জুলাইতেই ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আমদানী-রফতানিতে লেনদেনের ক্ষেত্রে ভারতীয় মুদ্রা ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল। চলতি বছরের জুলাইয়ে, ভারতীয় মুদ্রায় লেনদেনের বিষয়ে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল ভারত। তবে, সামগ্রিকভাবে তেল রফতানিকারক দেশগুলির মধ্যে টাকাকে লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করতে দ্বিধা রয়েছে।

ডলারের দাদাগিরিকে চ্যালেঞ্জ, ভারতীয় টাকাতেই তেল বেচল আরব আমিরশাহি
প্রতীকী ছবি


নয়া দিল্লি: ডলারের দাদাগিরিকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ভারতীয় টাকার। প্রথমবার, ডলারের বদলে ভারতীয় টাকাতেই সংযুক্ত আরব আমিরশাহির কাছ থেকে অপরিশোধিত তেল কিনল নয়া দিল্লি। লেনদেনের খরচ কমানো এবং ভারতীয় মুদ্রাকে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যিক লেনদেনের মাধ্যম হিসাবে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে এটা একটা অত্যন্ত বড় পদক্ষেপ। ২০২২-এর ১১ জুলাইতেই ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আমদানী-রফতানিতে লেনদেনের ক্ষেত্রে ভারতীয় মুদ্রা ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল। তারপর, এই প্রথম আরব আমিরশাহি থেকে তেল ক্রয়ের ক্ষেত্রে টাকা ব্যবহার করল নয়া দিল্লি। এর আগেই অবশ্য কিছু কিছু ক্ষেত্রে, রাশিয়া থেকে তেল আমদানির সময় ভারতীয় টাকায় তার মূল্য চোকানো হয়েছে।

চলতি বছরের জুলাইয়ে, ভারতীয় মুদ্রায় লেনদেনের বিষয়ে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল ভারত। এরপরই, ভারতীয় মুদ্রা ব্যবহার করে, আবুধাবি ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানি থেকে দশ লক্ষ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল কিনল ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন। জ্বালানি সংগ্রহের ক্ষেত্রে এটা বড় সাফল্য বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, বেশ কিছু দেশ তেল বাদে অন্যান্য পণ্যের বাণিজ্যের ক্ষেত্রে টাকায় লেনদেনে রাজি হলেও, সামগ্রিকভাবে তেল রফতানিকারক দেশগুলির মধ্যে টাকাকে লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করতে দ্বিধা রয়েছে। টাকায় লেনদেনে খরচ বেশি হবে বলে উদ্বেগ রয়েছে তেল রফতানিকারক দেশগুলির মধ্যে। সম্প্রতি, তেল মন্ত্রকের পক্ষ থেকেই এই তথ্য দেওয়া হয়েছিল এক সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে।

জ্বালানির ক্ষেত্রে ভারত এখনও পর্যন্ত অনেকাংশেই বিদেশের উপরে নির্ভরশীল। বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম শক্তি আমদানীকারক ভারত। ভারতের মোট জ্বালানি চাহিদার ৮৫ শতাংশেরও বেশি আসে বাইরে থেকে। এই ক্ষত্রে খরচ কমানোর জন্য বহুমুখী কৌশল গ্রহণ করেছে ভারত। সবথেকে কম দামে যারা জ্বালানি দিচ্ছে, তাদের কাছ থেকে তেল সংগ্রহ করা থেকে শুরু করে, বিভিন্ন সরবরাহকারীদের থেকে তেল কেনা ইত্যাদি বেশ কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। রাশিয়া থেকে সস্তায় তেল আমদানি করে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বাঁচিয়েছে ভারত। এই কৌশলেরই অংশ হিসেবে ডলারের পরিবর্তে টাকায় বাণিজ্যিক লেনদেন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নয়া দিল্লি। টাকাকে ডলারে রূপান্তরিত করে লেনদেন করতে গেলে, ভারতের খরচ অনেকটাই বেড়ে যায়। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে, ভারত ২৩ কোটি ২৭ লক্ষ টন অপরিশোধিত তেল আমদানি করার জন্য ১৫৭.৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছিল।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours