আগামিদিনে এই ঘটনার জেরে আইনি লড়াইতে মুখ থুবড়ে পড়তে হতে পারে বীরভূমের 'বেতাজ বাদশা'কে, মনে করছেন অনেকেই।


তিনি মন্ত্রী নন, বিধায়ক নন, দলের কোনও শীর্ষপদেও বসেননি কখনও, তা সত্ত্বেও অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) প্রভাব দীর্ঘদিন ধরে বীরভূমে এক প্রবাদে পরিনত হয়েছে। গরু পাচার মামলাতেও বারবার তাঁর পথের কাঁটা হয়ে উঠছে সেই ‘প্রভাবশালী’ তকমা। মঙ্গলবার দুবরাজপুরের জনৈক শিব ঠাকুর মণ্ডলের অভিযোগের ভিত্তিতে অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পর সেই প্রশ্ন আরও একবার সামনে আসতে শুরু করেছে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এই গ্রেফতারি ইডি-র জন্য আরও বড় অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে অনুব্রতর বিরুদ্ধে।

বিশিষ্ট আইনজীবী বিকাশরঞ্জন মন্ডলের দাবি, ‘প্রভাবশালী’ তত্ত্বই এদিন আরও একবার স্পষ্ট হল। তিনি বলেন, প্রভাবশালী তকমাই যে শুধু সিলমোহর পেল তা নয়, অভিযোগ যে সাজানো তা বোঝাই যাচ্ছে। বিচারক কীভাবে অনুব্রতকে পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিলেন, তা নিয়েও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বিকাশরঞ্জন। তাঁর দাবি, নিম্ন আদালতের বিচারকরে কীভাবে প্রভাবিত করা হচ্ছে, এই ঘটনা তার একটা উদাহরণ হয়ে উঠতে পারে আগামিদিনে।

শুধু বিকাশরঞ্জন নন, এই বিষয়ে একই মত আইনজীবী কৌস্তভ বাগচীর। তাঁর দাবি, শাসক দল ‘বাঘ’ বলে সম্বোধন করে অনুব্রতর যতটা না ক্ষতি করেছিল, তার থেকে বেশি ক্ষতি হল এই ঘটনায়। অর্থাৎ তাঁর দাবি, আগামিদিনে এই ঘটনার জেরে আইনি লড়াইতে মুখ থুবড়ে পড়তে হতে পারে বীরভূমের ‘বেতাজ বাদশা’কে।

উল্লেখ্য, শাসক দলের নেতারা বরাবরই অনুব্রত পাশে দাঁড়িয়েছেন। মেয়র ফিরহাদ হাকিম একাধিকবার অনুব্রতকে বাঘ বলে সম্বোধন করেছেন। আর খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, অনুব্রতকে ‘বীরের সম্মান’ দিয়ে ফিরিয়ে আনতে হবে। এসবের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে আসানসোল আদালতের বিচারকের পাওয়া হুমকি চিঠি। যে উদাহরণ উল্লেখ করে সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীও অনুব্রতকে ‘প্রভাবশালী’ বলে উল্লেখ করেছেন।

কেষ্ট মণ্ডলের হাতে পাল্টা যুক্তি কী? সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে অনুব্রত জামিন সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে অনুব্রতর আইনজীবী কপিল সিব্বলের যুক্তি ছিল, এ সবই তো এক একটা অভিযোগ, কোনও প্রমাণ নেই। শুধু অনুমানের ভিত্তিতে তাঁর মক্কেলকে ‘প্রভাবশালী’ বলে উল্লেখ করা হচ্ছে বলে দাবি করেছিলেন তিনি।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours