রাজ্যের বহু স্কুলেই প্রধান শিক্ষক বা প্রধান শিক্ষিকার পদ খালি রয়েছে। ওই স্কুলগুলিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধানরাই দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। বহু বছর ধরে পদ শূন্য থাকার পরেও প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকা পদে নিয়োগ হয়নি কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রসঙ্গত, এমনই একটি ঘটনায় শুক্রবার হাওড়ার একটি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায়। ওই স্কুলে ১২ বছর ধরে প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য ছিল। আদালতের নির্দেশ, হাওড়ার ওই স্কুলে যত দিন না স্থায়ী প্রধান নিযুক্ত হচ্ছেন. ওই স্কুলেরই অন্য কোনও শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত প্রধানের দায়িত্ব সামলাবেন।

শিক্ষা দফতর সূত্রের দাবি, উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের একটি স্কুলেও দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষিকার পদ খালি রেখে দেওয়ার কথা জানা গিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, প্রধান শিক্ষিকা পদে নিয়োগ এবং উত্‍সশ্রী পোর্টালের মাধ্যমে বদলি শুরু হওয়ার পরেও কেন ওই স্কুলগুলিতে কোনও স্থায়ী প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকা নিয়োগ হচ্ছে না? এর পিছনে শিক্ষা দফতরের এবং স্কুলের একাংশের কোনও স্বার্থ রয়েছে কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে।

শিক্ষা দফতরের একাংশের দাবি, বহু ক্ষেত্রেই প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকার পদ যে শূন্য তা স্কুল সার্ভিস কমিশনকে জানানো হচ্ছে না। সাধারণত, জেলা স্কুল পরিদর্শকের মাধ্যমে ওই তথ্য কমিশনের কাছে পৌঁছনোর কথা। অ্যাডভান্সড সোসাইট অব হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস-এর সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতির বক্তব্য, ''ব্যক্তিগত স্বার্থেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এবং জেলা স্কুল পরিদর্শকদের অনেকে স্কুলে স্থায়ী প্রধান নিয়োগ আটকাচ্ছেন।'' সরকারি স্কুলের শিক্ষক সংগঠনের নেতা সৌগত বসুর মতে, স্থায়ী প্রধান না-থাকায় স্কুলের প্রশাসনিক কাজের ক্ষতি হচ্ছে। এই অভিযোগগুলি ঠারেঠোরে মেনে নিচ্ছেন শিক্ষা দফতরের একাংশও। তাদের বক্তব্য, বহু ক্ষেত্রেই স্কুলে স্থায়ী প্রধান নিয়োগ আটকাতে মামলাও করা হচ্ছে। সম্প্রতি বারাসতের একটি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা প্রধান শিক্ষক পদ নিয়ে মামলা করেছেন বলে খবর। অনেকেরই অভিযোগ, এই ধরনের আইনি জটিলতা তৈরি হওয়ায় ভারপ্রাপ্ত প্রধানেরাই স্কুলের শীর্ষ পদে বসে থাকছেন। ইচ্ছাকৃত ভাবেই এই জটিলতা তৈরি হচ্ছে কি না, প্রশ্ন উঠেছে। তবে শিক্ষা দফতরের এক কর্তার বক্তব্য, জেলা স্কুল পরিদর্শকের মাধ্যমে শূন্য পদ জানানোর বদলে এখন একটি পোর্টাল খোলা হয়েছে। সেখানেও কোন কোন স্কুলের প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকার শূন্য পদ খালি রয়েছে তা দেখা যাবে। উত্‍সশ্রী পোর্টালের বদলির মাধ্যমেও নিয়োগ হচ্ছে। সম্প্রতি নিউ ব্যারাকপুরের একটি গার্লস স্কুলে নতুন প্রধান শিক্ষিকা নিযুক্ত হয়েছেন। শিক্ষা দফতরের ওই কর্তার বক্তব্য, যে স্কুলগুলিতে আইনি জটিলতা তৈরি হয়েছে সেগুলিও দ্রুত নিষ্পত্তির চেষ্টা করা হবে।

Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours