সোমবার সরকারি জয়গা দখল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষোভ প্রকাশের পরে এবার সরব হয়েছে চেম্বার অফ কমার্সও। এই নিয়ে তাঁরা বিস্তারিত চিঠি পাঠাতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রীকেও বলে খবর। চেম্বার অফ কমার্সের অভিযোগ, সরকারি জায়গা দখল করে পুরসভাই অনুমোদন দিচ্ছে ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করার।

১০ টাকায় দেদার বিক্রি হচ্ছে ফুটপাত! তোলা ঢুকছে পুরসভায়?
রসিদ হাতে ব্যবসায়ী


একটি হলুদ কাগজ। তাতে আবার পুরসভার স্ট্যাম্পও লাগানো রয়েছে। আর সেই রসিদ দশ টাকা দিয়ে কাটলেই ফুটপাতের একটি অংশ আপনার! বসুন না দোকান নিয়ে যতখুশি যতক্ষণ। না এটা আমরা বলছি না। ইংরেজ বাজার পুরসভার চিত্র এমনই। সেখানে কার্যত রসিদ দিয়ে তোলা আদায়ের অভিযোগ উঠছে। ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, যার দোকান যত বড় তাঁর টাকার অঙ্ক ততটাই বেশি। যেখানে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘বেআইনি হলে আমার বাড়ি ভাঙুন…’ সেখানে তাঁর দলেরই পরিচালিত পুরসভা রসিদ ছাপিয়ে সরকারি জায়গার উপর দোকান করার অনুমতি দিচ্ছে ব্যবসায়ীদের বলে অভিযোগ।


ইংরেজবাজার পুরসভা বর্তমানে তৃণমূল পরিচালিত বোর্ড পরিচালনা করে। অভিযোগ, ইংরেজবাজার পুরসভার বর্তমান তৃণমূল বোর্ডের বিরুদ্ধে কাউন্সিলর বা নেতাদের মদতেই গোটা শহরটাই বেদখল হয়ে গিয়েছে। দৌরাত্ম্য বেড়েছে জমি মাফিয়াদের। ফুটপাতে দেদার বসছে দোকান। বিক্রি হচ্ছে অবাধে। মোটা টাকায় সেই দোকান কিনে আবার ব্যবসা করতে হলে পুরসভাকে তোলা দিতে হচ্ছে ১০ টাকা করে রোজ। দোকান বড় হলে তোলার পরিমাণ অনেক বেশি হচ্ছে। এমনটাই দাবি করেছেন একাংশ ব্যবসায়ী। স্থানীয় এক দোকানদার বলেন, “পুরসভা আমার থেকে তোলা নেয়। দশটাকা করে প্রতিদিন দিতে হয়।” আরও এক দোকানদার বলেন, “আমাদের কাছে রসিদ আছে। প্রতিদিন দশ টাকা করে পুরসভাকে দিই।”

সোমবার সরকারি জয়গা দখল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষোভ প্রকাশের পরে এবার সরব হয়েছে চেম্বার অফ কমার্সও। এই নিয়ে তাঁরা বিস্তারিত চিঠি পাঠাতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রীকেও বলে খবর। চেম্বার অফ কমার্সের অভিযোগ, সরকারি জায়গা দখল করে পুরসভাই অনুমোদন দিচ্ছে ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করার। রোজ হাজার হাজার দোকান থেকে তোলাও তুলছে তারা। তাহলে ব্যবসায়ীদের দোষ কোথায়? দখল সরাতে হলে তাঁদের পুনর্বাসন দিতে হবে।


অন্যদিকে পুরসভার বিরোধী দলনেতা বিজেপির অম্লান ভাদুড়ির বক্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রী যাই বলুন, মালদহ শহরে দখলদারদের সরানো সম্ভব নয়। কারণ তাঁদের পিছনে তৃণমূলের নেতারাই আছেন।” অন্যদিকে ইংরেজবাজার পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সুমালা আগরওয়ালার অবশ্য বিষয়টি এড়িয়েই গিয়েছে। তিনি নাকি জানেনই না পুরসভা তোলা নিচ্ছে। যেখানে স্ট্যাম্প মেরে কার্যত রসিদ বানানো হয়েছে সেখানে ভাইস চেয়ারম্যান বিষয়টি জানেন না? প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। সুমালা দেবী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করে ফুটপাত খালি করার পদক্ষেপ করা হবে। যাঁরা ব্যবসা করছেন, তাঁদের ব্যবসা করার জন্য যতটুকু জায়গা দরকার সেই মতো রেখে বাকিটুকু পথচারীদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। আর তাই এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আশা করব ব্যবসায়ীরা সঙ্গ দেবেন।”
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours