জানা গিয়েছে, প্রাচীনকালে যেভাবে একের পর এক পাথর সাজিয়ে মন্দির তৈরি করা হত, সেই পদ্ধতি অনুসরণ করেই রাম মন্দিরও তৈরি করা হয়েছে। একে নাগারা শৈল্প রীতি বলে। খাজুরাহো মন্দির, সোমনাথ মন্দির ও কোনার্কের মন্দির এইভাবেই তৈরি হয়েছে এবং তা এখনও অক্ষত রয়েছে।
ভূমিকম্প হোক বা বন্যা, হাজার বছরও কোনও বিপর্যয় টলাতে পারবে না রাম মন্দিরকে!
রাম মন্দিরের নির্মাণকাজ চলছে।
অযোধ্যা: দেশজুড়ে উন্মাদনার শেষ নেই রাম মন্দির(Ram Mandir)-কে ঘিরে। রাত পোহালেই উদ্বোধন হতে চলেছে অযোধ্যার রাম মন্দিরের (Ayodhya Ram Mandir)। এই মন্দিরের পিছনে যেমন অনেক ইতিহাস রয়েছে, তেমনই নতুন যে রাম মন্দির তৈরি হয়েছে, তাতেও স্থাপত্যকীর্তির নানা প্রমাণ রয়েছে। অযোধ্য়ায় যে রাম মন্দির তৈরি হয়েছে, তা আগামী হাজার বছরেও কোনও ক্ষতি হবে না। ভূমিকম্প থেকে বন্যা- কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ই (Natural Calamity) এক চুল নড়াতে পারবে না রাম মন্দিরকে।
অযোধ্যায় যে রাম মন্দির তৈরি করা হয়েছে, তাতে লোহা, ইস্পাত বা সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়নি। শুধুমাত্র পাথর দিয়ে এই মন্দির তৈরি করা হয়েছে। সিমেন্টের বাঁধুনি ছাড়া কীভাবে তৈরি হল রাম মন্দির?
জানা গিয়েছে, প্রাচীনকালে যেভাবে একের পর এক পাথর সাজিয়ে মন্দির তৈরি করা হত, সেই পদ্ধতি অনুসরণ করেই রাম মন্দিরও তৈরি করা হয়েছে। একে নাগারা শৈল্প রীতি বলে। খাজুরাহো মন্দির, সোমনাথ মন্দির ও কোনার্কের মন্দির এইভাবেই তৈরি হয়েছে এবং তা এখনও অক্ষত রয়েছে।
রামমন্দিরের ডিজাইন ও কনস্ট্রাকশনের দায়িত্বে ছিলেন সতীশ সহস্রবুদ্ধে। তিনি জানিয়েছেন, নদীর উপর সেতু তৈরির জন্য যে পিলার তৈরি করা হয়, সেইভাবেই রাম মন্দিরের পিলার তৈরি হয়েছে। বৃষ্টির জলেও মন্দিরের যাতে কোনও ক্ষতি না হয়, তার জন্য বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।
আইআইটি কানপুরের প্রাক্তনী সহস্রবুদ্ধে জানান, মূলত তিনটি কারণে আগামী হাজার বছর রাম মন্দিরের কোনও ক্ষতি হবে না। প্রথমত, লোহা নয়, শুধু ধাপে ধাপে লোহার পাথর ব্যবহার করে, দক্ষিণ ভারতের মন্দিরশৈলি অনুযায়ী রাম মন্দির নির্মাণ হয়েছে। তাই আগামী এক হাজার বছরেও মন্দিরের গঠনে বিশেষ কোনও বদল হবে না। শুধু মন্দিরের ভিত তৈরি করতেই ১৭ হাজার গ্রানাইট পাথর লেগেছে। গোটা মন্দির তৈরিতে লাগছে দেড় লক্ষ পাথর। পাথরের ওজন ২ হাজার ৮০০ কিলো।
দ্বিতীয়ত, সরযূ নদীর জল যাতে মাটির তলা দিয়ে মন্দিরের কাঠামোর ক্ষতি করতে না পারে, সেজন্য ১২ মিটারের গ্রানাইটের দেওয়াল বসানো রয়েছে। এই পাথর ভূমিকম্প নিরোধকও। ইঞ্জিনিয়াররা বলছেন, ভূমিকম্প বা কোনও প্রাকৃতিক দূর্যোগই মন্দিরের কোনও ক্ষতি করতে পারবে না। অসম্ভব শক্তিশালী ভিতের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে রাম মন্দির।
তৃতীয়ত, শুধু ভূমিকম্প নয়, বাজ পড়েও মন্দিরের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ রাম মন্দিরে থাকছে ২ লক্ষ অ্যাম্পিফায়ার বর্জ্র নিরোধক ব্যবস্থা। বড় বর্জ্রপাত হলেও মন্দিরের পাথরে কোনও চিড় ধরবে না।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours