গোঘাটের বালি গ্রাম পঞ্চায়েতের রাধাবল্লভপুরের আসমিনা বেগম, কোয়েল লাহা শ্যাওড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মমতা রায়, সনকা রায় লক্ষীর ভান্ডারের টাকা অন্যের অ্যাকাউন্টে চলে যাচ্ছে বারবার প্রশাসনিক দফতরে গিয়েও কোন কাজ হচ্ছে না।
চাপ আছে’, ভোটের আগে আসমিনাদের লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা যাচ্ছে অন্য অ্যাকাউন্টে! সব জেনেও চুপ ওঁরা
হুগলিতে লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা যাচ্ছেন কার অ্যাকাউন্টে?
আরামবাগ: দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা অন্যের অ্যাকাউন্টে ঢুকছে। প্রাপকরা বারবার প্রশাসনিক দফতরে লিখিত অভিযোগ করেও সুরাহা পায়নি।হুগলির গোঘাটের মুক্তারপুরে এরকম একাধিক মহিলা লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা পাচ্ছেন না। সামনে থেকে গোঘাটের মুক্তারপুরে এমনই অভিযোগ করতে আসা এক মহিলা মামতা রায়কে কিছু বলতে এসেছিলেন। কিন্তু তাঁকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গেল পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মামনি রায়। লক্ষীর ভান্ডারের টাকা অন্যত্র চলে যাওয়ায় শাসক দলের দিকে অভিযোগ তুলে সরব বিজেপি। তৃণমূল অবশ্য বলছে, এইসব ভুল ঠিক হয়ে যাবে আবেদন করলেই।
এক জেলা থেকে অন্য জেলায় লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা ঢুকছে, কোথাও পাশের গ্রাম পঞ্চায়েতে অন্যের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকছে অথচ আবেদন করার সময় ব্যাঙ্কের পাসবুকের কপি আধার কার্ডের কপি-সহ লক্ষ্মীর ভান্ডারের আবেদন করেছিলেন গ্রামের মহিলারা।
অভিযোগ, এরকম শতাধিক মহিলার লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা অন্যত্র চলে যাচ্ছে। বারে বারে লিখিত অভিযোগ জানিয়েও কোন কাজ হয়নি। গোঘাটের বালি গ্রাম পঞ্চায়েতের রাধাবল্লভপুরের আসমিনা বেগম, কোয়েল লাহা শ্যাওড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মমতা রায়, সনকা রায় লক্ষীর ভান্ডারের টাকা অন্যের অ্যাকাউন্টে চলে যাচ্ছে বারবার প্রশাসনিক দফতরে গিয়েও কোন কাজ হচ্ছে না।
এরকমই এক মহিলা বললেন, “আমার অ্যাকাউন্টের নম্বরটা দেখছি পুরোপুরি চেঞ্জ হয়ে গিয়েছে। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম আমি ভুল লিখেছি। পরে আমাকে বলা হয়, আমার অ্য়াকাউন্টে টাকা ঢুকছে। আমি তখন ভালো করে নম্বরটা দেখি, যে ওই নম্বর পুরোপুরি বদলে গিয়েছে। বাঁকুড়ার শালতোড়ের এক জনের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকছে। ২-৩ বছর ধরে ঘুরছি।” আরেক মহিলা বলেন, ” আমি ২১ মাস ধরে টাকা পাচ্ছি না। প্রথম যখন ফর্ম জমা দিই, টাকা পাইনি। টাকা যখন পাচ্ছি না, তখন একজনকে বলি। সে আমাকে দেখে বলে বৌদি তোমার টাকা বুদ্ধদেব সরেন নামে এক জনের অ্যাকাউন্টে ঢুকে যাচ্ছে। আমি যতবার দফতরে গেছি, ততবার আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছে। বিডিও দফতর থেকেও ফিরিয়ে দিয়েছি। থানাতেও জানিয়েছি। ”
এ প্রসঙ্গে বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক অলোক দোলুই বলেন, “এরকম অনেকগুলো কেস দেখেছি। লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা ভূতুড়ে অ্যাকাউন্টে ঢুকছে। মহিলারা বিডিও অফিসে গিয়েছেন। দুয়ারে সরকারেও গিয়েছে। মহিলা বিডিও অফিসেও দেখা করেন। বিডিও বলেছিলেন অ্যাকাউন্ট লক করতে হবে। কিন্তু বিডিও বলেছিলেন, একটা চাপ রয়েছে, তাই অ্যাকাউন্টগুলো লক করতে পারছি না।” তিনি ভয়ঙ্কর অভিযোগ করেন। তাঁর বক্তব্য, “শাসকদলের মদতপুষ্টই কারোর অ্যাকাউন্টে ঢুকছে। ৫-৬ ভেরিফিকেশন আমরা করেছি। তার নির্দিষ্ট তথ্য রয়েছে। সাধারণ মহিলার টাকা তাঁদের অ্যাকাউন্টে ঢুকছে। তারপর সেই টাকা তারা তুলে নিচ্ছে।”
যদিও গোঘাট এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিজয় রায় বলেন, “বৃহৎ বড় কর্মযজ্ঞ, তাতে কোথাও কিছু একটা ভুল থাকছে। আমরা প্রধানদের বার্তা দিয়েছি, কাদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকছে, সেই নথি, আর কার অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকার কথা, তার ব্যাঙ্কের ডিটেইলের নথি সংগ্রহ করে বিডিও অফিসে জমা করতে। তারপর সেখান থেকে আমরা জেলাশাসকের কাছে পাঠাব। অবশ্যই সমস্যার সমাধান হবে।”
Post A Comment:
0 comments so far,add yours