গতবারে আমেঠি হতাশ করলেও এবারে দু-হাত ভরে দিয়েছে সনিয়া গান্ধীর ঘাঁটি রায়বরেলি। বলা যায়, মায়ের কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েই পুনরায় গো-বলয়ে দাগ কাটলেন রাহুল গান্ধী। রায়বরেলি কেন্দ্রে তাঁর প্রাপ্ত ভোট ৬ লক্ষ ৮৬ হাজার ৪৪। বিজেপি প্রার্থী দীনেশ প্রতাপ সিংকে ৩ লক্ষ ৮৯ হাজার ৩৪১ ভোটে পরাজিত করেছেন তিনি।

রাহুলের একহাতে দক্ষিণ অন্য হাতে উত্তর, জোড়া জয়ে ফুল ফর্মে 'রাগা'
রাহুল গান্ধী। ফাইল ছবি।



 নজির গড়লেন রাহুল গান্ধী। উত্তর থেকে দক্ষিণ, রায়বরেলি থেকে ওয়েনাড- একসঙ্গে দুটি কেন্দ্র থেকেই বিপুল ভোটে জয়ী হলেন রাহুল গান্ধী। রায়বরেলিতে বিজেপি প্রার্থী দীনেশ প্রতাপ সিংকে পিছনে ফেলে প্রায় ৪ লক্ষ ভোটে জয়ী হয়েছেন তিনি। আর তাঁর নিজের কেন্দ্র, কেরলের ওয়েনাডও ৩ লক্ষ ৬৪ হাজার ৪২২ ভোটে জয়ী হয়েছেন সনিয়া-তনয়। এটা নিছক নির্বাচনী-জয় নয়, রাহুল ও তাঁর দলের সম্মানের জয় বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তাই রাহুল গান্ধীকে বিপুল জয়ের জন্য শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।


কংগ্রেসের গড় হিসাবেই পরিচিত রায়বরেলি ও আমেঠি। যদিও ২০১৯-এ বিজেপি প্রার্থী স্মৃতি ইরানির কাছে পরাজিত হন রাহুল গান্ধী। তবে কেরলের ওয়েনাডে ৭ লক্ষ ভোট পেয়ে সংসদে প্রবেশ করেন রাহুল। এবারও তাঁকে খালি হাতে ফেরায়নি ওয়েনাডের মানুষ। বিরোধীদের নানা অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়ে এবারে কেবল ওয়েনাডে রাহুলের প্রাপ্ত ভোট ৬ লক্ষ ৪৭ হাজার ৪৪৫। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিআইয়ের অ্যানি রাজাকে ৩ লক্ষ ৬৪ হাজার ৪২২ ভোটে পরাজিত করেন তিনি। আর দুই কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় যারা সবচেয়ে বেশি রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে ওয়েনাডবাসীর সঙ্গে প্রতারণা করার অভিযোগ তুলেছিল, সেই বিজেপি পেয়েছে তৃতীয় স্থান।

অন্যদিকে, গতবারে আমেঠি হতাশ করলেও এবারে দু-হাত ভরে দিয়েছে সনিয়া গান্ধীর ঘাঁটি রায়বরেলি। বলা যায়, মায়ের কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েই পুনরায় গো-বলয়ে দাগ কাটলেন রাহুল গান্ধী। রায়বরেলি কেন্দ্রে তাঁর প্রাপ্ত ভোট ৬ লক্ষ ৮৬ হাজার ৪৪। বিজেপি প্রার্থী দীনেশ প্রতাপ সিংকে ৩ লক্ষ ৮৯ হাজার ৩৪১ ভোটে পরাজিত করেছেন তিনি। দীনেশ প্রতাপ সিং অবশ্য ভোটের ফল বুঝতে পেরে গণনা শেষ হওয়ার আগেই পরাজয় স্বীকার করে নিয়ে রায়বরেলির মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।


রায়বরেলি ও ওয়েনাডে একসঙ্গে বিপুল ভোটে জয় কেবল রাহুল গান্ধী বা কংগ্রেসের নির্বাচনী জয় নয়, এই দুই কেন্দ্রের ভোটের লড়াই ছিল আদতে রাহুল তথা গান্ধী পরিবারের সম্মানের লড়াই। আর সেই লড়াইয়ে দারুণভাবে জয়ী হলেন রাগা। ঠিক যেমন এক বছর আগে মোদী পদবি নিয়ে মানহানি মামলার জেরে রাহুল গান্ধীকে সংসদ থেকে বিতাড়িত করা হয়। তাঁর থেকে সরকারি বাংলোও কেড়ে নেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত অবশ্য সুপ্রিম-রায়ে পুনরায় সংসদে মাথা উঁচু করে ফিরে আসেন রাহুল। ফিরে পান সরকারি বাংলোও। এবার দুই কেন্দ্রে একসঙ্গে জয় রাহুল তথা বিরোধীদের কাছে নৈতিক জয় বলেও মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

বিশেষত, যেখানে গতবারে আমেঠিতে যাঁর কাছে রাহুল গান্ধী পরাজিত হয়েছিলেন, সেই স্মৃতি ইরানি এবারে আমেঠিতে ধরাশায়ী হয়েছেন। তাঁকে পিছনে ফেলে জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন গান্ধী পরিবার ঘনিষ্ঠ-কে.এল শর্মা। এছাড়া ইন্ডিয়া জোটও বেশ ভাল ফল করেছে। সবমিলিয়ে, এটা জনগণের রায় বলেই জানালেন কংগ্রেস হাইকম্যান্ড।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours