কেরিয়ারের কিছু আক্ষেপ যে থেকেই গেল! ক্রিকেটার হিসেবে যা আর মেটার নয়। রঞ্জি ট্রফিতে একবারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলা। এরপর থেকে শুধুই অপেক্ষা আর অপেক্ষা। ফাইনালে উঠলেও দ্বিতীয় ট্রফির অপেক্ষা মেটেনি। মনোজের কেরিয়ারের আক্ষেপ এবং অভিমান কি নেই? থাকাই স্বাভাবিক।
অভিমান-আক্ষেপ-প্রাপ্তি, এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে যা বললেন মনোজ তিওয়ারি
বাইশ গজ। শুধুই ব্যাট-বলে লড়াইয়ের জায়গা নয়। অনেকটা আবেগ জড়িয়ে থাকে এর সঙ্গে। জমে অনেক স্মৃতি। অবসর জীবনে সেগুলোই সম্পদ। বাংলা ক্রিকেটে একটা অধ্যায়ের সমাপ্তি হল। যেমন বর্ণময় তেমনই বিতর্কময় চরিত্র। সত্যি কথা বলতে ভালোবাসেন। স্বাভাবিক ভাবে অনেকের কাছে অপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। কিছুদিন আগেই ‘রঞ্জি ট্রফি তুলে দেওয়া উচিত’ মন্তব্যে ঝড় উঠেছিল। মনোজের আক্ষেপ নেই। বরং সত্যিটা তুলে ধরতে ভালো বাসেন। বাইশগজকে চিরতরে বিদায় জানালেন। যে বাইশগজ তাঁকে বাংলা ক্রিকেটের কিংবদন্তি করে তুলেছেন, তার সামনে নতজানু হয়ে ধন্যবাদ জানালেন। জীবনের আক্ষেপ…অভিমান…প্রাপ্তি…অপ্রাপ্তি সব নিয়েই কথা বললেন সদ্য প্রাক্তন মনোজ তিওয়ারি। এর প্রতিনিধিকে বিশেষ সাক্ষাৎকারে অনেক অপ্রিয় প্রশ্নেরও উত্তর দিলেন।
বাংলা ক্রিকেটে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের পর ‘ক্যারেক্টার’ বলতে উঠে আসে মনোজ তিওয়ারির নাম। তিনি ক্রিকেট ছাড়লেও, ক্রিকেট কি তাঁকে ছাড়তে পারবে? এটা ভবিষ্যৎ বলবে। দীর্ঘ কেরিয়ারের সমাপ্তিতে ড্রেসিংরুমের চিত্রটা কী? মনোজের কথায়, ‘ড্রেসিংরুমে সব নরম্যাল ছিল বলা যায়। কেউ একটু আবেগি হয়ে পড়েছে। বাকিরা বাস্তবটা বুঝতে পেরেছে, তারা হাসি মুখেই ছিল। সতীর্থরা অনেকেই জার্সিতে সই নিয়েছে। স্মারক হিসেবে রাখতে চায়। এরপর হাল্কা লাঞ্চ করেছি।’ এই মুহূর্ত যে প্রতিটা ক্রীড়াবিদের জীবনেই আসবে, জেনেই হয়তো অনেকে আবেগটা আটকে রাখতে পেরেছিলেন।
মনোজ তিওয়ারি এবং বিতর্ক যেন সমার্থক। অনেক ক্ষেত্রেই এমনটা হয়েছে। মনোজের তাতে আক্ষেপ নেই। পরিষ্কার বলছেন, ‘সব সময় সত্যিটা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। লোকের অপ্রিয় হয়েছি। একটা কথা মেনে চলি, আমার এই পৃথিবীতে আসার উদ্দেশ্য কী? যদি সারাজীবন চুপচাপ থাকতাম, তাহলে হয়তো ক্যারেক্টার হয়ে উঠতে পারতাম না, আমাকে নিয়ে কেউ আলোচনাও করত না। যেখানে অন্যায় হবে, আমি সেই নিয়ে কথা বলবই। তার জন্য বিতর্ক হলেও আক্ষেপ নেই।’
কেরিয়ারের কিছু আক্ষেপ যে থেকেই গেল! ক্রিকেটার হিসেবে যা আর মেটার নয়। রঞ্জি ট্রফিতে একবারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলা। এরপর থেকে শুধুই অপেক্ষা আর অপেক্ষা। ফাইনালে উঠলেও দ্বিতীয় ট্রফির অপেক্ষা মেটেনি। মনোজের কেরিয়ারের আক্ষেপ এবং অভিমান কি নেই? থাকাই স্বাভাবিক। মনোজ বলেন, ‘চার বার ফাইনালে খেলেছি। ট্রফি জেতা হয়নি। এটাই আক্ষেপ। একটা ফাইনাল ছাড়া সবকটাই জেতার মতো পরিস্থিতি ছিল। গত বছর ঘরের মাঠে ফাইনাল খেললাম। সেটায় দুঃখটা বেশি। আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ক্ষেত্রে বলতে পারি, একটা সেঞ্চুরির পর যখন আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে, সেটাকে যদি কেউ ভাঙচুর করে দেয়, ১৪টা ম্যাচ না খেলায়, সেটা খারাপ লাগারই কথা। আর তখন তো তরুণ ক্রিকেটার ছিলাম। এখন এত ভাবি না। কী পাইনি সেটা নিয়ে ভাবি না, কী পেয়েছি সেটা নিয়েই ভাবতে ভালোবাসি।’
বাংলা ক্রিকেট নিয়ে কথা হবে আর সৌরভ প্রসঙ্গ উঠবে না! এ আবার হয় নাকি? মনোজের মুখেও সেই প্রসঙ্গ, ‘দাদার সঙ্গে রেগুলার কথা হয়। দাদা আইকন। আমার যখন কঠিন সময় চলত, দাদার সহযোগিতা পেয়েছি। দাদার ব্যক্তিগত ও ক্রিকেট জীবনে প্রত্যাবর্তনের ঘটনা থেকে প্রেরণা নিয়েছি। আমার ক্রিকেট সফরে দাদার অনেক অবদান রয়েছে।’
এর পর কী? মনোজ তিওয়ারি ক্রিকেটে সদ্য প্রাক্তন। আর একটা ময়দানে এখনও রয়েছেন। রাজীতির ময়দান। মন্ত্রী মনোজ বলছেন, ‘খেলার থেকে একটু ব্রেক নেওয়ার ইচ্ছে রয়েছে। স্ত্রীর সাপোর্ট না থাকলে রাজনীতি ও ক্রিকেট একসঙ্গে হত না। এ বার পরিবারকেও বেশ কিছুটা সুযোগ দিতে চাই।’
Post A Comment:
0 comments so far,add yours