ভারত ১ কোটি কোভিড ভ্যাকসিন ডোজ প্রদানের মাইলফলক স্পরশ করেছিল শুক্রবার। ১৬ অগাস্টের রেকর্ড ভেঙে শুক্রবার ১ কোটি ৩ লক্ষ ৩৫ হাজার ২৯০ ডোজ করোনা টিকা প্রদান করা হয়েছিল দেশে। কিন্তু দেশকে দ্রুত করোনামুক্ত করতে হলে আরও গতি বাড়াতে হবে ভ্যাকসিনের। ৩১ ডিসেম্বরের আগে করোনামুক্ত করতে হলে আরও কত করোনা ডোজ প্রয়োজন, তা নিয়েই চলছে চর্চা।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং চিকিত্সকরা আশঙ্কা করছেন, সেপ্টেম্বরে দেশে তৃতীয় কোভিড ঢেউ আঘাত হানতে পারে। তাই যতটা সম্ভব দ্রুত জনগণকে টিকা দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কেন্দ্রীয় সরকারের আশ্বাস অনুযায়ী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে পুরো প্রাপ্তবয়স্ক জনতাকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগোচ্ছে দেশ।
কোভিড মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই করার একমাত্র উপায় হল টিকা প্রদান। এ ছাড়া জন্য অন্য কোন চিকিত্সা নেই। গবেষণায় দেখা গেছে যে, শুধুমাত্র সম্পূর্ণ কোভিড ভ্যাকসিনেশনই একজন ব্যক্তিকে ভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকরভাবে লড়াই করতে সক্ষম করে।
দেশে প্রায় ৯৪ কোটি প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যা রয়েছে এবং তাদের সম্পূর্ণরূপে টিকা দেওয়ার জন্য ১৮৮ কোটি কোভিড ভ্যাকসিনের ডোজ প্রয়োজন। ভারতে তিনটি কোভিড ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ চলছে। ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট দ্বারা কোভিশিল্ড, ভারত বায়োটেক দ্বারা কোভ্যাক্সিন এবং রাশিয়ান ভ্যাকসিন স্পুটনিক ভি প্রদান করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, দেশটি এখন পর্যন্ত ৬২.২৯ কোটি ভ্যাকসিন ডোজ দেওয়া হয়েছে, যা অর্ধেকেরও বেশি। ৫১ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি কমপক্ষে একটি ডোজ পেয়েছেন। এই ৫১ শতংশ ব্যক্তির মধ্যে ২৯.৫৫ শতাংশ ব্যক্তি দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন, যা মোট প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার ১৫ শতাংশ।
এর মানে হল, আগামী ১২৬ দিনের মধ্যে অর্থাত্ ২৮ আগস্ট থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতকে ১২৫.৭৫ কোটি ভ্যাকসিন ডোজ প্রয়োগ করতে হবে সম্পূর্ণ প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীকে টিকা দেওয়ার জন্য। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য প্রতিদিন ১ কোটি ভ্যাকসিন ডোজ দিতে হবে।
৭ অগাস্ট কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জাতির উদ্দেশে বলা হয়েছিল 'মেড ইন ইন্ডিয়া' ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড এবং কোভাক্সিনের কমপক্ষে ১৩৬ কোটি ডোজ দেবে। ভ্যাকসিন তৈরির মাসিক লক্ষ্যমাত্রা হল- অগাস্টে ২৫.৬৫ কোটি, সেপ্টেম্বরে ২৬.১৫ কোটি, অক্টোবরে ২৮.২৫ কোটি, নভেম্বরে ২৮.২৫ কোটি এবং ডিসেম্বরে ২৮.৫ কোটি ডোজ।
এদিকে ভারতীয় ফার্মাসিউটিক্যাল ফার্ম জাইডুস ক্যাডিলা থেকে এবং রাশিয়ান স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিনের ভারতীয় উত্পাদনের মাধ্যমে কমপক্ষে ৫ কোটি ভ্যাকসিন পাবে ভারত। জাইডুস ক্যাডিলার তিন-শট কোভিড ভ্যাকসিনকে জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কোম্পানি আশা করছে এই বছর কমপক্ষে ২.৫ কোটি ভ্যাকসিন ডোজ তৈরি করবে। তিন-শটের ভ্যাকসিন হওয়ায় এটি প্রায় ৮৩ লক্ষ ব্যক্তিকে সম্পূর্ণরূপে টিকা দিতে সক্ষম হবে।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours