ডিপ্রেশনে থেকেও জয়ী হওয়া এক জলন্ত উদাহরণ গায়িকা ইমন চক্রবপর্তী। একটা সময় অসম্ভব খারাপ সময় দিয়ে গিয়েছেন এই গায়িকা। তাঁর জীবনের ঘটে যায় একের পর-এক বিপর্যয়। সবটাকে জয় করেছেন ইমন। কিন্তু কেন এত 'নিম্নচাপ' ছিল গায়িকার? কেন তিনি জীবনের যবনিকা পতন ঘটাতে চেয়েছিলেন?
ইমনের সুইসাইড নোট! লেখেন, 'আজই আমার শেষ দিন...'
২০১৬ সালে ছবিতে গান গেয়ে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন বাঙালি গায়িকা ইমন চক্রবর্তী। সেটিই ছিল তাঁর প্রথম গান। সবচেয়ে অল্প বয়সে প্রথম ছবিতে গান গেয়েই পুরস্কার পাওয়া ইমনের এটা একটা বিরাট বড় কৃতিত্ব। গায়ক এবং সঙ্গীত পরিচালক অনুপম রায় তাঁকে গান গাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন ‘প্রাক্তন’ ছবিতে। তাঁর আগেও ইমন গান গাইতেন। গানের ভিডিয়ো পোস্ট করতেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেখান থেকেই ইমনের গান শুনে তাঁকে ছবিতে গান গাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন অনুপম। হাতের চাঁদ পাওয়ার মতো বিষয় ছিল ইমনের কাছে। ছুট্টে গিয়েছিলেন রেকর্ডিং স্টুডিয়োতে। তারপর বাকিটা ইতিহাস। গানটি ছিল ‘তুমি যাকে ভালবাসো’। গানটি এত সুন্দর গেয়েছিলেন ইমন যে, তাঁকে লহমায় সকলে ভালবাসতে শুরু করে দেন। তারপর থেকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি গায়িকাকে। কিন্তু এই ইমনের জীবনটাই ছিল কাঁটায় পরিপূর্ণ। একবার একটি মোটিভেশনাল মঞ্চে এসে জীবনের কালো অধ্যায় সম্পর্কে অকপট কিছু কথা বলেছিলেন ইমন। নিয়মিত সুইসাইড নোট লিখতেন তিনি। নিজের জীবনটাকে শেষ করে দিতে চেয়েছিলেন এই গায়িকা।
২০১৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ইমনের জীবনে ঘটে যায় বিরাট ভূমিকম্প। মাকে তিনি প্রাণের চেয়েও বেশি ভালবাসেন। সেই মা হঠাৎ চলে যান ইমনের জীবন থেকে। মা চলে যাওয়ার পর থেকে ইমনের জীবন হয়ে ওঠে কাঁটায় পরিপূর্ণ। মা যতদিন বেঁচে ছিলেন, মেয়েকে সকল কটাক্ষ থেকে রক্ষা করেছিলেন। বাড়িতে বসে ইমন যখন ঘণ্টার পর-ঘণ্টা গানের রেওয়াজ করতেন, পাড়া-প্রতিবেশীরা বলতেন, “কন্যা কি লতা মঙ্গেশকর হবে, সারাক্ষণ হা হা গান করে।” বাবা-মা এবং যৌথ পরিবারের সকল সদস্য তাঁকে সব কটাক্ষ থেকে রক্ষা করেছিলেন। মায়ের মৃত্যুর পর বাস্তবের মুখোমুখি হয়েছিলেন ইমন। বন্ধুবান্ধব, এমনকী ইমনের তৎকালীন প্রেমিকও হাত ছেড়ে দিয়েছিলেন। ব্রেকআপ হয়েছিল গায়িকার। ডিপ্রেশনে চলে গিয়েছিলেন ইমন। ডাইরির পাতা খুলে নিয়মিত সুইসাইড নোট লিখতে। লিখতেন, “আজই আমার শেষ দিন। এই মুহূর্তটা আমার জীবনের শেষ মুহূর্ত।”
Post A Comment:
0 comments so far,add yours