ডিএ-র দাবিতে আন্দোলনের পাশে দাঁড়াচ্ছে বিজেপি শিবিরও। আজ মহাকরণে বিজেপি সমর্থিত সরকারি কর্মচারী পরিষদ শুক্রবারের ধর্মঘটের সমর্থনে প্রচার করেন।



বকেয়া মহার্ঘভাতার (DA Agitation) দাবিতে আরও জোরালো হচ্ছে সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলন। দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলনের সুর এবার সপ্তমে। বকেয়া ডিএ-র দাবিতে শুক্রবার রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের একাংশ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। এদিন শহরে দুটি বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়। একটি যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের তরফে। অন্যটি কলকাতা পুরনিগমের বাম ইউনিয়ন নিয়ন্ত্রিত জয়েন্ট ফোরাম অব ট্রেডার্স ইউনিয়নের তরফে। আগামিকালের ধর্মঘট সফল করার দাবিতে পৃথক পৃথকভাবে কর্মসূচি পালন করে দুই সংগঠন। এদিকে ডিএ-র দাবিতে আন্দোলনের পাশে দাঁড়াচ্ছে বিজেপি শিবিরও। আজ মহাকরণে বিজেপি সমর্থিত সরকারি কর্মচারী পরিষদ শুক্রবারের ধর্মঘটের সমর্থনে প্রচার করেন।


এদিকে তৃণমূলপন্থী সরাকির কর্মচারীদের সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের তরফে আগামিকালের ধর্মঘটকে কর্মনাশা ও উন্নয়ন বিরোধী আখ্যা দিয়ে ধর্মঘট ব্যর্থ করার ডাক দেওয়া হয়েছে। আজ একসঙ্গে দুটো বিক্ষোভ হয়েছে। পাশাপাশি ওয়েবকুপার তরফেও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রতি আবেদন জানানো হয়েছে, তাঁরা যেন এই কর্মবিরতির ডাককে প্রত্যাখ্যান করেন। মহকরণের সামনে যখন ধর্মঘট সফল করার দাবিতে প্রচার চলছিল, তখন পাল্টা মিছিল করতে দেখা যায় তৃণমূলপন্থী সংগঠনকেও। সব মিলিয়ে আগামিকালের ধর্মঘটকে বানচাল করতে পুরোদমে ময়দানে নেমে পড়ছে তৃণমূলপন্থী সংগঠনগুলি।

বকেয়া মহার্ঘভাতার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের একটি অংশ। আজ তাঁদের অবস্থান ৪২ তম দিনে পড়ল। ২৮ তম দিনে পড়ল অনশন। ইতিপূর্বেই সরকারি কর্মচারীরা ‘পেনডাউন’-এর ডাক দিয়েছিলেন। এবার আরও সুর চড়াচ্ছেন আন্দোলনকারীরা। আগামিকাল রাজ্য জুড়ে সরকারি অফিসগুলিতে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। জরুরি পরিষেবা ছাড়াীরা সরকারি কর্মচারীরা কোনও কাজ করবেন না বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে যৌথ মঞ্চ।


রাজ্য সরকারের তরফে সম্প্রতি যে বাজেট প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে, তাতে রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের জন্য ৩ শতাংশ ডিএ বাড়ানোর কথা ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু তাতে চিড়ে ভেজেনি। আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, তাঁরা ভিক্ষা চাইছেন না, হকের পাওনা চাইছেন। কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে সমহারে ডিএ-র দাবিতে অনড় আন্দোলনকারীরা।

এদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার বুঝিয়ে দিয়েছেন, বর্তমানে যা আর্থিক পরিস্থিতি তাতে এর বেশি মহার্ঘভাতা দেওয়া সম্ভব নয়। রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম আবার আরও একধাপ এগিয়ে কড়া ভাষায় বলে দিয়েছেন, না পোষালে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। আর এমন এক আবহে ডিএ-র দাবিতে সরকারি কর্মচারীদের এই আন্দোলন ক্রমেই শাসকের জন্য অস্বস্তিকর বাতাবরণ তৈরি করেছে। বাম সমর্থিত সংগঠনগুলি শুরু থেকেই মহার্ঘভাতার দাবিতে সরকারি কর্মচারীদের এই আন্দোলনের পাশে রয়েছে। পাশে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে কংগ্রেস শিবিরকেও। আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন শুভেন্দু অধিকারীও। বিরোধী দলনেতা বলেছেন, ‘ধর্মঘটকে ভাঙার জন্য শাসক দল বিভিন্ন অফিসে পোস্টারিং করছে। আমাদের কর্মচারী সংগঠন কর্মচারী পরিষদ ও শিক্ষক সংগঠন এই ধর্মঘটকে সমর্থন করছে।’

অন্যদিকে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য আবার বলছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী সবসময় সকলের প্রতি সহানুভূতিশীল। মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় জানিয়েছেন আমরা কতটা ডিএ দিয়েছি। যা আইন মেনে করার তা করা হচ্ছে। এই সংক্রান্ত বিষয়গুলি এখন সুপ্রিম কোর্টে বিচার্য। সেই ব্যাপারে আমি বিশেষ কিছু বলতে চাই না।’
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours