পুরনো শরিকদের পাশাপাশি আওয়ামি লিগের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে কিছু নতুন দলও। সেই নতুন দলগুলির সঙ্গেও বৈঠক করেছেন শেখ হাসিনা। কিন্তু পুরনো ১৪ শরিককে এখনও ডাকেননি বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রী। তাই স্বাভাবিকভাবেই সংশয়ে রয়েছে শরিক দলগুলি।

Bangladesh Election 2024: ৪০ বছরের জোটসঙ্গীদের বাদ দিয়ে কি একাই নির্বাচনে লড়বেন শেখ হাসিনা?
বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবন (ফাইল ছবি)

ঢাকা: দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে, এমনকি যখন ক্ষমতায় ছিল না, সেই সময়ও বাংলাদেশের শাসক দল আওয়ামি লিগের সঙ্গী ছিল ১৪টি শরিক দল। কিন্তু, ২০২৪-এর নির্বাচনে কি শেখ হাসিনার দল শরিকদের বাদ দিয়ে এক-একাই লড়বে? প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ, ইতিমধ্যে বাংলাদেশের তিনশটি আসনেই প্রার্থী ঘোষণা করেছে আওয়ামি লিগ। এর পাশাপাশি সব আসনেই ডামি প্রার্থী দেওয়ার জন্য দলের নেতা-কর্মীদের নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শরিকদের জেতা আসনগুলিতেও দলীয় প্রার্থী এবং এই ডামি প্রার্থী দেওয়ায় ধোঁয়াশায় পড়েছে শরিক দলগুলি। আসন ভাগাভাগি নিয়ে চাওয়া-পাওয়ার হিসাব মিলছে না তাদের। সকলেই তাকিয়ে বৃহস্পতিবারের দিকেই। এদিনই, মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ।

শাসক জোটের সবথেকে বড় শরিক দল আওয়ামি লিগ। কিন্তু, শরিকদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে এখনও পর্যন্ত আলোচনার কোনও উদ্যোগ নেয়নি এশখ হাসিনার দল। তাই স্বাভাবিকভাবেই সংশয়ে রয়েছে শরিক দলগুলি। ১৪ পুরনো শরিকদের পাশাপাশি আওয়ামি লিগের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে কিছু নতুন দলও। সেই নতুন দলগুলির সঙ্গেও বৈঠক করেছেন শেখ হাসিনা। কিন্তু পুরনো ১৪ শরিককে এখনও ডাকেননি বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রী।

বর্তমানে বাংলাদেশ সংসদে জোট শরিকদের সাতটি আসন রয়েছে। এর মধ্যে ওয়ার্কার্স পার্টির রয়েছে তিনটি আসন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের ২টি, তরীকত ফেডারেশনের ১টি এবং জাতীয় পার্টির ১টি। পাশাপাশি প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক বি চৌধুরীর দল, বিকল্পধারা বাংলাদেশও গত তিনটি নির্বাচনে আওয়ামি লিগের সঙ্গে জোট বেঁধেই নির্বাচনে লড়ছে। বর্তমান সংসদে তাদেরও ২টি আসন রয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত, এই দলগুলির কারও সঙ্গেই বৈঠকের উদ্যোগ নেয়নি আওয়ামি লিগ। এই হতাশা ও ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে শরিক দলগুলির মধ্যে।

তবে আওয়ামি লিগ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় পার হওয়ার পরই, জোট শরিকদের সঙ্গে আসন সমঝোতার উদ্যোগ নেওয়া হবে। ১৭ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিনের আগেই, পরিস্থিতি অনুযায়ী কাকে কোন আসনে ছাড়া হবে, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। অবশ্য, আওয়ামি লিগের দাবি, নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক করতে শরিক দলগুলিকে তারা সমঝোতা হওয়া আসনগুলির বাইরেও, সামর্থ্য অনুযায়ী সর্বোচ্চ সংখ্যক আসনে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে উৎসাহ দিচ্ছে।

আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘৩০০ আসনেই আওয়ামি লিগের প্রার্থী থাকবে। তবে, আসন সমঝোতা হলে জোট শরিকদের কিছু আসন ছেড়ে দেওয়া হবে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে শরিকদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির বিষয়টি সমন্বয় করা হবে।’ ১৪ জোট শরিক আবশ্য বলছে, আওয়ামি লিগের অবস্থান পরিষ্কার নয়। তারা শরিকদের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই যখন সিদ্ধান্ত নিয়ে নিচ্ছে। আসন সমঝোতা নিয়ে তাদের তরফে এখনও পর্যন্ত বসার কোনও উদ্যোগও নেওয়া হয়নি। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, “আগে থেকেই সিদ্ধান্ত রয়েছে জোট বেঁধে নির্বাচনে যাবে ১৪ দল। যদিও তা নিয়ে আওয়ামি লিগের উদ্যোগ দেখছি না।” জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, “যে কোনও সময়ই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ১৪ শরিক দলের বৈঠক হবে। সেখানেই সব বিষয়ে আলোচনা হবে।”
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours