বাঁকুড়া জেলায় সরকার পোষিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা সাড়ে তিন হাজারের উপরে। স্কুলগুলিতে প্রায় ২ লক্ষ ৫৫ হাজারের বেশি ছাত্র ছাত্রী পড়াশোনা করে।

মালদহে স্কুলের ভিতর মুদির দোকান চালানোর অভিযোগ উঠেছে। মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণায় স্কুলের বেহাল দশা সামনে এসেছে ইতিমধ্যেই। যে কোনও সময় স্কুলবাড়িটি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা। এরইমধ্যে বাঁকুড়াতেও (Bankura) সামনে এল অনেকটা একই ছবি। প্রাথমিক স্কুল ভবনের ভগ্নদশা। স্কুল ভবনের বেহাল অবস্থায় আতঙ্কে ভুগছেন শিক্ষক শিক্ষিকা থেকে পড়ুয়া ও অভিভাবকরা। তবে জেলা বিদ্যালয় সংসদ বলছে তহবিল নেই। তাই কাজে হাত লাগাতে পারছে না।

বাঁকুড়া জেলায় সরকার পোষিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা সাড়ে তিন হাজারের উপরে। স্কুলগুলিতে প্রায় ২ লক্ষ ৫৫ হাজারের বেশি ছাত্র ছাত্রী পড়াশোনা করে। কম বেশি সবক’টি স্কুলই ৩০ থেকে ৪০ বছরের পুরনো। এই স্কুলগুলির মধ্যে কিছু স্কুলে নতুন ভবন তৈরি হলেও বেশিরভাগেরই ক্লাস চলে পুরনো ভবনে।

বহু ক্ষেত্রে পুরনো ভবনের অবস্থা খারাপ বলে অভিযোগ। বাঁকুড়া শহরের বেলগড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় বা গোপীনাথপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চেহারা সামগ্রিকভাবে জেলার সরকার পোষিত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলির বেহাল দশাকেই তুলে ধরে বলে অভিযোগ করছেন অভিভাবকরা।

বাঁকুড়া শহরে প্রশাসনের নাকের ডগায় থাকা এই দু’টি বিদ্যালয়ের দেওয়াল ও ছাদ জুড়ে বিশাল ফাটল দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ। বর্ষায় ক্লাসরুমের ছাদ থেকে জল পড়ে বলে অভিযোগ। মাঝেমধ্যে চাঙড় খসে পড়ার অভিযোগও ওঠে।

শিক্ষক শিক্ষিকাদের দাবি, বারবার স্কুল ভবনের বেহাল ছবির কথা তুলে ধরা হয়েছে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদে। তবে তাতে কোনও কাজ হয়নি। বাঁকুড়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের দাবি, জেলার ৪৫টি সার্কেলের মোট সাড়ে ৩০০ বিদ্যালয়ের ভবন সংস্কার প্রয়োজন। তালিকাও তৈরি হয়ে রয়েছে। কিন্তু প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের তহবিলে টান থাকায় কাজে হাত দেওয়া যাচ্ছে না।

প্রাথমিক শিক্ষিকা রুমা চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, “স্কুল থেকে কিছু ভেঙে পড়লে ওদের মনেও ভয় তৈরি হবে। স্কুল নাও আসতে পারে। অভিভাবকরা ভয় পেয়ে না পাঠাতে পারেন। করোনার জন্য ইতিমধ্যেই ওরা অনেকটা পিছিয়ে গিয়েছে। আর কোনও কারণে ওরা পিছিয়ে পড়ুক আমরা চাই না।”

জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ সভাপতি বসুমিত্রা সিংহ বলেন, “বাচ্চারা পড়াশোনা করতে আসে। সব ডিপিএসসির পড়ুয়া। আমারও ওদের জন্য চিন্তা আছে। আমার যতটা করণীয় সবটা করব। অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলেই আমার মনে হচ্ছে। কিন্তু এই মুহূর্তে আমার হাতে ফান্ড নেই। এই কাজ করতে গেলে টাকা দরকার। বহু স্কুল থেকেই আবেদন এসেছে। আমার হাতে ফান্ড নেই। আমি জেলাশাসকের কাছে গিয়ে আর্থিক সাহায্য চাইব।”
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours