বাইরে থেকেই বড়মার ঘরে প্রণাম সেরে ছলছল চোখে দিল্লিযাত্রা মমতাবালার। চোখের জল ফেলতে ফেলতে বললেন, 'আমার জীবনের সম্বল চোখের জল। অসহায় মানুষ আমি। আজ বুঝলাম, বিধবা হওয়ার যন্ত্রণা কতটা ভয়াবহ। এই আধুনিক যুগে এসেও আমাকে সেটা ভোগ করতে হচ্ছে।'
অসহায় মানুষ আমি, আজ বুঝলাম বিধবা হওয়ার যন্ত্রণা', কাঁদতে কাঁদতে সাংসদ হওয়ার জার্নিতে মমতাবালা
মমতাবালা ঠাকুর
বনগাঁ: রাজ্যসভার সাংসদ পদে শপথ নিতে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিলেন মমতাবালা ঠাকুর। কিন্তু এই আনন্দের মুহূর্তেও, চোখের জল ফেলতে ফেলতেই ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়ি ছাড়লেন বড়মা বীনাপানি দেবীর পুত্রবধূ মমতাবালা। বড়মার ঘরের বাইরে তালা বন্ধ। ভিতরে যাওয়ার উপায় নেই। তাই বাইরে থেকেই বড়মার ঘরে প্রণাম সেরে ছলছল চোখে দিল্লিযাত্রা মমতাবালার। চোখের জল ফেলতে ফেলতে বললেন, ‘আমার জীবনের সম্বল চোখের জল। অসহায় মানুষ আমি। আজ বুঝলাম, বিধবা হওয়ার যন্ত্রণা কতটা ভয়াবহ। এই আধুনিক যুগে এসেও আমাকে সেটা ভোগ করতে হচ্ছে।’
শুধু বড়মার ঘরেই নয়, এমনকী ঠাকুরবাড়িতে নিজের ঘরেও ঢুকতে পারছেন না বলে দাবি মমতাবালার। আজ সাংসদ পদে শপথ নিতে যাওয়ার সময় নিজের জুতোও পায়ে গলাতে পারেননি বলে দাবি তাঁর। জানালেন, তিনি মেয়ের জুতো পায়ে দিয়ে যাচ্ছেন। ঠাকুরবাড়ির এই পরিস্থিতির বিষয়ে সুযোগ পেলে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছেও শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে নালিশ জানাতে চান তিনি।
বড়মা বীনাপানি দেবীর ঘরকে কেন্দ্র করে ঠাকুরবাড়ির মধ্যে বিভাজন আরও স্পষ্ট হয়েছে। একদিকে বড়মা বীনাপানি দেবীর নাতি শান্তনু ঠাকুর। মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরের পুত্র শান্তনু বর্তমানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপির বিদায়ী সাংসদ এবং এবার বনগাঁর পদ্ম প্রার্থী। অন্যদিকে বীনাপানি দেবীর পুত্রবধূ তথা কপিলকৃষ্ণ ঠাকুরের স্ত্রী মমতাবালা ঠাকুর। তাঁকে এবার রাজ্যসভার জন্য মনোনীত করেছে তৃণমূল। সম্প্রতি বড়মার ঘর নিয়ে ঠাকুরবাড়ির এই দুই মুখের মধ্যে ঠোকাঠুকি শুরু হয়েছে।
আজ রাজ্যসভার সাংসদ পদে শপথ নিতে যাওয়ার আগে বড়মার ঘরে ঢুকতে না পারার আক্ষেপে কেঁদে ফেললেন মমতাবালা। বললেন, ‘আমার বলার কিছু নেই। জীবনে যা কিছু করেছি, সব ক্ষেত্রে শাশুড়ির ঘরে প্রণাম করে গিয়েছি। আমার জীবনে হয়ত এটা সবথেকে বেদনাদায়ক সময়, আজ বড়মার ঘরে প্রণাম করে যেতে পারলাম না। তবে বড়মা যেখানেই থাকুন না কেন… আমি মনে করি মা আমাকে আশীর্বাদ করবেন।’
Post A Comment:
0 comments so far,add yours