমস্যার কথা জানান। বুঝতে পারি, সেই মহিলাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসাটা ভীষণ জরুরি। তত্ক্ষণাত্ ফোন করে এনডিআরএফকে ওই গ্রামে যাওয়ার জন্য খবর দেওয়া হয়েছিল। তাঁরাই প্রসূতিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। আপাতত তিনি সুস্থ রয়েছেন।' এদিকে এনডিআরএফের ইন্সপেক্টর জ্যোতির্ময় দাস বলেন, 'মহকুমা শাসকের কাছ থেকে জানতে পেরে সূর্য ওঠার সময়েই পৌঁছে যাওয়া হয় ওই গ্রামে। প্রসূতি ও তার স্বামীকে নিয়ে আসা হয় স্পিড বোটে করে। ঘাটাল কোর্ট ঘাটে নামানোর পর সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।'
Post A Comment:
0 comments so far,add yours