এতদিন পতঞ্জলীর বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপনের মামলায় নিয়মিত সুপ্রিম ধমক খেয়েছেন রামদেব এবং তার সহযোগী বালকৃষ্ণ। এবার হঠাতই ঘুরে গেল খেলা। বুধবার (৮ মে), ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন বা আইএমএ-কে ভর্ৎসনা করল বিচারপতি হিমা কোহলি এবং বিচারপতি এ আমানুল্লাহর বেঞ্চ।


ঘুরে গেল রামদেব মামলা, এবার সুপ্রিম তিরস্কারের মুখে ডাক্তাররাই
এতদিন ধমক খেয়েছেন রামদেবরা, এবার খেলেন ডাক্তাররা


পতঞ্জলী মামলায় হঠাতই ঘুরে গেল খেলা। এতদিন পতঞ্জলীর বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপনের মামলায় নিয়মিত সুপ্রিম ধমক খেয়েছেন রামদেব এবং তার সহযোগী বালকৃষ্ণ। দুজনেই বেশ কয়েকবার আদালতের সামনে ক্ষমা চেয়েছেন। কিন্তু, আদালত তাদের ক্ষমা প্রত্যাখ্যান করেছে। শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, সংবাদমাধ্যমে বড় বড় বিজ্ঞাপন দিয়েছেন তাঁরা। আদালতে চলা মামলা সম্পর্কেও তাঁরা সংবাদমাধ্যমে মন্তব্য করেছেন। তাই ক্ষমা চাইতে হবে সংবাদমাধ্যমেই। পরে, আদালতের নির্দেশ মেনে সংবাদমাধ্যমেই ক্ষমা প্রার্থনা করেছিলেন রামদেবরা। বুধবার (৮ মে), একই অপরাধে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিমা কোহলি এবং বিচারপতি এ আমানুল্লাহর বেঞ্চ ভর্ৎসনা করল ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন বা আইএমএ-কে।


সম্প্রতি, আইএমএ সভাপতি আরভি অশোকান, সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে একটি সাক্ষাত্কার দেন। সাক্ষাৎকারে তিনি পতঞ্জলী মামলার বিষয়ে মন্তব্য করেছিলেন। এই প্রেক্ষিতে আরভি অশোকানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পতঞ্জলি আয়ুর্বেদের ম্যানেজিং ডিরেক্টর বালকৃষ্ণ। তিনি দাবি করেন, ওই বিবৃতি দিয়ে আদালতের কার্যক্রমে সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছেন অশোকান। এই বিষয়ে এদিন বিচারপতি হিমা কোহলি বলেন, “আপনারা বলছেন অপর পক্ষ (পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ) আপনাদের ওষুধের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর প্রচার চালাচ্ছে, কিন্তু আপনারা কি করছেন?”

আইএমএ-এর পক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট আইনজীবী পিএস পাটওয়ালিয়া। তিনি জানান, ওই সাক্ষাৎকারে অধিকাংশ সময়ই অশোকান আদালতের প্রশংসাই করেছেন। কিন্তু এক সময়, তিনি একটি ‘লিডিং কোয়েশ্চন’ (যে ধরনের প্রশ্ন উত্তরদাতার কাছ থেকে একটি নির্দিষ্ট উত্তর বের করে আনে)-এর ফাঁদে পড়ে যান। এই ‘নিষ্পাপ উত্তরে’ সন্তুষ্ট হয়নি আদালত।


বিচারপতি আমানুল্লাহ বলেন, “দেখুন তিনি (আইএমএ সভাপতি) নিজের কী ক্ষতি করেছেন! আমরা আপনাকে একটা সুযোগ দিয়েছি, এখন দেখা যাক।” বিচারপতি হিমা কোহলি বলেন, “একটা বিষয় পরিষ্কার করে দেওয়া যাক। এই আদালত কারও পিঠ চাপড়ানি আশা করে না। এই আদালত ইট-পাটকেলও খেয়েছে। আমাদেরও কাঁধ চওড়া।” জবাবে পাটওয়ালিয়া জানান, আইএমএ সভাপতি তাঁর মন্তব্যের জন্য দুঃখিত। তিনি বলেন, “তিনি বুঝতে পেরেছেন, তাঁর মুখ বন্ধ রাখা উচিত ছিল।” আদালত কিন্তু এতেও গলেনি। বেঞ্চ সাফ জানিয়ে দেয়, “আদালতের মতামত সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য।”

এই মামলার সূত্রপাত হয় আইএমএ-র এক আবেদনের ভিত্তিতে। রামদেব ও বালকৃষ্ণের সংস্থার বিজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে মামলার করেছিলেন তাঁরা। আইএমএ অভিযোগ করে, অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিমূলক প্রচার করা হয়েছে পতঞ্জলীর বিজ্ঞাপনে। আইএমএ আরও বলেছিল, পতঞ্জলীর বিজ্ঞাপনে ক্রমাগত পদ্ধতিগতভাবে ভুল তথ্য প্রচার করা হয়। পতঞ্জলি পণ্যগুলির ব্যবহার করে, নির্দিষ্ট কিছু রোগ নিরাময় হয় বলে, মিথ্যা দাবি করা হয়।


Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours